লোপামুদ্রা আরও বলেছেন, ‘‘এই কারণেই গায়কদের নতুন গান গাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরনো বা প্রচলিত গানকেই তাঁরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গাইছেন। নানা ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণের অক্লান্ত চেষ্টা তাঁদের। আমি সবটা অনুভব করতে পেরেছি। তাই মন দিয়ে শুধু গাওয়ার দিন বোধ হয় শেষ।’’ যাঁর গান বরাবর লড়াইয়ে ফেরার কথা বলেছে, তিনিও কি শেষে হতোদ্যম? প্রশ্ন শুনেই যেন উজ্জীবিত লোপামুদ্রা।
লোপামু্দ্রা মিত্র
সময় বদলেছে। কতটা বদলেছেন লোপামুদ্রা মিত্র? কতটাই বা বদলেছে তাঁর পুরনো বিশ্বাস?
এমন ভাবনা উস্কে দিয়েছেন শিল্পী স্বয়ং। সম্প্রতি তাঁর চার বছর আগে বলা একটি বক্তব্য আবারও চর্চায়। যেখানে তিনি তাঁর অনুজ শিল্পীদের বলেছিলেন, ‘‘আমার থেকে বয়সে যারা অনেক ছোট কিন্তু সহকর্মী, তাদের উদ্দেশে একটা কথা না বলে পারছি না। বলি কী, গানে মন দাও, উপকার পাবে। কারওকে পিছন থেকে ছুরি মেরো না। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখো। তোমার অর্জন করা জায়গা তোমারই থাকবে।’’
কোন বিশ্বাসের উপরে ভর করে ২০১৯-এ এ কথা বলেছিলেন লোপামুদ্রা? কেনই বা বলেছিলেন?
জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল শিল্পীর সঙ্গে। কথার শুরুতেই তাঁর আত্মসমর্পণ, ‘‘কিছু একটা ভাবনা বা ঘটনার প্রেক্ষিতে তো অবশ্যই বলেছিলাম। কিন্তু কী সেটা, মনে নেই। আচমকাই দেখছি আমার পুরনো কথা আবার নতুন করে সামনে এসেছে। সবাই পড়ছেন। মতামতও জানাচ্ছেন।’’ যাঁদের উদ্দেশে এ কথা বলা, গত চার বছরে তাঁরা কি মেনেছেন লোপামুদ্রার কথা? শিল্পী নিজের বলা কথা আর বিশ্বাস করেন? সামান্য থমকে থেমে গেলেন তিনি। তার পরেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে হাসতে হাসতে জবাব দিলেন, ‘‘এই প্রজন্মের এই সব কথায় কিচ্ছু যায় আসে না!’’
নিজের কথার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন লোপামুদ্রা। তাঁর দাবি, ‘‘১৯৯০-এ যখন গানকে পেশা হিসাবে বাছলাম, তখন শুধু গাইলেই চলত। তখনও ছায়াছবির গানের পাশাপাশি আধুনিক গান বলে একটি বিশেষ ধারা চালু ছিল। শ্রোতারা সেটা শুনতেন। নতুন গান প্রকাশিত হলে সে সব নিয়ে লেখালেখি, সমালোচনা হত। আমাদের কাছে নতুন গান শুনতে চাইতেন শ্রোতারা। কিন্তু আজ তো সেই পরিবেশ নেই।’’ গায়িকার মতে, এখন আধুনিক গানের চলটাই আর নেই। নতুন গান কোথাও বাজে না। কেউ শুনতেও চান না। যদিও বা অ্যালবাম প্রকাশিত হয়, সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে এক লাইনও লেখা হয় না! ফলে, এই প্রজন্মের শিল্পীদের প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার জন্য লড়তে হচ্ছে।
লোপামুদ্রা আরও বলেছেন, ‘‘এই কারণেই গায়কদের নতুন গান গাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরনো বা প্রচলিত গানকেই তাঁরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গাইছেন। নানা ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণের অক্লান্ত চেষ্টা তাঁদের। আমি সবটা অনুভব করতে পেরেছি। তাই মন দিয়ে শুধু গাওয়ার দিন বোধ হয় শেষ।’’ যাঁর গান বরাবর লড়াইয়ে ফেরার কথা বলেছে, তিনিও কি শেষে হতোদ্যম? প্রশ্ন শুনেই যেন উজ্জীবিত লোপামুদ্রা। তাঁর দাবি, ‘‘এর পরেও আমি সবাইকে মন দিয়ে গাইতেই বলব। বলব, গান গাওয়া তো রাজনীতি নয়, যে ক্ষমতা দখল করবে! সবে তো শুরু। গোটা জীবন পড়ে আছে। অনেক দিন গাইতে হবে, তাই না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy