Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Online Class

অনলাইন ক্লাসে তৃপ্ত শিক্ষক তারকারা? কী বলছেন অজয়, সোহিনী, ইমন, কনীনিকা?

সাধারণ শিক্ষকদের পাশাপাশি নতুন ধারায় অভ্যস্ত হচ্ছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, সোহিনী সেনগুপ্ত, ইমন চক্রবর্তী, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তারকা শিক্ষকেরাও।

গ্রাফিক-তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক-তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:৫৪
Share: Save:

ইদানিং, খুব জরুরি না হলে চেনা-পরিচিতরা অনেক সময়েই ফোন ধরেন না! কেন? তিনি নিজে কিংবা তাঁর বাচ্চা অনলাইন ক্লাসে ব্যস্ত! নিউ নর্মাল লাইফে সকাল থেকে সন্ধে শহর টু শহরতলি মুখ গুঁজে মোবাইল বা ল্যাপটপে। পড়া থেকে গান হয়ে অভিনয়— সব শেখানো হচ্ছে ভার্চুয়ালি! সাধারণ শিক্ষকদের পাশাপাশি নতুন ধারায় অভ্যস্ত হচ্ছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, সোহিনী সেনগুপ্ত, ইমন চক্রবর্তী, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তারকা শিক্ষকেরাও। এভাবে ক্লাস নিয়ে তৃপ্ত তাঁরা? শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা পাচ্ছে? শিক্ষক দিবসে নয়া ছাত্রধারার পক্ষে-বিপক্ষে তাঁরা মত জানালেন আনন্দবাজার ডিজিটালকে।

দুধের বদলে ঘোল

নিজে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন অনেকটাই বাধ্য হয়ে। যন্ত্রশিল্পীদের কথা ভেবে অনলাইনে অনুষ্ঠানও করছেন। এভাবেই কলকাতা এবং মুম্বই, দুই জায়গায় লক্ষাধিক অর্থ সাহায্য করেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। কিন্তু ক্লাস করে কতটা তৃপ্ত? উত্তরে আক্ষেপ, অনলাইন ক্লাস হল দুধের বদলে ঘোল। সামনে বসে যেভাবে খুঁটিনাটি শেখানো যায়, এখানে সেভাবে হয় না।শিল্পীর দাবি, যাঁরা একনিষ্ঠ গায়ক বা প্রকৃত শিক্ষক তাঁরা অবস্থার প্রেক্ষিতে অনলাইন ক্লাস নিতে বাধ্য হলেও তৃপ্ত নন। কারণ, বন্ধু বাড়িতে এলে তাঁকে জড়িয়ে ধরা আর ফোনে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলা কি এক?

পড়ুয়াদের ব্যর্থতা মোছাতে শিক্ষকদের স্পর্শ লাগে

‘‘অনলাইন ক্লাসে বাচ্চাদের গল্প শোনানো যায়। ছবি আঁকানো যায়। এগুলো ‘নান্দীকার’ সংস্থার শিশুশিল্পীদের সঙ্গে আমরাই করেছি’’, জানালেন অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত।পড়াশোনা নিয়ে তাঁর মত, ‘‘আমরা এখন স্কুলের বদলে অনলাইনে একটি চ্যাপ্টার বুঝিয়ে হোমটাস্কও দিচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: মাওবাদী কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে ঢাঙ্গিকুসুমে ডিজি, বৈঠক ঝাড়গ্রামে

কিন্তু অনলাইনে অভিনয়ের ক্লাস? কিছুতেই হয় না। অভিনেত্রীর যুক্তি, একজনকে ভাল করে না দেখে, মুখোমুখি না হয়ে অ্যাক্টিং শেখানো অসম্ভব। একই সঙ্গে সোহিনী চিন্তিত বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও, ‘‘আমাদের সময় থেকেই কাদা ঘেঁটে খেলাধুলো বন্ধ হতে শুরু করেছে। নিউ নর্মালে বাচ্চারা সারাক্ষণ গ্যাজেট বন্দি। এর ফল ভাল হবে তো?’’ তাঁর যুক্তি, কোনও বাচ্চা ফেল করলে শিক্ষকদের স্নেহস্পর্শ ব্যর্থতা ভুলতে সাহায্য করে। এটাও অতি জরুরি।

বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য এছাড়া উপায় কী?

জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্পী ইমন চক্রবর্তী গত চার-পাঁচ বছর ধরেই অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। তাই তাঁর ধারা একবার ধরে নিলে অসুবিধেয় পড়েন না শিক্ষার্থী, শিক্ষক দু’জনেই। ‘‘দেশ বা রাজ্যের বাইরের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ছাড়া বিকল্পও কিছু নেই’’, যুক্তি শিল্পীর। তাঁর বক্তব্য, যেহেতু তিনি একটি ক্লাসে ৫-৬ জনের বেশি নেন না, তাই সবাইকে কোয়ালিটি মনোযোগ দিতে পারেন। অফলাইন ক্লাসে যা সম্ভব নয়। কারণ, সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমবেশি ২০ জন।

শুধুই সুবিধে, অসুবিধে কিচ্ছু নেই অনলাইন ক্লাসে? স্বীকার করলেন ইমন, ‘‘কোনও ভাবেই বাচ্চাদের অনলাইনে গান শেখানো যায় না। একটু বড় না হলে তাই এই ক্লাসের অনুমতি দিই না। আর অনলাইন ক্লাসে পরিশ্রম প্রচুর। চিৎকার করে বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। তখন মনে হয়, কবে অফলাইন ক্লাসের দিন আসবে?’’

অনলাইনেও শিক্ষক-ছাত্র বন্ডিং তৈরি হয়

বিয়ে, সংসার তারপর সন্তান— এই নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত ছিলেন অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়ে এখন তুলনায় বড়। ফলে, ব্যস্ততা কমেছে, অবসর বেড়েছে। সময় কাটাতে কী করবেন? অতিমারির আবহে অভিনয় যেহেতু বন্ধ তাই বেছে নিয়েছেন ২০ বছর আগের পেশাকে।

কী সেটা? অ্যাক্টিং নয়, অনলাইনে প্রাইভেট টিউশনি শুরু করেছেন কনীনিকা! ‘‘প্রথমে দ্বিধা ছিল, পারব তো?সোশ্যালে জানানোর পর দেখলাম, একজন-দু’জন করে শিক্ষার্থী আসছে!’’বললেন অভিনেত্রী।

ভার্চুয়াল জগৎ শিক্ষক-ছাত্রের বন্ডিং তৈরি করে দিতে পারছে? ‘‘নয় কেন?’’ প্রশ্ন কনীনিকার। বললেন, তাঁরই এক নতুন ছাত্রী দুর্ঘটনায় আহত। ফোনে জানিয়েছে ক্লাসে যোগ দিতে না পারার কথা।এ ভাবেই পারস্পরিক সুবিধা-অসুবিধার কথা জানাতে জানাতে অনলাইনেওবন্ডিং এসে যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে,দাবি অভিনেত্রীর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy