Jaya Bachchan Has Always Been in The Centre of Controversy with Her Bold Statements dgtl
jaya bachchan
শাহরুখকে চড় মারার ইচ্ছে থেকে অভিষেকের ছবির সমালোচনা, স্পষ্টবক্তা জয়া বরাবরই বিতর্কের কেন্দ্রে
সেখানে মেজাজ হারিয়ে জয়া এক আলোকচিত্রীকে বলেন, ‘‘আপনারা যদি ফ্ল্যাশের আলোয় এত ছবি তোলেন, আমি কী করে চোখে দেখব?’’ জয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন ওই আলোকচিত্রী।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
সম্প্রতি বলিউডে মাদকযোগ অভিযোগ প্রসঙ্গে জয়া বচ্চনের বক্তব্য এবং পাল্টা বক্তব্যে চাপানউতোরের জল অনেক দূর গড়িয়েছে। তবে এটাই প্রথম নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে স্পষ্টবক্তা হিসেবে পরিচিত জয়ার মন্তব্য আগেও শিরোনামে এসেছে। কাছের লোক থেকে সম্পূর্ণ অপরিচিত অত্যুৎসাহী ভক্ত। জয়ার রোষ থেকে বাদ যাননি কেউ।
০২২৪
গত বছর মার্চে কর্ণ জোহরের মা হিরু জোহরের জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিলেন জয়া। পার্টি থেকে বেরোনর সময় এক অত্যুৎসাহী ভক্ত মোবাইলে তাঁর ছবি তোলেন।
০৩২৪
বিনা অনুমতিতে তাঁর ছবি তোলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জয়া। প্রকাশ্যেই এক হাত নেন ওই ভক্তকে। অপরিচিত যুবককে ভদ্রতা শেখার জন্য বলেন।
০৪২৪
না বলে আলোকচিত্রীদের পর পর ছবি তুলে যাওয়ার প্রচলিত রীতিতে জয়ার তীব্র আপত্তি। এরকমই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি তিনি হয়েছিলেন বছর দুয়েক আগে। বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার সন্দীপ খোসলার এক আত্মীয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানে।
০৫২৪
সেখানে মেজাজ হারিয়ে জয়া এক আলোকচিত্রীকে বলেন, ‘‘আপনারা যদি ফ্ল্যাশের আলোয় এত ছবি তোলেন, আমি কী করে চোখে দেখব?’’ জয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন ওই আলোকচিত্রী।
০৬২৪
বিনা অনুমতিতে মোবাইলের ফ্ল্যাশের তীব্রতা বরাবরই না-পসন্দ জয়ার। একটি কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি দর্শকাসনে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন,‘‘আপনাদের হাতে মোবাইল আছে, তার মানে এই নয় অনুমতি না নিয়ে পর পর ছবি তুলে যাবেন। অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের বাড়িতে উপযুক্ত সহবত শেখানো।’’
০৭২৪
জয়ার তিরস্কারের হাত থেকে রেহাই পাননি পুরোহিত-ও। সে ঘটনার সাক্ষী বলিউডের অন্য শিল্পীরাও। হেমা মালিনীর বড় মেয়ে এষার সাধভক্ষণ অনুষ্ঠান ছিল। অভিযোগ, পুরোহিতদের মধ্যে একজন তারকাদের সঙ্গে সেলফি তুলে যাচ্ছিলেন।
০৮২৪
ক্ষুব্ধ জয়া তাঁকে বলেন, ‘‘আপনি বরং পুজোয় মন দিন।’’ একবার গণপতি উৎসবের সময়ও জয়ার কাছে তিরস্কৃত হয়েছিলেন নিজস্বী-নাছোড় ভক্ত।
০৯২৪
২০১৩-এ এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন জয়া ও ঐশ্বর্যা। এক আলোকচিত্রী সেখানে জয়ার পুত্রবধূকে চেঁচিয়ে ‘অ্যাশ’ বলে সম্বোধন করেন। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে সময় নেননি জয়া। সবার সামনে তাঁকে বলেন, ‘‘অ্যাশ! ও কি আপনার স্কুলের বন্ধু?’’
১০২৪
জয়ার মেজাজ নিয়ে তটস্থ থাকেন বচ্চন পরিবারও। একবার ‘কফি উইথ কর্ণ’-এ এসে অভিষেক বলেছিলেন, সপরিবার ছুটি কাটাতে গেলে তাঁদের প্রার্থনা থাকে, যেন সেখানে কোনও পাপারাৎজির মুখে পড়তে না হয়!
১১২৪
মাকে শান্ত করার ভারও নিতে হয় অভিষেককে। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়ার সময় বচ্চন পরিবারকে ঘিরে ঝাঁপিয়ে পড়েন সাংবাদিকরা। তাঁদের আচরণে চটে গিয়েছিলেন জয়া। বুঝিয়ে, কথা বলে মায়ের মেজাজ ঠান্ডা করেছিলেন অভিষেক।
১২২৪
সব জায়গায় সব প্রশ্নও নিতে পারেন না জয়া। বিশেষ করে সামাজিক বা ব্যক্তিগত কোনও অনুষ্ঠানে তাঁর উদ্দেশে রাজনৈতিক প্রশ্ন উড়ে এলেই ক্ষুব্ধ হন সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার এই সাংসদ।
১৩২৪
জয়ার তিরস্কার থেকে রেহাই নেই ঘরের সদস্যদেরও। অভিষেকের অভিনয়ের কঠোর সমালোচক তিনি। প্রকাশ্যেই সমালোচনা করেছিলেন ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবিটির। অভিষেক অভিনীত ছবিটি জয়ার কাছে ‘বোকা বোকা’ মনে হয়েছিল। ছবিটিতে
অভিষেক ছাড়াও ছিলেন শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন, বোমান ইরানির মতো তারকারা।
১৪২৪
শাহরুখ এক বার ঐশ্বর্যার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। শুনে এতটাই রেগে গিয়েছিলেন জয়া, বলেছিলেন তাঁর নিজের বাড়িতে শাহরুখ এ কথা বললে তিনি তাঁর গালে একটা থাপ্পড় মারতেন। শাসন করতেন নিজের ছেলের মতো করেই। তবে এই মন্তব্যের রেশ বেশিদিন ছিল না। দ্রুত তিক্ততা ভুলে শাহরুখকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন জয়া।
১৫২৪
২০০৮-এ মুক্তি পেয়েছিল অভিষেক বচ্চন-প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার ছবি‘দ্রোণা’। ছবির মিউজিক লঞ্চ-এ গিয়ে জয়া বলেছিলেন তিনি হিন্দিতে কথা বলবেন। কারণ তিনি উত্তরপ্রদেশের মেয়ে। তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রাজ ঠাকরে।
১৬২৪
জয়া অবশ্য দ্রুত শুধরে নেন নিজেকে। বলেন, তিনি মুম্বই বা এই শহরের বাসিন্দাদের আবেগকে আঘাত করতে চাননি। যে শহর তাঁকে দু’হাত ভরে দিয়েছে,তাকে তিনি আমৃত্যু অপমান করতে পারবেন না। হিন্দি ছবির মিউজিক লঞ্চ বলে হিন্দিতে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
১৭২৪
কিন্তু সবার সঙ্গে এহেন রুষ্ট ব্যবহার করা জয়া কি কাউকে ভয় পান? হ্যাঁ, তিনিও ভয় পান। সিমি গারেওয়ালের টক শো-এ জানিয়েছিলেন জয়া। বর্ষীয়ান অভিনেত্রী তথা রাজনীতিক বলেছিলেন তিনি জীবনে শুধু অমিতাভাকে ভয় পেয়েছেন। তাঁর মনে হয়েছে,অমিতাভ আদেশ করলে তিনি সেটা শুনবেন।
১৮২৪
তা ছাড়া, অমিতাভকে সন্তুষ্ট করতে পারলেও ভাল লাগবে তাঁর। মনে হয়েছিল বিয়ের আগে প্রেমপর্বেই। জয়া নিজেই স্বীকার করেছেন, কাউকে সন্তুষ্ট করার ইচ্ছে সহসা তাঁর মনের মধ্যে আসে না।
১৯২৪
সেই অমিতাভের সঙ্গে রেখার সম্পর্ক ঘিরে গুঞ্জন তাঁর কেমন লাগে? প্রশ্ন এসেছিল জয়ার কাছে। বলেছিলেন, সে সব তাঁর খুবই সস্তা বলে মনে হয়।
২০২৪
সম্প্রতি ভোজপুরি চলচ্চিত্রের অভিনেতা তথা বিজেপি সাংসদ রবি কিষণের মন্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সংসদে সরব হন জয়া। সংসদের বাদল অধিবেশনের শুরুর দিনেই বলিউডে মাদক চক্রের অভিযোগ তুলে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন রবি। মাদক চক্রের পিছনে পাকিস্তান, চিনের যোগ থাকতে পারে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
২১২৪
উত্তরে জয়া বলেন, ‘‘কয়েকজন লোকের জন্য গোটা বলিউডের ভাবমূর্তি নষ্ট করা উচিত নয়। সিনেমার জগৎ থেকে আসা এক সাংসদ লোকসভায় বলিউড সম্পর্কে যে কথা বলেছেন, তাতে আমি লজ্জিত। এঁরা যে থালায় খাচ্ছেন, সেটাতেই ছিদ্র করছেন।’’
২২২৪
এই মন্তব্যের পরে জয়াকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কঙ্গনা রানাউত। টুইটে লেখেন, “ইন্ডাস্ট্রিকে আপনি কোন থালা সাজিয়ে দিয়েছেন জয়াজি? একটা থালা পেয়েছিলাম যেখানে দু’মিনিটের আইটেম নম্বর এবং একটা রোম্যান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করার বদলে নায়কের সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব সাজানো ছিল। এই ইন্ডাস্ট্রিকে নারীবাদ আমি শিখিয়েছি। নারীবাদী, দেশপ্রেমের ছবি দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির থালা সাজিয়েছি। এই থালা আমার নিজের জয়াজি, আপনার নয়।”
২৩২৪
কঙ্গনার আক্রমণের উত্তরে জয়া কিছু বলেননি। তবে ইন্ডাস্ট্রির হয়ে গলা তুলে সেখানকার মানুষজনদের পাশে পেয়েছেন জয়া। সোনম কপূর, তাপসী পান্নু থেকে শুরু করে ফারহান আখতার, প্রযোজক অনিল শর্মা, নাগমা— প্রত্যেকেই জয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
২৪২৪
কিন্তু জয়ার মন্তব্য হজম করতে পারেননি, এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ঘটনার জেরে মুম্বই পুলিশ বচ্চন পরিবারের নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করেছে। ‘জলসা’-র বাইরে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা।