‘পারমিতার একদিন’ করার পরে আমার কাছে পর পর ‘খুকু’-র মতো চরিত্রের অফার আসছিল। গ্রাফিক- সনৎ সিংহ
দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর। জন্ম থেকেই আমি স্বাধীন দেশের নাগরিক। পরাধীন ভারত দেখিনি। দেশভাগ দেখিনি। তবে গল্প শুনেছি। তাই পরাধীনতার জ্বালা, কষ্ট আমি জানি না। আমার কাছে স্বাধীনতা তাই রাজ্য বা দেশের স্বাধীনতা নয়, ব্যক্তিস্বাধীনতা। ছোটবেলা থেকেই আমার কাছে ব্যক্তিস্বাধীনতার মূল্য অসীম। আমার মা স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, বাবা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমার পড়াশোনা, পেশা, জীবন নিয়ে অগাধ স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। সেই দিক থেকে আমি সত্যিই ভাগ্যবান।
এ বার আপনারা প্রশ্ন করবেন, ব্যক্তিস্বাধীনতা মানে কী? আমার উত্তর, নিজের শিক্ষা, সংস্কৃতিতে উন্নত হওয়ার আরেক নাম স্বাধীনতা। স্বাধীনতা মানে নিজের মতো করে কথা বলার অধিকার। তার মানে, ইচ্ছে হলেই কাউকে আমি চার অক্ষরের গালাগালি দিলাম, সেটা স্বাধীনতা নয়। নিজের মতো করে নিজের পথ চলাই আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা। স্বাধীন ভাবে পথ চলতে গিয়ে আমি হয়তো অনেক আঘাত পেয়েছি। অনেককে আঘাতও দিয়েছি। আমি জানি, এ সব জীবনেরই অংশ। তবু ব্যক্তিস্বাধীনতা বজায় রাখতে লড়ে গিয়েছি, লড়বও আজীবন।
বাকি নারী স্বাধীনতার কথা। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে অনেক মেয়ের প্রশ্ন, আমরা কি সত্যিই স্বাধীন? আমি মনে করি, আগের তুলনায় অনেক স্বাধীন আমরা। বলিউডে দেখুন, দীপিকা পাড়ুকোন হিন্দি ছবির দুনিয়া শাসন করছেন। কোনও নায়কের থেকে তাঁর পারিশ্রমিক কম নয়। চাইলে স্থিরচিত্রে স্বচ্ছন্দে বক্ষভাঁজ প্রদর্শন করেন। হয়তো কটাক্ষ করা হয় তাঁকে। হয়তো নীতিপুলিশির শিকার হন। তবু, চাইলে এ ভাবেও প্রকাশ্যে আসতে পারেন। ৭৫ বছরে আগের নারী কি স্বাধীন ভাবে পুরুষের সমান পারিশ্রমিক বা নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরার এই সাহস দেখাতে পারতেন? আবার মীরাবাঈ চানুকেই দেখুন। অলিম্পিক্সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করলেন। নির্ভয়ার মতো ঘটনা ঘটার পরেও মীরাবাঈ কিন্তু রোজ প্রশিক্ষণে যেতেন ট্রাক চালকদের সাহায্য নিয়ে। একাধিক চালক তাঁদের গাড়িতে করে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতেন চানুকে। এটা কম কথা? পাশাপাশি, সাধারণ মেয়েরাও এখন নিজের কথা, ইচ্ছে-অনিচ্ছের কথা, ভাল লাগা-মন্দ লাগার কথা সবার দাঁড়িয়ে জানাতে পারেন। ৭৫ বছরের স্বাধীনতায় আমরা এটাই অর্জন করেছি।
তা হলে কি ৭৫ বছরের স্বাধীনতা দিবসে আমাদের স্বাধীনতার বৃত্ত সম্পূর্ণ? নতুন করে আর কোনও কিছু থেকেই আমাদের স্বাধীনতা পাওয়ার নেই? এ বার এক জন অভিনেত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমি এর উত্তর দেব। এতগুলো বছর ধরে মঞ্চে, বড়, ছোট পর্দায় বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছি। ইদানীং যেন মনে হচ্ছে, ইচ্ছেমতো চরিত্র বেছে নেওয়ার স্বাধীনতায় সামান্য হলেও টান ধরেছে। কী রকম? যেমন, ‘পারমিতার একদিন’ করার পরে আমার কাছে পর পর ‘খুকু’-র মতো চরিত্রের অফার আসছিল। এখন তেমনি ‘পুটু পিসি’। মানছি, এই চরিত্রগুলোকে ঠিক মতো ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি বলেই এই ধরনের চরিত্রের জন্য এত ডাকাডাকি। তার মানে, কোনও অভিনেতা বা অভিনেত্রী একটি চরিত্রে ভাল অভিনয় করে ফেললে তাঁকে ওই চরিত্রের ধাঁচায় বন্দি হয়ে বাকি অভিনয় জীবন কাটিয়ে দিতে হবে? নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে ইচ্ছেপূরণ করতে পারবেন না?
স্বাধীনতার ৭৫ বছরে দাঁড়িয়ে আমার প্রশ্ন, এক জন অভিনেত্রী তাঁর ইচ্ছে মতো চরিত্র বাছার স্বাধীনতা কবে পাবেন?
বাকি নারী স্বাধীনতার কথা। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে অনেক মেয়ের প্রশ্ন, আমরা কি সত্যিই স্বাধীন? আমি মনে করি, আগের তুলনায় অনেক স্বাধীন আমরা। বলিউডে দেখুন, দীপিকা পাড়ুকোন হিন্দি ছবির দুনিয়া শাসন করছেন। কোনও নায়কের থেকে তাঁর পারিশ্রমিক কম নয়। চাইলে স্থিরচিত্রে স্বচ্ছন্দে বক্ষভাঁজ প্রদর্শন করেন। হয়তো কটাক্ষ করা হয় তাঁকে। হয়তো নীতিপুলিশির শিকার হন। তবু, চাইলে এ ভাবেও প্রকাশ্যে আসতে পারেন। ৭৫ বছরে আগের নারী কি স্বাধীন ভাবে পুরুষের সমান পারিশ্রমিক বা নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরার এই সাহস দেখাতে পারতেন? আবার মীরাবাঈ চানুতেই দেখুন। অলিম্পিক্সে দেশের মুখ উজ্জবল করলেন। নির্ভয়ার মতো ঘটনা ঘটার পরেও মীরাবাঈ কিন্তু রোজ প্রশিক্ষণে যেতেন ট্রাক চালকদের সাহায্য নিয়ে। একাধিক চালক তাঁদের গাড়িতে করে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতেন চানুকে। এটা কম কথা? পাশাপাশি, সাধারণ মেয়েরাও এখন নিজের কথা, ইচ্ছে-অনিচ্ছের কথা, ভাল লাগা-মন্দ লাগার কথা সবার দাঁড়িয়ে জানাতে পারেন। ৭৫ বছরের স্বাধীনতায় আমরা এটাই অর্জন করেছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy