Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
cinema

Tollywood: জয়া-মিথিলা-বাঁধন পরপর কাজ পাচ্ছেন টলিউডে, কতটা চাপ বাড়ল নুসরত-মিমিদের

শিল্পীদের যাতায়াত বরাবরই ছিল। তাতে প্রতিযোগিতা কতটা বাড়ল?

মিথিলা, জয়া ও বাঁধন

মিথিলা, জয়া ও বাঁধন

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৫৫
Share: Save:

সব ইন্ডাস্ট্রিরই নির্দিষ্ট কিছু শব্দবন্ধ থাকে। বিনোদন জগতের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের জবানিতে বারবারই ‘পয়লা নম্বর দখলের লড়াই’, ‘জোর প্রতিযোগিতা’ এ জাতীয় শব্দবন্ধ উঠে আসে। অন্য দিকে অভিনেতারাও আউড়ে যান— ‘প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নই’, ‘নিজের কাজেই ফোকাস করি’। অথচ সকলেই জানেন, প্রতিযোগিতা একটা আছে। এটা এমন একটা দুষ্টচক্র, যার থেকে নিস্তার নেই।

প্রতিযোগিতা নির্ভর করে ইন্ডাস্ট্রির পরিধির উপরে। বাংলা সিনেমার ক্ষেত্র ছোট। নারীকেন্দ্রিক ছবির সংখ্যা কম, বলিষ্ঠ অভিনেত্রী অনেক। স্বাভাবিক ভাবেই কাজের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, পরিস্থিতি, পিআর সব কিছুর একটা লড়াই চলতে থাকে। এর মধ্যে ও পার বাংলার বেশ কিছু অভিনেত্রী টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। প্রকাশ্যে না বললেও তাঁদের নিয়ে টলিউডের অনেক অভিনেত্রীর ক্ষোভের কথা অজানা নয়।

জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী, যিনি টলিউডে পরপর কাজ করছেন অনেক বছর ধরেই। ‘আবর্ত’ দিয়ে শুরু হয়েছিল। তার পর ‘রাজকাহিনী’, ‘বিসর্জন’, ‘বিজয়া’, ‘কণ্ঠ’, ‘বিনিসুতোয়’... জয়ার গোটা তিনেক ছবি এখনও মুক্তির অপেক্ষায়। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ওয়েব সিরিজ় ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’তে আজমেরী হক বাঁধনের কাজ প্রশংসিত হয়েছে। তাঁকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন এখানকার অনেক পরিচালকই। রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভন’এ রয়েছেন ও পার বাংলার আর এক অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা।

এই তিন নায়িকা যে ঘরানার ছবিতে কাজ করছেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহানেরাও অন্য ধারার ছবির দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নায়িকার ক্ষোভ, ‘‘এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা এখানকার যে কেউ করতে পারত।’’

জয়া অবশ্য এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। তাঁর মতে, কাজের সুযোগ সকলেরই আছে। আনন্দ প্লাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা তো ভালই। আমার মতে শিল্পের কোনও সীমারেখা থাকা উচিত নয়।’’

শিল্পের আদানপ্রদানের উপরে জোর দিলেন মিথিলাও। ‘‘কেউ কারও কাজ, জায়গা কেড়ে নিতে পারে বলে মনে হয় না। সকলেই নিজের যোগ্যতা দিয়ে কাজ পাচ্ছেন। আমি বৈবাহিক সূত্রে কলকাতায় থাকছি, তাই এখানেই কাজ করছি এখন। তবে আমি এখানে সদ্য কাজ শুরু করেছি। আমাকে বোধহয় কারও প্রতিযোগী হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না,’’ বলছেন মিথিলা। অভিনেত্রী মনে করিয়ে দিলেন, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশের প্রজেক্ট ‘কমান্ডো’তে কাজ করেছেন দেব। আবার এ পারে এসে একাধিক নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বাংলাদেশের নুসরত ফারিয়া। অভিনেতারা অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়ে কাজ করবেন এটা স্বাভাবিক। পাওলি, স্বস্তিকারা যেমন বলিউডে নিয়মিত কাজ করছেন। বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগও বেশি। এ পার বাংলার অভিনেতারা বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করলেও, তা সংখ্যায় কম। বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করেছেন এমন এক নায়িকা বললেন, ‘‘এখানে বাংলাদেশের শিল্পীরা যত সুযোগ পান, সেই তুলনায় ও পার বাংলায় আমাদের কাজের সুযোগ বেশ কম।’’

বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন মনে করেন, এই চর্চাগুলো অভিনেত্রীদের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করে। ‘‘অনেকে বলছেন, বাংলাদেশ থেকে অভিনেত্রীরা এসে কাজ করায় টলিউডের কিছু অভিনেত্রীর মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে আমাদের সমাজ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে দেয়। বিশেষ করে মহিলাদের উপরেই বেশি চাপ তৈরি করা হয়। কেন এই চাপগুলো আমাদের নিতে হবে? এগুলো এড়িয়ে সদর্থক দিকগুলো ভাবলে, সকলেরই ভাল হবে। সকলে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবেন। কথাটা কলকাতা-বাংলাদেশ সব ইন্ডাস্ট্রির নিরিখেই বলছি।’’

প্রতিযোগিতা ছিল, থাকবেও। তবে প্রতিভাই যে শেষ কথা বলবে, দ্বিমত নেই তা নিয়েও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE