Imran Khan could not shine as a successful hero inspite of opportunities dgtl
bollywood
একের পর এক সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ, ব্যক্তিগত জীবনেও বিধ্বস্ত আমির খানের ভাগ্নে
শৈশবে ইমরানের তোতলানোর সমস্যা ছিল। বোর্ডিং স্কুলে থাকার পরে তাঁর এই সমস্যাগুলি ধীরে ধীরে চলে যায়। কিন্তু লেখাপড়ায় আগ্রহ কোনওদিন ফিরে আসেনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ১০:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
বলিউডে মজবুত নেটওয়ার্ক এবং অভিনয়ের ডিগ্রি। দুটোই ছিল তাঁর কাছে। সুপারস্টার মামার হাত ধরে পা রেখেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তার পরেও এখন ছবির সুযোগ পৌঁছয় না ইমরান খানের কাছে।
০২২২
১৯৮৩-র ১৩ জানুয়ারি ইমরানের জন্ম আমেরিকার ম্যাডিসনে। তাঁর বাবা অনিল পাল ছিলেন বাঙালি। অনিল ছিলেন প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার। ইমরানের মা নুজহুত খান ছিলেন পেশায় মনোবিদ। পরিচালক প্রযোজক নাসির হুসেনের মেয়ে নুজহুত সম্পর্কে আমির খানের তুতো বোন।
০৩২২
ইমরানের জন্মের কয়েক মাস পরেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর বাবা মায়ের। ছোট্ট ইমরানকে নিয়ে তাঁর মা মুম্বই ফিরে আসেন। ইমরানকে ভর্তি করা হয় বম্বে স্কটিশ স্কুলে। কিন্তু মায়ের সঙ্গেও বেশি দিন থাকা হল না ইমরানের।
০৪২২
ভারতে আসার কয়েক দিন পরেই বিয়ে করলেন নুজহুত। ইমরানকে তখন পাঠানো হল বোর্ডিং স্কুলে। বার বার শহর এবং স্কুল পরিবর্তন হওয়ায় তাঁর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছিল, পরে এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন ইমরান।
০৫২২
শৈশবে ইমরানের তোতলানোর সমস্যা ছিল। বোর্ডিং স্কুলে থাকার পরে তাঁর এই সমস্যাগুলি ধীরে ধীরে চলে যায়। কিন্তু লেখাপড়ায় আগ্রহ কোনওদিন ফিরে আসেনি। ভারতে পড়াশোনার পাট শেষ করে ইমরান আমেরিকায় চলে যান, তাঁর বাবার কাছে।
০৬২২
আমেরিকায় নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে ফিল্ম মেকিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অবন্তিকা মালিকের। অবন্তিকার মা ছিলেন বহুজাতিক টেলিভিশন চ্যানেলের সিইও।
০৭২২
ইমরান-অবন্তিকার আলাপ প্রেমে পরিবর্তিত হতে সময় নেয়নি। দু’জনে আমেরিকায় লিভ ইনও করতেন।
০৮২২
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির কোর্স শেষ করার পরে আমেরিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন ইমরান। ছোটবেলায় তিনি তাঁর মামা আমির খানের ‘জো জিতা ও হি সিকন্দর’ এবং ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবি দু’টিতে অভিনয় করেছিলেন।
০৯২২
তবে পরবর্তী সময়ে ইমরানের ইচ্ছে ছিল পরিচালক হওয়ার। কিন্তু তাঁর সুদর্শন চেহারার জন্য প্রস্তাব আসে নায়ক হওয়ার। সে সময় রণবীর কপূর, শাহিদ কপূরের মতো স্টারকিডরা একে একে পা রাখছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই স্রোতে গা ভাসালেন ইমরানও।
১০২২
মুম্বই এসে তিনি অভিনয়ের কোর্সও করেন। এর পর ২০০৮ সালে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ইমরান। তাঁর প্রথম ছবি প্রযোজনা করেন মামা আমির খান। ছবির নাম ‘জানে তু ইয়া জানে না’।
১১২২
ইমরান খান-জেনেলিয়া ডি’সুজার জুটিতে কলেজপ্রেমের এই ছবি বক্সঅফিসে সুপারহিট হয়েছিল। প্রথম ছবিতে আকাশছোঁয়া সাফল্য ও জনপ্রিয়তা তাঁকে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছিল সমসাময়িক অভিনেতাদের তুলনায়।
১২২২
এর পর ইমরানের দ্বিতীয় ছবি ‘লাক’ এবং তৃতীয় ছবি ‘কিডন্যাপ’ বক্স অফিসে ব্যর্থ বয়। ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ পরিচয় থেকে বাঁচাতে ইমরানের পাশে এসে দাঁড়ালেন কর্ণ জোহর। তিনি ইমরান ও সোনম কপূরকে নিয়ে বানালেন ‘আই হেট লভ স্টোরিজ’। কিন্তু এই ছবিটিও বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়।
১৩২২
স্টার কিড হওয়ার সুবাদেই হয়তো ইমরানের সামনে সুযোগের অভাব হয়নি। ২০১০ সালে তিনি দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে অভিনয় করেন ‘ব্রেক কে বাদ’ ছবিতে। কিন্তু এই ছবিও দর্শকদের মন জয় করতে পারেনি।
১৪২২
ইমরানের ডুবতে থাকা কেরিয়ারের হাল ধরতে আবার এগিয়ে এলেন আমির খান। ২০১১-এ আমিরের ছবি ‘ডেলহি বেলি’-তে অভিনয় করলেন ইমরান। তবে দর্শকদের একাংশের পছন্দ হলেও বেশির ভাগ দর্শক এর থেকে মুখ ফিরিয়েই ছিলেন।
১৫২২
এর পর যশরাজ ফিল্মসের ছবি ‘মেরে ব্রাদার কি দুলহন’-এ অভিনয় করেন ইমরান। নায়িকা ছিলেন ক্যাটরিনা কইফ। কিন্তু এই ছবিও তাঁর কেরিয়ারে সাফল্যের বাতাস বয়ে আনতে পারেনি।
১৬২২
একের পর এক বড় প্রযোজক, পরিচালক, নায়িকা পাওয়ার পরেও ইমরান বলিউডে ভাল অভিনেতা হিসেবে কোনও দাগ কাটতে পারেননি। এর পর তিনি নিজের ছক ভাঙবেন বলে ঠিক করেন।
১৭২২
২০১১ সালে তিনি অভিনয় করেন বিশাল ভরদ্বাজের ছবি ‘মটরু কী বিজলী মণ্ডোলা’-তে। এই ছবিতে হরিয়ানভি কথ্যরীতিতে তিনি সংলাপ বলেন। কিন্তু তাঁর চেহারার সঙ্গে সেই সংলাপের কায়দা কোনওভাবেই মেলেনি। ফলে দর্শকদের কাছে এ বারও তিনি ব্রাত্য হয়েই থাকলেন।
১৮২২
এর পর ‘বম্বে টকিজ’, ‘ওয়ন্স আপন এ টাইম ইন মুম্বই দোবারা’, ‘গোরি তেরা প্যায়ার মেঁ’— ইমরানের সব ছবি পর পর ব্যর্থ হয়। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় এখনও অবধি তাঁর শেষ ছবি ‘কাট্টি বাট্টি’। কিন্তু এটাও চরম ব্যর্থ।
১৯২২
সাত বছর টানা সুযোগ পেয়েও ইমরান নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি বলিউডে। এক সময় আমির খানের ছায়াও সরে যায় তাঁর মাথার উপর থেকে। ফলে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইমরানের ব্যর্থতা।
২০২২
কেরিয়ারে ব্যর্থতা প্রথমে ছাপ ফেলেনি ইমরানের ব্যক্তিগত জীবনে। আট বছর প্রেম চলার পরে ২০১১-য় তিনি বিয়ে করেন অবন্তিকা মালিককে। তিন বছর পরে জন্ম হয় তাঁদের মেয়ে, ইমারা মালিক খানের।
২১২২
সন্তান হওয়ার পরে সমস্যা দেখা দেয় ইমরানের দাম্পত্যে। গুঞ্জন, অর্থের প্রয়োজনে নাকি অবন্তিকাকে হাত পাততে হত তাঁর বাবা মায়ের কাছে। শেষ অবধি মেয়েকে নিয়ে একটা সময় তিনি ইমরানকে ছেড়ে চলেও গিয়েছিলেন বাবা মায়ের কাছে।
২২২২
মেয়ের জন্মের পরে ইমরান বলেছিলেন, তিনি অভিনয় জীবন থেকে সাময়িক অবসর নিচ্ছেন। কারণ পরিবারকে সময় দিতে চান। কিন্তু সেই ‘সাময়িক পর্ব’ যে এত দীর্ঘায়ত হবে, ভাবতে পারেননি তিনি। শোনা যাচ্ছে, এখন তিনি কর্ণ জোহরের হাত ধরে পরিচালনায় আসতে চাইছেন।