Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Amit Kumar

Amit Kumar: কিশোর কুমার, অমিত কুমার একই মঞ্চে মনোনয়ন পাওয়ার পরে পুরস্কৃত হয়েছি, এটাও স্বজনপোষণ?

বলিউড আর বাংলার রিয়্যালিটি শো-তে কোনও পার্থক্য নেই! সেই এক ভাবে প্রতিযোগিতা হচ্ছে

অমিত কুমার।

অমিত কুমার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ১০:৪৭
Share: Save:

প্রশ্ন: নতুন মিউজিক অ্যালবাম ‘জিন্দা হুঁ ম্যায়’ ইউটিউবে হিট! অমিত কুমার কি গানে বলা কথাই প্রমাণ করতে চাইছেন?

অমিত কুমার:
আমার এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। ওই যে বাংলায় বলে না, যত ক্ষণ শ্বাস তত ক্ষণ বেঁচে নাও! আমি সেই কথাই গানে বলেছি। সবাই কবর বা কফিনকে মৃত্যুর প্রতীক ভাবেন। আমি তাঁকেই জীবনের প্রতীকে রূপান্তরিত করেছি। ‘পঞ্ছি হুঁ ম্যায়’ কথার সঙ্গে মিলিয়ে উড়ন্ত পাখিকে ভিডিয়োয় ধরেছি। যা আরও জীবন্ত করেছে আমার গান। আমি সত্যিই এখনও স্বাধীন পাখির মতোই বাঁচি। উড়তে ভালবাসি। আমার এই চাওয়াই গান আকারে ছড়িয়ে দিলাম।


প্রশ্ন: কোন প্রজন্ম আপনার নতুন গান বেশি শুনছেন?

অমিত কুমার:
সব প্রজন্ম! এ ব্যাপারে আমি সত্যিই ভাগ্যবান। আজকের প্রজন্মকে গান দিয়ে বসিয়ে রাখা বেশ শক্ত। সেই জায়গায় ছোট থেকে বড়, বাচ্চা থেকে বুড়ো, কেউ বাদ যাচ্ছেন না। তাঁরা শুধুই শুনছেন না। মন্তব্য বিভাগে মতামতও লিখছেন। ৯৮ শতাংশ আমার গানের ভক্ত। ১-২ শতাংশ সমালোচনার ছলে কোমরের নীচে মারছেন। আমি পাত্তা দিচ্ছি না তাঁদের। বড় অংশ এখনও আমায় শুনছেন, যথেষ্ট।


প্রশ্ন: আজকের প্রজন্মকে টানতেই আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচণ্ড সক্রিয়?

অমিত কুমার:
সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। ফেসবুকে ছ’লক্ষ অনুরাগী। ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার্স ১৭ হাজার ছুঁইছুঁই। টুইটারেও আছি। সমসাময়িক থাকতে যখন যেমন তখন তো তেমন হতেই হবে। আমি কাউকে কটাক্ষ করি না। কেউ আমায় করলেও পাত্তা দিই না।

প্রশ্ন: বাংলায় এসে হিন্দি গানের ভিডিয়ো শ্যুট করলেন, ইউটিউবে বাংলা গান গাইবেন না?

অমিত কুমার:
অবশ্যই গাইব। শূন্য থেকে শুরু করে আজ আমার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল দেখছেন এক লক্ষ ৭০ জন। দু’লক্ষ দর্শক হলেই আমার বাংলা গান আসবে চ্যানেলে। পুজোর সিঙ্গল, রবীন্দ্রনাথের গান সব থাকবে। নতুন বছরে অমিত কুমার পুরোদস্তুর বাঙালি হয়ে উঠবে! (হাসি)

অকপট অমিত।

অকপট অমিত।

প্রশ্ন: বলিউডের পরে বাংলার রিয়্যালিটি শো-তে অমিত কুমার, কোনও পার্থক্য চোখে পড়ল?

অমিত কুমার:
(হেসে ফেলে) সত্যি কথা বলব? কোনও পার্থক্য নেই। সব জায়গাতেই প্রতিযোগিতার এক ছাঁচ। গতানুগতিক ভঙ্গিতেই চলছে সব। যা আগে হয়েছিল সে ভাবেই আজও হচ্ছে। তার মধ্যেও এটা বলব, নতুন শিল্পী যাঁরা গান গাইছেন তাঁদের মধ্যে অনেকের প্রতিভা আছে। একটা সময়ে ভাল ভাল শিল্পী উপহার দিয়েছে এই প্রতিযোগিতা। আমি আর অন্নু কপূর মিলে প্রথম রিয়্যালিটি শো এনেছিলাম। আফশোস, তার বাইরে থেকে আজও কেউ বেরোতে পারল না। আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ‘সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ’, ‘সুপার সিঙ্গার ৩’। দুটোই বাবা কিশোর কুমারকে নিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমি উপভোগ করেছি। এই পর্যন্ত।


প্রশ্ন: বিতর্কের ধাঁচও কি দুই জায়গায় এক? এখানেও নেতিবাচক প্রচার করে টিআরপি বাড়ানোর চেষ্টা?

অমিত কুমার:
আমি কোথাও নেতিবাচক কিছুই দেখিনি, দেখছিও না। নতুন শিল্পীদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। এটা তো ইতিবাচক দিক। ‘সুপার সিঙ্গার ৩’-এর ১২ জন শিল্পীর মধ্যে ৮-৯ জনের গান, গলা খুব ভাল লেগেছে। তবে আগামী দিনে ওঁদের বলব, ছবির গানের বদলে নিজস্ব গানের উপরে জোর দিতে। এখন ছবির নেপথ্য শিল্পী হওয়ার ভাবনা পুরনো হয়ে গিয়েছে। দিন বদলেছে। অনেক মাধ্যম এখন। তার কোনও একটি ক্ষেত্রে নিজেকে প্রমাণিত করতে পারলেই তুমি জিতে গেলে। এই পথেই এই প্রজন্মকে এগোতে হবে।


প্রশ্ন: অর্থাৎ, প্রতিযোগিতায় ‘সেরা’ হলে আর কোনও চিন্তা নেই?

অমিত কুমার:
খুবই বিতর্কিত প্রশ্ন। উত্তর দেওয়াও কঠিন। এ ভাবে নির্দিষ্ট করে কি কিছু বলা যায়? পরিশ্রম, ভাগ্য আর চেষ্টা, এই ত্রিধারা মিললে অবশ্যই ভাল কিছু হবে এটুকু বলতে পারি। তবে আমার মনে হয় বড় প্রযোজক সংস্থা বা চ্যানেল কর্তৃপক্ষ রিয়্যালিটি শো-এর ‘সেরা’দের নিজেদের মুঠোতেই ধরে রেখে দেয়। জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরে শিল্পী নিজের মতো করে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পান। এটা সম্পূর্ণ আমার ধারণা। আমি ভুলও হতে পারি।

প্রশ্ন: আপনি গানের দুনিয়ায় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আসেননি, বংশ পরম্পরায় এসেছেন, তা হলে কি আপনাকে সাহায্য করেছে স্বজনপোষণ?

অমিত কুমার:
(আবার হাসি) এখন অভিনয় দুনিয়ায়, গণমাধ্যমের সব থেকে চর্চিত স্বজনপোষণ শব্দ! তাই না? আমি কোনও দিন কানে তুলিনি এ সব। কিছু মানুষ বলবেনই। ঈর্ষা করে স্বজনপোষণের দোহাই দেবেন। তাঁরা বলার জন্যই জন্মেছেন। কেউ কেউ বলেন, আমি নাকি গাইতেই জানি না! সব কথা কানে তুললে তো মুশকিল। গান গাইতে পারব না। অনেক কিছু দেখেছি। আমার সময়ে আমার মতো করে নিজেকে প্রমাণ করেছি। কিশোর কুমার, অমিত কুমারের নাম এক পুরস্কার মঞ্চে মনোনয়ন পেয়েছে। সেখান থেকে আমি পুরস্কৃত হয়েছি। এটাও কি স্বজনপোষণ? সবার কথা ধরতে গেলে গান ছেড়ে দিতে হয়! এখন আমি স্বাধীন ভাবে কাজ করছি। বাবার, আমার জনপ্রিয় হিন্দি ছবির গানের ‘কভার সং’ গাইছি। নিজের শো করার ইচ্ছে আছে। আমার পছন্দের ইংরেজি গানও শুনতে পাবেন আমার গলায়। এতরকম করে শ্রোতারা পাচ্ছেন বলেই শুনছেন। আমি খুব খুশি।


প্রশ্ন: কিশোর কুমার তা হলে আপনার ত্রাতা নন, শুধুই বাবা?

অমিত কুমার:
আমি ওঁর উত্তরাধিকারী। ত্রাতা হলে আজ আপনি আমার সাক্ষাৎকার নিতেন? কুমার শানুকে বাংলা রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চে বলেছি, ‘‘তুমি বাবার ভক্ত, আমি বাবার রক্ত!’’ কথাটা শুনে সবাই হাততালি দিয়ে উঠেছেন। তুলনা যদি কেউ টানেনও কোনও আপত্তি নেই। কিশোর কুমার যে আগে আমার বাবা!

প্রশ্ন: তিন প্রজন্মের সাক্ষী আপনি, গান-জীবন নিয়ে কোনও অসন্তোষ?

অমিত কুমার
: কিচ্ছু নেই। আমি আজ বাঁচি, রোজ বাঁচি। অতীত ফিরে দেখি না। পিছনের দিকে তাকাই না। ভবিষ্যত নিয়েও মাথা ঘামাই না। প্রতি মুহূর্তে বাঁচায় বিশ্বাসী। ছবির গানের দুনিয়া থেকে সরে এসেছি। স্বাধীন ভাবে কাজ করে বাঁচছি। ৭০ বছরে এসে নতুন করে কী প্রমাণ করব? এখনও যে এত জন আমার গান শোনেন, এটাই কি যথেষ্ট নয়? এখনও সত্যিই ‘জিন্দা হুঁ ম্যায়’।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy