যিশু, জ়ারা এবং সারা। ছবি: দেবর্ষি সরকার।
চিরঘুমে ঢলে পড়বে মেয়ে। আর কয়েক দিন বাকি। বাবা পাগলের মতো মেয়ের শেষ ইচ্ছে পূরণের চেষ্টায় ছুটে চলেছে। বাস্তব নয়। পর্দার গল্প। বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যিশু সেনগুপ্ত। মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তাঁরই সন্তান, সারা সেনগুপ্ত। আনন্দবাজার অনলাইনের শনিবারের অ-জানাকথায় ‘উমা’-তে অভিনয় করার মানসিক চাপের কথা বললেন যিশু। জানা গেল, অভিনয় করার সময়ে ততটাও উপলব্ধি করেননি তিনি। কিন্তু ডাবিংয়ের সময়ে পর্দার বাবা-মেয়ের চরিত্রের সংলাপগুলি বলতে গিয়ে বার বার বুক কেঁপে উঠছিল তাঁর। পর্দায় যার মৃত্যু নিয়ে কাঁদতে হচ্ছে, বাস্তবে তো সে-ই তাঁর মেয়ে। খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল সংলাপ বলা।
যিশু বললেন, ‘‘আমি নিজের ছবি দেখি না। সৃজিতের ছবিও দেখি না। তবে ওই একটি ছবি আমি হলে গিয়ে দেখেছিলাম। ছোট মেয়ে জারাকে কোলে নিয়ে বসেছিলাম। বড় মেয়ে সারাকে পর্দায় দেখে অঝোরে কাঁদছিলাম। জারা তো বুঝতে পারছে না। আমাকে বার বার জিজ্ঞাসা করছিল, ‘বাবা, তুমি কেন কাঁদছ?’ আমি তাকে বললাম যে এই কান্নার কারণ এখন সে বুঝবে না।’’
ইভান লেভারসেজ। কানাডায় তার জন্য অক্টোবরে বড়দিন এসেছিল। কারণ বড়দিন আসার আগেই তাকে ঘুমিয়ে পড়তে হবে। মৃত্যুর আগে শেষ বারের জন্য ক্রিসমাস দেখতে চেয়েছিল সে। সেই সত্যি ঘটনাকেই ‘উমা’-তে তুলে ধরেছিলেন টলিউড পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। মারণরোগে আক্রান্ত উমা। সুইৎজারল্যান্ডবাসী উমা কখনও দু্র্গাপুজো দেখেনি। মৃত্যুর আগে তাই কলকাতার দুর্গাপুজো দেখত চেয়েছিল সে। পুজো আসার আগেই ইভানের মতো ঘুমিয়ে পড়তে হবে যে তাকে। তার বাবা তাই কলকাতায় এসে নকল দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল। লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরে উমা সে দিন পুজো গন্ধ গায়ে মেখেছিল। তার পর সব শেষ। তাকে ঘুমিয়ে পড়তে হল।
এ তো গেল সারার প্রথম অভিনয়ের কথা। কিন্তু এটিই কি শেষ অভিনয়ও? তিনি কি বাবার পথে হাঁটতে চান না? মেয়ের অভিনয় করার প্রসঙ্গে যিশু জানালেন, তিনি মেয়েদের কোনও বিষয়ে বাধা দিতে চান না। যদি সারা আর জারা অভিনয় করতে চান, তবে করবেন। তবে যিশুর মতে, সারার থেকে জারা বেশি ভাল অভিনয় করবে। হাসতে হাসতে যিশুর মশকরা, ‘‘ছোটটা তো দারুণ অভিনয় করবেই। নিশ্চিত আমি। যা গোল দেয়!’’ সারার অভিনয় এবং পড়াশোনা প্রসঙ্গে যিশুর বক্তব্য, ‘‘আমি তাকে অভিনয় করতেও জোর করব না। না করতেও জোর করব না। এটা ওর জীবন। তবে পুঁথিগত শিক্ষা এবং জীবনের শিক্ষা, এই দু’টি যত দিন পারব, আমি দেব।’’
যিশুর কথায় জানা গেল, অভিনয়ের পাশাপাশি সারা আইন এবং মনস্তত্ত্ব নিয়েও পড়াশোনা করতে চান। বিদেশে গিয়ে এই দু’টি বিষয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চান তিনি। যিশু বললেন, ‘‘আমি জানি না, আইন এবং মনস্তত্ত্ব এক সূত্রে বাঁধা যায় কি না। সারা যদিও কী সব বুঝিয়েছিল এক দিন। আমি ওদের বলি, আমি অষ্টম শ্রেণি পাশ। তাই আমাকে কিছু বোঝানোর দরকার নেই। শুধু নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেই হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy