রাজ চক্রবর্তীর ‘সন্তান’ কি বৈষম্যের শিকার? ছবি: সংগৃহীত।
রাজ চক্রবর্তীর ‘সন্তান’ কি অবহেলিত? তাঁর সদ্যমুক্তি পাওয়া ছবি নিয়ে এমনই গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এমনিতেই অল্লু অর্জুন প্রদর্শন সময়ের ৫০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং হলমালিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাকি যে সময় রয়েছে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে, সেখানে নাকি দেবের ‘খাদান’-এর রমরমা। বাকিটা ভাগাভাগি হয়েছে ‘চালচিত্র’, ‘৫ নং স্বপ্নময় লেন’ ছবি দু’টির মধ্যে।
মোট ক’টি প্রদর্শন পাচ্ছে এসভিএফের ছবিটি? দর্শকেরা কোথায়, কোথায় দেখতে পাবেন ‘সন্তান’?
আনন্দবাজার ডট কম খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেছে, দক্ষিণ থেকে মধ্য কলকাতা— কোথাও সিঙ্গল স্ক্রিনে জায়গা পায়নি রাজের ছবি। প্রিয়া, নবীনা বা অশোকা প্রেক্ষাগৃহে ‘সন্তান’ জায়গা পায়নি। প্রিয়া প্রেক্ষাগৃহের মালিক অরিজিৎ দত্তকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর সাফ জবাব, “এক সঙ্গে এতগুলি ছবি মুক্তি পেলে এটাই সমস্যা। ‘পুষ্পা ২’-এর মতো বাণিজ্যসফল ছবিকে সরিয়ে তিনটি বাংলা ছবিকে জায়গা দিয়েছি।” তার পরেই দাবি, দেবের অনুরোধ ছিল, ‘খাদান’কে দুটো সময় দিতে হবে। সেই অনুরোধ রাখতে হয়েছে তাঁকে।
প্রথম সপ্তাহের ফলাফল দেখে রাজও একই অনুরোধ করলে রাখতেন? অরিজিৎ জানিয়েছেন, পরের সপ্তাহে ‘বেবি জন’ আসছে। ফলে, ‘সন্তান’ খুব ভাল ফল করলেও সম্ভবত তিনি তাঁকে প্রেক্ষাগৃহ দিতে পারবেন না। পাল্টা যুক্তি, “পুজোর সময় ছাড়া সারা বছর বাংলা ছবি ব্যবসা দেয় না। তখন আমাদের ব্যবসা দেয় হিন্দি ছবি। ফলে, ও দিকটাও দেখতে হবে।”
নবীনা প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার নবীন চৌখানি অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতেই চাননি। তাঁর প্রেক্ষাগৃহে জায়গা পেয়েছে ‘খাদান’, মানসী সিংহের দ্বিতীয় ছবি। বাকিটা ‘পুষ্পা’র দখলে। একই অবস্থা অজন্তা, অশোকা প্রেক্ষাগৃহেরও। সেখানেও রাজের ‘সন্তান’ নেই। ‘খাদান’ আর ‘৫ নং স্বপ্নময় লেন’ ছাড়া প্রদর্শিত হচ্ছে ‘পুষ্পা ২’। ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি অজন্তা প্রেক্ষাগৃহের মালিক শতদীপ সাহাকে। বৃহস্পতিবারের বিকেল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ কলকাতার দু’টি মাল্টিপ্লেক্সে একটি করে প্রদর্শন সময় পেয়েছে ‘সন্তান’। কিন্তু কোনও সিঙ্গল স্ক্রিনে ছবিটি নেই!
একই অবস্থা মধ্য কলকাতার প্রাচী প্রেক্ষাগৃহেও। সেখানে দেখানো হবে ‘খাদান’ আর ‘৫ নং স্বপ্নময় লেন’। কর্ণধার বিদিশা বসু কথা বলেছেন, “সন্তান’ দেখানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রযোজক। কিন্তু ‘পুষ্পা ২’কে রেখে আর কাউকে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।” যদিও তাঁর দাবি, তাঁর প্রেক্ষাগৃহে ‘খাদান’ নিয়ে নাকি দর্শক উন্মাদনা বেশি।
একই যাত্রায় এমন পৃথক ফল কেন? প্রশ্ন রাখা হয়েছিল এক পরিবেশকের কাছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেই পরিবেশক জানিয়েছেন, ‘খাদান’-এর যে ভাবে প্রচার হয়েছে ‘সন্তান’-এর প্রচার তার সিকিভাগও হয়নি। প্রচারের উপরেই ছবির জনপ্রিয়তা নির্ভর করে। তাঁর কথায়, “দেব তাঁর ছবির জন্য উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন। রাজ কোথায় ছবির প্রচার করলেন?” প্রদর্শন সময় বেশি পেতে গেলে এই দিকটাও মাথায় রাখতে হয় বলে তাঁর মত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতায় ‘সন্তান’-এর প্রদর্শন সংখ্যা ৬১। অন্য দিকে, ‘খাদান’ পেয়েছে ১৪০টি প্রদর্শন সময়। বৈষম্য নিয়ে কী বলছেন পরিচালক রাজ, প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা? প্রযোজকের কথায় ক্ষোভ ঝরেছে। তিনি বলেছেন, “এটা শুধু জায়গা পাওয়ার বিষয় নয়। বরং এটা বাংলা ছবির অবমাননা।” শ্রীকান্ত মোহতার আশঙ্কা, বাংলা বিনোদন শিল্পের সঙ্গে জড়িত কঠোর পরিশ্রম করা মানুষদের এটাই নাকি ভবিষ্যৎ!
রাজ অবশ্য প্রেক্ষাগৃহে জায়গা না পাওয়া নিয়ে সরাসরি কোনও কথা বলেননি। বদলে তাঁর বক্তব্য, “আমি ‘সন্তান’ নিয়ে কথা বলছি না। আমি চারটি বাংলা ছবি নিয়ে কথা বলছি। ‘পুষ্পা ২’ চলুক। তা বলে বাংলা ছবি জায়গা পাবে না! আগে থেকে কে বলতে পারে, কোন ছবি ভাল বাণিজ্য করবে? দর্শক যদি প্রেক্ষাগৃহে ছবি না-ই দেখতে পায় তা হলে ছবিটি হিট হবে কি না কী করে জানা যাবে?” রাজের পাল্টা অনুরোধ, “খাদান’ বা ‘সন্তান’ ঠিক শো জোগাড় করে নেবে। বরং ‘৫ নং স্বপ্নময় লেন’, ‘চালচিত্র’ ছবি দু’টির সঙ্গে ন্যায় করুন। পরিস্থিতি যখন খারাপ ছিল মানসী সিংহের প্রথম ছবিই কিন্তু প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের ভরসা ছিল। একই ভাবে প্রতিম ডি গুপ্ত-ও ঘনঘন ছবি বানান না। তাঁর ছবিতে বড় মাপের অভিনেতারা কাজ করেছেন। এঁদের প্রেক্ষাগৃহে শো দিয়ে সমর্থন জানান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy