মোহিত
ছোটবেলা থেকেই ছেলের হিরো হওয়ার শখ। ছেলের এহেন শখকে প্রশ্রয় দিতে গররাজি বাবা। তবে ছেলের মুম্বই পাড়ি দেওয়ায় আপত্তি করেননি। শর্ত ছিল ছ’মাস। তার মধ্যে কোথাও সুযোগ না পেলে ফেরত আসতে হবে দিল্লি। ‘‘ভাগ্যিস তিন মাসের মধ্যে ‘মিলে জব হাম তুম’ সিরিয়ালে সুযোগ পেয়েছিলাম। না হলে বাবার ব্যবসায় বসতে হতো,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন মোহিত সেহগল।
দিল্লি আর ফিরে যেতে হয়নি হিন্দি সিরিয়ালের জনপ্রিয় এই তারকাকে। ‘‘টাকা বাবার ব্যবসাতেও ছিল। কিন্তু খ্যাতিটা পেতাম না,’’ বলেন মোহিত। টিভির কম বেশি বারোটা প্রজেক্টের সঙ্গে নিজের নাম জুড়ে ফেলেছেন। সদ্য যোগ দিয়েছেন ‘লভ কা হ্যায় ইন্তেজার’ ধারাবাহিকে। কিন্তু ন’বছর মুম্বই থেকেও ছবির তালিকায় মাত্র দুটো নাম? ‘‘দেখুন, সিনেমার সেকেন্ড লিডের চেয়ে আমি টিভিতে বেশি রোজগার করি। আর টিভিটা তো একটা বিশাল বড় প্ল্যাটফর্ম। যত লোক সিনেমা দেখতে যান, তার চেয়ে অনেক বেশি লোক সিরিয়াল দেখেন। ধারাবাহিকে অভিনয় করে আমি অনেক বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যেতে পারছি,’’ সটান উত্তর।
বলিউডে কাজ করা নিয়ে অবশ্য তিক্ত অভিজ্ঞতা মোহিতের। দিল্লিতে তখন পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো থিয়েটারে অভিনয় করছেন। সুযোগ এল ‘দিল্লি হাইটস’ ছবিতে অভিনয় করার। ছোট চরিত্র হলেও অভিনয় করে বেশ তৃপ্তি পেয়েছিলেন। তার পর সুযোগ এল হৃতিক রোশনের ‘লক্ষ্য’ সিনেমায়। রাজি না হওয়ার কোনও কারণ ছিল না। কিন্তু তিক্ততার শুরু শ্যুটিংয়ের প্রথম দিন থেকে। অনেক চেয়েও কোনও ডায়লগ পেলেন না। ছ’দিন ধরে ব্যাকগ্রাউন্ডে হাঁটিয়ে বলা হয় এটাই তাঁর রোল। ‘‘তখনই ঠিক করেছিলাম, এমন অপমান আর সহ্য করব না। আগে চরিত্র বুঝব, তার পর সই করব,’’ ফোনের ওপারে গলা বেশ ধরে এল।
তত দিনে অবশ্য অভিনয়ের ভূত ভাল করে মাথায় চড়ে বসেছে। ব্যারি জোনসের কাছে অভিনয়ের তালিম নিয়েছেন। কিন্তু একমাত্র ছেলেকে বাবা কিছুতেই দিল্লি ছাড়া করতে চান না। তাই ছ’মাসের সময় দেওয়া। ‘‘বাবার কাছ থেকে একটুও সাহায্য নিইনি। চারজন বন্ধু ছাড়া কাউকে চিনতাম না মুম্বইয়ে। ওদের সঙ্গেই এক রুমের একটা ফ্ল্যাটে থাকতাম। স্টুডিয়োগুলো কোথায় সেটা তো জানতাম না। তাই শাহরুখের বাড়ি, অমিতাভ বচ্চনের বাড়ির সামনে গিয়ে বসে থাকতাম। যদি সুযোগ আসে,’’ বলছিলেন তিনি। ভাগ্যক্রমে সুযোগ এল। মন্নতের সামনে হঠাৎ একদিন দেখা হয় এক কাস্টিং ডিরেক্টরের সঙ্গে। সে দিনই লুক টেস্ট। আর দিল্লি ফিরতে হল না।
‘মিলে জব হাম তুম’-এর সেটেই আলাপ শানায়া ইরানির সঙ্গে। প্রথম দর্শনেই প্রেম এবং মিডিয়াকে লুকিয়ে গোয়ায় বিয়ে। ‘‘আমরা লুকোতে চাইনি। কিন্তু আমাদের নিয়ে এত আগ্রহের চাপটা আর নিতে পারছিলাম না।’’ বিয়ের পর সমীকরণ অবশ্য একটু বদলে গিয়েছে, স্বীকার করলেন নিজেই। ‘‘বিয়ের পর ছেলেদের একটু বেশি বেশি ‘সরি’ বলতে হয়, সেটা বুঝলাম,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন মোহিত।
ছোটবেলায় দেখা হিরো হওয়ার স্বপ্ন সফল। জনপ্রিয় হওয়ার বাসনাও। ‘‘তবে বেড়াতে যাওয়ার সময় কমে গিয়েছে।’’ বলছিলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলতে বরুণ সোবতি। ‘‘তবে কোনও রেষারেষি নেই। আমরা তো দিব্যি একসঙ্গে আড্ডা মারি। দুই হিরোর মধ্যে রেষারেষি সিনেমায় হতে পারে, ছোট পরদায় ওটা দেখতে পাবেন না,’’ বলেন মোহিত সেহগল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy