জীবন তো সবে শুরু! আমি স্বপ্ন দেখি না খুব একটা। যদি পূরণ না হয়!
মুম্বইয়ে বিজ্ঞাপনী ছবির কাজ সারলেন। পুজোয় তাঁর দুই রূপ- কৃষ্ণকমলিনী, ইন্দু। খবর, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব অধিকারীর ‘কাছের মানুষ’ তিনি। আর গুঞ্জন, টিনসেল টাউনে কাজের ফাঁকে নাকি ‘দুষ্টুমি’ও সারলেন ইশা সাহা!
প্রশ্ন: বাস্তবে ইশা কার ‘কাছের মানুষ’? প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় না দেব অধিকারী?
ইশা: কারওর কাছের নই। আপাতত, আমি কাজের খুব কাছাকাছি। এক দিনও দম নিচ্ছি না। শুধু কাজ করছি। এবং সেটাই করে যেতে চাই।
প্রশ্ন: ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও গোলন্দাজ ছবির গান-মুক্তির দিনে আভাস দিয়েছেন, ইশা দেবের কাছাকাছি!
ইশা: (হেসে ফেলে) ব্যস, গুঞ্জন শুরু। ইশাকে নিয়ে খবরে এটাই শিরোনাম হবে তো? গপ্পের ধাক্কায় তো নিজের পুজো-মুক্তির নামই প্রায় ভুলতে বসেছি! সে-ও দেখি শিরোনাম হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। কী বলি?
প্রশ্ন: ‘কাছের মানুষ’ ছবির মোশন পোস্টারে অনুরাগীরা ইশাকে বুম্বাদা-দেবের সঙ্গে দেখে খুব উত্তেজিত...
ইশা: আমিও তা-ই। তবে সেটা প্রকাশ করতে পারছি না। কারণ, মুম্বইয়ে বিজ্ঞাপনী ছবির শ্যুট করছিলাম। ঠিকমতো আনন্দও করতে পারিনি। সবাই যখন ফোন করছিলেন, অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন। আমি যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।
প্রশ্ন: প্রথম যখন জেনেছিলেন আপনার বিপরীতে দুই মহারথী, তখনও ঘোরে ছিলেন?
ইশা: না, তা হইনি। কারণ, আমায় ডেকে গল্প শোনানো হয়েছিল। ভাল লেগেছিল বলেই রাজি হয়েছি। ফলে, তখন কিছু হয়নি। তবে মোশন পোস্টার বেরনোর পরে সবার শুভেচ্ছা, ভাললাগা বলছে, ছবিটা ভালই হবে। সকলের ভালও লাগবে। এক জন অভিনেত্রীর তো এটাই চাওয়া।
প্রশ্ন: ছবি বা চরিত্র নিয়ে কী বলবেন?
ইশা: সব কিছুই একেবারে প্রাথমিক স্তরে। চিত্রনাট্য আবার ঘষামাজা হবে। এ বছরের শেষ বা নতুন বছরের শুরুতে হয়তো কাজ শুরু হবে। তাই কিচ্ছু বলতে পারব না। তবে ছবিতে জীবনের এক টুকরো উঠে আসবে- শুধু এটুকু বলতে পারি।
প্রশ্ন: বুম্বাদার বিপরীতে কাজ। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছে?
ইশা: একটু একটু চাপ হচ্ছে। তবে ঠিক করে নিয়েছি, আমি আমার মতো করেই কাজ করব। এবং বুম্বাদাকে অভিযোগ জানানোর কোনও সুযোগই দেব না। ওঁর ‘গুড বুক’-এ যে করে হোক নাম তুলতেই হবে যে!
প্রশ্ন: মা-বাবা খুশি?
ইশা: মোশন পোস্টার মু্ক্তির দিন কোনও কথা হয়নি মা-বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে। আসলে, জানতাম না এত তাড়াতাড়ি দেব মোশন পোস্টার প্রকাশ্যে আনবেন। তাই আমিই একটু চমকে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে জানাতেই দারুণ খুশি সবাই। বাড়ির সকলেরই খুবই প্রিয় অভিনেতা বুম্বাদা। ওঁর বিপরীতে আমি শুনে মা-বাবাও সন্তুষ্ট।
প্রশ্ন: এখন মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস আইন-আদালত ছেড়েছিলেন?
ইশা: ‘ভাগ্যিস’ শব্দটা আমার অভিধানে নেই। আইনজীবীর পেশাও খুবই মন দিয়ে সামলাতাম। তবে নিশ্চিত জীবন ছেড়ে অনিশ্চিত জীবনে পা রাখতে একটু দোলাচল তো থাকবেই। আমারও ছিল। এখন মনে হচ্ছে, ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এটুকুই।
প্রশ্ন: ‘গোলন্দাজ’ ট্রেলার বলছে দেব-ইশা রসায়ন জমে গিয়েছে?
ইশা: সকলের থেকেই ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এটাই আমার কাছে বড় কথা। কারণ, দেব আর আমার জুটি সব দিক থেকেই অন্য রকম। যা পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে কেউ ভাবেননি। তাই আমি একটু ভাবনায় ছিলাম। তবে ধ্রুবদা আশ্বাস দিয়েছিলেন, নতুন জুটি দর্শকদের ভাল লাগবে। সেটাই সম্ভবত হতে চলেছে।
প্রশ্ন: পর্দায় দীর্ঘদেহী নায়কের পাশে ছোট্টখাট্টো নায়িকা নাকি বরাবরই জনপ্রিয়! সেটাই কি আপনাদের জুটির মূলধন?
ইশা: শুধুই যে এই বিষয়ের জন্যই জুটি জনপ্রিয় হয়েছে বা হচ্ছে, তা বোধহয় নয়। দেখতে ভাল লাগাই তো সব নয়। হতে পারে, আমরা চরিত্র দুটোর সঙ্গে একাত্ম হতে পেরেছি। দেবকে যতক্ষণ দেখেছি, ততক্ষণ ওঁকে নগেন্দ্রপ্রসাদ ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। আমার সঙ্গে ওঁর পর্দা ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ খুবই কম। কিন্তু যেটুকু ছিল, আমরা সেটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছি। আমিও আমার মতো করে কৃষ্ণকমলিনী হয়ে ওঠার জন্য খেটেছি। চিত্রনাট্যে ‘ফুটবলের জনক’-এর চেয়ে অনেকটাই ছোট কমলিনী। বাস্তবেও সেটা হলে তার একটা প্রভাব তো পড়বেই।
প্রশ্ন: তাই কি প্রযোজক দেবের পরের ছবিতেও ইশা?
ইশা: এই প্রশ্নটা দেবকে এক সাক্ষাৎকারে আমিই করেছিলাম। দেব সেখানে বলেছিল, ইশা ভাল কাজ করছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রযোজক দেবের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তা হলে কি তোমার পরের ছবিতেও সুযোগ পাব? নিশ্চয়ই কিছু তো ভাল লেগেছে ওঁর, তাই আমায় আবার ডাকলেন।
প্রশ্ন: মুম্বইয়ে কী ধরনের বিজ্ঞাপনী চিত্রে কাজ করলেন?
ইশা: চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। কিচ্ছু বলা যাবে না।
প্রশ্ন: হাতে আর কী কী রয়েছে?
ইশা: ১০ অক্টোবর ‘গোলন্দাজ’ মুক্তির দিন হইচই-এর ‘ইন্দু’ সিরিজের ট্রেলার মুক্তি পাবে। সবাই বলছে, ‘‘তোর কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখব?’’ আমি নিজেও গুলিয়ে ফেলছি (হাসি)। তবে চাইব, সবাই দুই চরিত্রকেই দেখুন। এ ছাড়া, একই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের ‘গোরা’ সিরিজেও অভিনয় করছি। আমার বিপরীতে ঋত্বিক চক্রবর্তী। এই সিরিজের এক দিনের কাজ বাকি। আর সদ্য শেষ করলাম পাভেলের ‘কলকাতা চলন্তিকা’। এখনও গলা দেওয়ার কাজ বাকি। খুব অন্য ধরনের চরিত্র। ছবিতে আমি কাগজ কুড়ুনি। এই ধরনের কোনও চরিত্র এবং কোনও নায়িকা অভিনয় করেছেন- এ ব্যাপারটা বোধহয় প্রথম হচ্ছে। রূপটানের পরে নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিলাম না। ‘ইন্দু’তে বনেদি বাড়ির গল্প উঠে আসবে। সে বাড়ি ঘিরে নানা কেচ্ছা। তেমনই বাড়ির মেয়ের সদ্য বিয়ে হয়েছে। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নানা অঘটনের মুখোমুখি। তার নিজেরও ‘অতীত’ আছে। সব মিলিয়ে ইন্দু কেমন থাকবে? এটাই সিরিজের মূল বিষয়।
প্রশ্ন: আর কী কী স্বপ্নপূরণ বাকি?
ইশা: জীবন তো সবে শুরু! তা ছাড়া, আমি স্বপ্ন দেখি না খুব একটা। যদি পূরণ না হয়! তবে বলিউডে কাজ করার খুব ইচ্ছে। দেখা যাক, হয় কিনা।
প্রশ্ন: মুম্বইয়ে যতক্ষণ ছিলেন, ইশার ফোন খুবই ব্যস্ত ছিল। নিন্দকেরা বলছেন, আপনি নাকি কাজের ফাঁকে ‘দুষ্টুমি’ করছিলেন?
ইশা: (হাসতে হাসতে) আজকাল দুষ্টুমি করতে চাইলে মুম্বইয়ে যাওয়ার দরকার নেই। কলকাতা বা উত্তর মেরুতেও বসে প্রযুক্তি দিয়েই সব কিছু করা যায়। আসলে, ‘কাছের মানুষ’-এর মোশন পোস্টার প্রকাশের পর প্রচুর ফোন আসছে। সবাই সাক্ষাৎকার চাইছেন। ফলে ফোন ব্যস্ত। আর একটা কথা, খুব কাছের মানুষ না হলে ইশা সবার সঙ্গে দুষ্টুমি করেন না!
প্রশ্ন: নিন্দকদের দাবি, ইশার কাছের মানুষ নাকি মুম্বইতে থাকেন?
ইশা: কান পাতলে আমায় নিয়ে কত কথা শোনা যায়! দেখুন, এই নিয়েও কোথাও না কোথাও ঠিক ‘খবর’ বেরিয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy