পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো এত বড় ইভেন্ট সেরা পাঁচে শেষ করলেন। প্রথম এই বিশ্বাসটা কবে এল যে, মেজরেও আমি ভাল করতে পারি?
দেখুন, গত বছরের কথা বলছি।
একটা প্র্যাকটিস সেশনে অর্জুন অটওয়াল প্রথম আমাকে বলল যে, মেজরেও আমি ভাল পারফর্ম করার ক্ষমতা রাখি। পরে আর এক সতীর্থ ড্যানিয়েল চোপড়াও একই কথা বলল। তখন থেকেই কনফিডেন্সটা বেড়ে গিয়েছিল। মনে হল ওরা বলছে যখন, নিশ্চয়ই আমার মধ্যে কিছু একটা দেখেছে।
অনির্বাণের সাফল্য নিয়ে এখন সবাই চর্চা করছে। কিন্তু সাফল্যের নেপথ্যে থাকা যে-অনির্বাণকে কেউ জানে না, তাঁকে নিয়ে যদি কিছু বলেন।
কী বলব বলুন তো? মানে কোথা থেকে শুরু করব? যে-অনির্বাণ লাহিড়ীকে কেউ জানে না, সে প্রতিটা ইভেন্ট চলাকালীন ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী ডিনার খায়। একটাও ওয়ার্কআউট যেমন মিস করে না, ফুড সাপ্লিমেন্টগুলোও সময়মতো নিয়ে নেয়। একটা সহজ স্ট্রোক মিস হয়ে গেলেও মাথাটা ঠান্ডা রাখে। আর সেই অনির্বাণ লাহিড়ীকে যিনি ম্যানেজ করেন সেই ভদ্রমহিলার নাম ঈপ্সা জামওয়াল। আমার স্ত্রী। ঈপ্সা সব কিছু এ ভাবে সামলে রেখেছে বলেই আমি শুধুমাত্র গল্ফেই কনসেনট্রেট করতে পারি। অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে হয় না। শি ইজ ভেরি মাচ আ পার্ট অব মাই টিম।
‘টিম অনির্বাণ’ কাদের নিয়ে তৈরি?
আমার কোচ বিজয় দিভেচা, ক্যাডি রাজীব শর্মা, ম্যানেজার নীরজ সারিন, আর ওই যে বললাম আমার স্ত্রী। সঙ্গে বাবা-মাও। ব্রিটিশ ওপেনে আমি পরিবারকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম একটাই কারণে। চাইছিলাম আমার সাফল্যটাকে ওরাও শেয়ার করে নিক।
দু’বছর আগে কলকাতায় যখন ম্যাকলয়েড রাসেল চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে এলেন, দেখেছিলাম দিব্যি একটার পর একটা ফুচকা খেয়ে চলেছেন। নিয়ম ভাঙা তা হলে মাঝে মধ্যে চলে?
সুযোগ পেলে ফুচকা খাব না তা আবার হয় নাকি! তা ছাড়া একটা ক্যালেন্ডার দেখুন। আমাকে বছরে ২৬০ দিনেরও বেশি বাইরে কাটাতে হয়। তাই সুযোগ পেলে পছন্দের খাবারটা ছাড়ি না। ঘরের খাবারের মধ্যে ডাল-রুটি খুব পছন্দের। কিন্তু সারা বছর সেই সুযোগ আর হয় কোথায়? ভারতীয় খাবারের অপশন না থাকলে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে জাপানিজ খেতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন আপনার সবচেয়ে প্লাস পয়েন্ট হল আপনি অনেক লম্বা ড্রাইভ মারতে পারেন। আপনার উচ্চতা বা চেহারা দেখে তো মনে হয় না, প্রতিটা ড্রাইভ ৩০০ গজ পেরিয়ে যাবে!
ছোটবেলা থেকে গল্ফ খেলার সময় মনে হত, বলটা আরও জোরে কী ভাবে মারা যায়। ধীরে ধীরে এই স্কিলটাকে রপ্ত করেছি। আমেরিকান বা ইউরোপিয়ানদের মতো আমরা তো ন্যাচারাল অ্যাথলিট নই। আর উচ্চতাও গড়পড়তা কম। তাই লম্বা মারার জন্য স্কিলটা রপ্ত করতে হয়েছে। মডার্ন ডে গল্ফে আপনাকে কিন্তু লম্বা মারতেই হবে। আমেরিকায় গল্ফ কোর্সগুলো তো অনেক বড়। ওখানে সফল হতে গেলে ড্রাইভগুলো ৩০০ থেকে ৩২৫ গজ না মারলে হবে না।
প্রতিটা টুর্নামেন্ট যখন খেলতে নামেন তখন আপনার পোশাক কী হবে, এ ব্যাপারটা নিয়ে কতটা সময় দেন?
স্টাইল স্টেটমেন্টটা পারফর্ম্যান্সের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আমাকে যারা ফলো করেছে তারা এটাও দেখেছে আমি কোন দেশের গল্ফার। কোর্সে আন্তর্জাতিক ইভেন্টে নামলে আমি দেশের অ্যাম্বাসেডর, তাই কোন পোশাক পরছি, কী ভাবে নিজেকে ক্যারি করছি সেগুলো খুব ইম্পর্ট্যান্ট। ইভেন্ট চলাকালীন বলতে পারেন আমি এ সব নিয়ে ভাবনাচিন্তা করি।
সুযোগ পেলেই বই পড়েন শুনেছি। কোন ধরনের বই পড়তে ভাল লাগে?
আমার মা ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপিকা। ফলে ছোটবেলা থেকে বই পড়ার একটা অভ্যেস তো ছিলই। তবে গল্ফ খেলার মাঝে সময় পেলে আমার পছন্দ ‘ইজি রিডিং’। বেশি চাপ নিলে হবে না। সহজেই পড়ে নেওয়া যায় এ রকম থ্রিলার আমায় টানে। পছন্দের লেখক বলতে পারেন ড্যান ব্রাউন, জেফ্রি আর্চার। বই পডার সঙ্গে সুযোগ পেলে মোবাইলে ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ড আপ কমেডি সিরিজও ডাউনলোড করে নিই। ভাইরাল ফিভার, এআইবি যেটা পাই দেখে নিই। মনটাকে হাল্কা রাখাটা জরুরি।
আগামী বছর রিও অলিম্পিকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা আপনার প্রায় পাকা। মানসিক ভাবে প্রস্তুতিটা শুরু করে দিয়েছেন?
আপাতত নজরে রাখছি পিজিএ ট্যুর কাপ ও প্রেসিডেন্টস কাপের দিকে। রেস্ট অব দ্য ওয়ার্ল্ড দলের হয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টস কাপে খেলার সুযোগ পাওয়া গর্বের। তবে অলিম্পিক নিয়ে কে না ভাবে! ছ’মাস বাকি থাকতে প্রস্তুতি শুরু করব। রিও-তে যে কোর্সে খেলা হবে সেখানকার ঘাস কেমন হবে জানতে হবে। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আগের থেকেই ট্রেনিং প্ল্যান থেকে ডায়েট চার্ট— সব ঠিক করতে হবে। পরিকল্পনা মতো এগোতে পারলে অলিম্পিকে সাফল্য অসম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy