Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Sushmita Dey

দেবের মুখ দেখে পরীক্ষা দিতে যেতেন, আজ তিনি অপরাজিতা অপু!

গয়নার বিজ্ঞাপনে বড়ই ভাল লাগছিল মডেল মেয়েটিকে। সেই প্রথম আশা জাগে অভিনেত্রীর মনে। ‘‘ইশ! যদি ওই জায়গায় আমি থাকতাম!’’

সুস্মিতা দে ও দেব

সুস্মিতা দে ও দেব

তিস্তা রায় বর্মণ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৫৩
Share: Save:

পরীক্ষার দিন ভীষণ আতঙ্ক। কেমন প্রশ্ন আসবে কে জানে। দইয়ের ফোঁটায় কাজ দেবে না। উপায় একটাই, সুপারস্টার দেব! খেতে খেতে মা টিভিতে গানের চ্যানেল চালিয়ে দিল। দেবের গান চলছে। মন শান্ত। পরীক্ষাও হল দিব্বি!

এমনই হত সুস্মিতা দে-র সঙ্গে। আসানসোলের মেয়ে। মডেলিং দিয়ে পথচলা শুরু। আজ সেই ২২ বছরের মেয়েটি বাংলা মেগার জনপ্রিয় মুখ। তিনি আজ ‘অপরাজিতা’। তাঁর কাছ থেকেই তাঁর জীবনের কিছু ঝলকের কথা শুনল আনন্দবাজার ডিজিটাল।

তখন ক্লাস এইট। স্কুলের রাস্তায় এক দিন একটি ব্যানার চোখে পড়ে সুস্মিতার। গয়নার বিজ্ঞাপনে বড়ই ভাল লাগছে মডেল মেয়েটিকে। সেই প্রথম আশা জাগে অভিনেত্রীর মনে। ‘‘ইশ! যদি ওই জায়গায় আমি থাকতাম!’’ ব্যস, সেই থেকে স্বপ্নের পিছনে ছোটা শুরু।

আসানসোলেরই এক মেকআপ শিল্পীর জন্য প্রথম ক্যামেরার সামনে এসেছিলেন ‘অপু’। সেজেগুজে ফোটোশ্যুট করেছিলেন তিনি। প্রচুর প্রশংসিত হয় তাঁর ছবিগুলি। তার পর বেশ কয়েকটি কাজের ডাক আসে। তিনি একের পর এক ফোটোশ্যুট করতে শুরু করেন। এক বার কলকাতা থেকেও ডাক আসে। বিখ্যাত এক মেকআপ শিল্পীর হয়ে তাঁকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হবে। সেই কাজের পর তাঁর অল্পবিস্তর পরিচিতি বাড়তে থাকে শহরে।

আরও পড়ুন: গুনগুনের মতো নাচতে নাচতে নীলকে আনতে গেলে মন্দ হয় না: তৃণা সাহা

কিন্তু পথটা হঠাৎই থেমে যায় কয়েক দিনের জন্য। মেদিনীপুরে একটি গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। তাঁর পারফরম্যান্সের পর ফাইনালে যাওয়া কেউ আটকাতেই পারবে না বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু নাম ঘোষণার সময় সুস্মিতা দেখলেন, তাঁর নাম ধরে শেষমেশ কেউ ডাকল না! তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি। কেঁদে ফেলেছিলেন। টানা সাত দিন কেঁদেছিলেন। বাবা-মা সর্ব ক্ষণ তাঁর পাশে ছিলেন। কিন্তু ভীষণ হতাশ লাগছিল তাঁর। সাত দিন পরে হঠাৎই একটি ফোন, ‘‘সুস্মিতা, নাম ঘোষণার সময় তোমার নামটা ভুল করে মিস হয়ে গিয়েছে। তুমিও ফাইনালে উঠে গিয়েছ।’’ এ তো সবে শুরু। ‘মিস বিউটিফুল’-এর ট্যাগ পাওয়া থেকে শুরু করে আজ জি বাংলার সিরিয়ালের নায়িকা।

বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পরে আসানসোলে কিছু মজার ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন তাঁর পরিবার।

অভিনেত্রী বললেন, ‘‘বাবা কাগজের দোকানে কাগজ কিনতে গিয়েছে। পাশে শুনতে পায় কয়েক জন বলাবলি করছিল, ‘অপরাজিতা অপু বলে একটা সিরিয়াল আসছে জানো? আমাদের আসানসোলেরই মেয়ে!’ কাগজের দোকানের মালিক তখন বাবাকে দেখিয়ে বলে, ‘আরে ওনারই তো মেয়ে’ বাবা ভীষণ খুশি হয়ে আমায় ফোন করে এই ঘটনাটি জানায়। এ রকম বহু ঘটনা ঘটছে এখন। যা আমি চিরকাল স্বপ্নে দেখতাম।’’

আরও পড়ুন: জামিন পেলেন এসভিএফের অন্যতম কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা

দেবের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘এখন আমার সব আত্মীয় বলেন, ‘এ বার তো তুই দেখা করবিই! তুই তো এখন জনপ্রিয়।’ জানি না কবে দেখা হবে। তবে অপেক্ষা করেই যাব।’’ এক বার আসানসোলে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন দেব। ‘অপরাজিতা অপু’ তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে স্কুল থেকে ফিরেই পোশাক বদলে অনুষ্ঠানে হাজির। স্বপ্নের মানুষটি তাঁর থেকে কয়েক গজ দূরে। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে বাড়ি ফিরতে মন চায় নাকি! কিন্তু এ দিকে পর দিন যে তাঁর পরীক্ষা! অভিনেত্রীর কথায়: ‘‘পড়ার সময় পাইনি তেমন। কিন্তু অবিশ্বাস্য ভাবে পরীক্ষা খুব ভাল হয় আমার। দেব আমার লাকি চার্ম। এক বার দেব-এর মুখ না দেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। সে বার ভাল হয়নি ততটাও। কুসংস্কার না। কিন্তু এটা আমার ভালবাসা।’’

শেষে সুস্মিতা জানালেন, তিনি সবসময়ে ভাবতেন, তাঁরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। তিনি কী কী বলবেন, সে সব প্র্যাক্টিস করতেন। আজ ধীরে ধীরেতাঁর সমস্ত স্বপ্ন পূরণ হতে দেখে তিনিই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

Sushmita Dey Dev Aparajita Apu Interview Zee Bangla
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy