ইমন চক্রবর্তী দেবর্ষি সরকার
প্র: ট্রোলিং না কি করোনার এই দীর্ঘায়িত ইনিংস, কোনটায় বেশি মন খারাপ হল?
উ: ট্রোলিংয়ের বিষয়টা আমি মন থেকে ঝেড়ে ফেলেছি। কিন্তু করোনা ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না। গত বছর তা-ও আশাবাদী ছিলাম। সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে ফাঁকা সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় দফার লকডাউনে উৎসাহ পাচ্ছি না। ইন্ডাস্ট্রি কী ভাবে সার্ভাইভ করবে, এই প্রশ্নটা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা সকলেই দিশাহীন এবং কম-বেশি আর্থিক সমস্যায়। আশা হারিয়ে ফেলেছি বলব না, এই লড়াইটা এ বার শেষ হওয়া দরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, সব নিয়মবিধি মেনে ধীরে ধীরে যেন অনুষ্ঠান শুরু করার দিকে নজর দেন।
প্র: রিয়্যালিটি শো এবং ত্রাণ, পরপর দু’টি বিষয়ে ট্রোলড হয়ে বোধহয় খানিক হতাশ হয়ে পড়েছিলেন?
উ: কিছু মানুষ গুরুত্ব পাওয়ার জন্যই অন্যকে আক্রমণ করতে থাকে। এদের জবাব দিয়েই আমি প্রথম ভুলটা করেছিলাম। তাতে পাত্তা পেয়ে, আরও বেশি বাজে কথা বলতে শুরু করে দিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও কোনও মন্তব্যে আর প্রত্যুত্তর দিই না। ভাল কাজ করতে গেলে বাধা আসবে। আমি থেমে যাব না, ত্রাণকাজ চালিয়ে যাব। এটা তো নিজের জন্য করছি না, মানুষের জন্য করছি। মানুষই এদের জবাব দেবেন।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি তুলনামূলক ভাবে নতুন। কিন্তু নিজস্ব অ্যাকাডেমি খুলেছেন, নতুনদের অ্যালবাম বার করছেন... এত কিছু করছেন কী ভাবে?
উ: পেশাদার জীবন ২০১২ সালে শুরু হলেও, ২০১৬ তে ‘প্রাক্তন’-এর মাধ্যমেই মূলত জনপ্রিয়তা পাই। সেই হিসেবে খুব বেশি দিন কাজ করছি না। কিন্তু তার পরেও আমার ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, যেখানে দেড় লক্ষের কাছাকাছি সাবস্ক্রাইবার। বিভিন্ন মিউজ়িক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে টাইআপ আছে। আসলে আমি খুব উদ্যোগী। মনে হল নতুনদের অ্যাপ্রোচ করে দেখি। তাতে যা প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, আমি অভিভূত। আমার প্ল্যাটফর্ম থেকে যারা কাজ করেছে, তাদের সকলের কাজ লোকের কাছে পৌঁছেছে। নতুনদের যে একটা জায়গা করে দিতে পারছি, এটা তৃপ্তিদায়ক। একটা দরজা বন্ধ হলে, আর একটা খোলে। বন্ধ দরজাগুলো যে নিজেরাই খুলছি, এটাই বড় পাওনা।
প্র: রিয়্যালিটি শো নিয়ে অমিতকুমারের সাম্প্রতিক মন্তব্যে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা কী রকম?
উ: অমিতকুমার একজন লেজেন্ড। কিন্তু উনি কথাগুলো কেন বললেন জানি না। শোয়ে গিয়ে ভাল বলে বেরিয়ে এসে খারাপ বলার মানে আমি বুঝিনি! মতের মিল না হলে উনি যেতেন না। কিন্তু গেলেন এবং পারিশ্রমিক নেওয়ার পরে এই সব... এটায় আমার খটকা লেগেছে। আমাকে কেউ কোনও দিন বলেনি যে, ভাল বলতে হবে। একটা ঘটনার কথা বলি, ‘সা রে গা মা পা’-এ রাঘবদা (চট্টোপাধ্যায়) একবার একজনকে বকুনি দিয়েছিলেন গান নিয়ে। তার জন্য রাঘবদাকে ট্রোলড হতে হয়। ভাল বললেও সমস্যা, খারাপ বললেও!
প্র: আপনার বিবাহিত জীবন কেমন চলছে?
উ: টাচউড সুন্দর চলছে। আমাদের প্রোডাকশনের কাজে নীলাঞ্জন (ঘোষ) মিউজ়িকের দিকটা দেখে। আমি অফিশিয়াল কাজগুলো করি। প্রোমোশন, পিআর... এটা আমার নতুন অবতার বলতে পারেন (হাসি)! আবার কখনও যে যার নিজের বৃত্তে মশগুল থাকি। নীলাঞ্জন ওর মতো কাজ করে, আমি নিজের মতো একটা ঘরে রেওয়াজ করি। আবার বিকেল হলে দু’জনে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি, একসঙ্গে যোগব্যায়াম করি। সপ্তাহে তিনটে দিন আমি লিলুয়ায় বাবার কাছে এসে থাকি, সেই সাপোর্টটা ও আমাকে দেয়।
প্র: বাম ছাত্ররাজনীতি করেছেন। অথচ গত মাসকয়েক ধরে যে রাজনৈতিক ডামাডোল চলল, সেখানে আপনাকে দেখা গেল না। আগামী দিনে রাজনীতিতে আসবেন?
উ: খুব সচেতন ভাবে রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। একটা সময়ে দেখলাম, যে সাপোর্টটা আমার সিনিয়রদের কাছ থেকে পাওয়ার কথা ছিল, সেটা পাচ্ছি না। রাজ্যে ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে। ওই সময়ে আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি করতাম, তাদের উপর দিয়ে প্রচুর ঝড়ঝাপটা গিয়েছিল। তখন কোনও সিনিয়রকে পাশে পাইনি। তা ছাড়া আমার মিউজ়িকও কম্প্রোমাইজ়ড হচ্ছিল। আগামী দিনে যে রাজনীতি করতে ইচ্ছুক নই, এমন নয়। তবে এখন গানই আমার প্রায়রিটি। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলে, রাজনীতি না করেও তা করা যায়।
প্র: রাজনীতিতে এসে শিল্পীরা ট্রোলড হয়েছেন। শিল্পী বলেই কি তাঁরা সফট টার্গেট?
উ: কেউ অন্য পেশা থেকে এসে রাজনীতি করলে সমস্যা হয় না। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল... কিন্তু শিল্পী হলেই তাঁকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। আগে থেকে ধরে নেওয়া হয়, তিনি কিছু জানেন না। আমার মতে, শিক্ষিত মানুষের রাজনীতিতে আসাটা দরকার। শিল্পীদের রাজনীতি করায় আমি খারাপ কিছু দেখি না, আর ট্রোলিংয়ের জন্য কোনও কাজ থেকে পিছিয়ে যাওয়া যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy