Aamir-Kiran: ৩ বছর লিভ ইনের পর বিয়ে, ১৫ বছরের দাম্পত্যে ইতি টানলেন আমির-কিরণ
ধীরে ধীরে আমিরের পছন্দের তালিকায় স্ত্রী রিনাকেও ছাপিয়ে যান কিরণ।
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ০৯:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
কিরণ রাও এবং আমির খানের জুটিকে বলা হত বলিউডের অন্যতম পারফেক্ট জুটি। ১৫ বছর একসঙ্গে সংসার করেছেন তাঁরা। কিরণ নাকি ঘর এবং বাইরে দুটোই দারুণ ভাবে পরিচালনা করেন, আর এটাই তাঁদের সম্পর্কের চাবিকাঠি। কিন্তু এই জুটিই এ বার সকলকে অবাক করে নিজেদের বিচ্ছেদ ঘোষণা করল।
০২২০
৩ জুলাই ২০২১ নেটমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে তাঁরা দাম্পত্যে ইতি টানার কথা জানালেন সমস্ত অনুরাগীদের। ওই পোস্টে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিচ্ছেদ হলেও তাঁরা পরিবারের মতোই থাকবেন। ছেলে আজাদকে দু'জনেই বড় করে তুলবেন। নিজেদের সংস্থার জন্যও তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন। তবে কী কারণে তাঁদের এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত তা খোলসা করেননি কেউ।
০৩২০
আমিরের জীবনে কিরণের প্রবেশও ছিল তাঁদের এই বিচ্ছেদ ঘোষণার মতোই বিস্ময়কর। আচমকাই কিরণ রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেছিলেন আমির। তখন তাঁর প্রথম স্ত্রী রিনার সঙ্গে বিচ্ছেদও হয়েছিল দীর্ঘ দাম্পত্যের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার পর। তখনও বিচ্ছেদ ঘিরে আমির-রিনার মধ্যে কোনওরকম কাদা ছোঁড়াছুড়ি হয়নি। কী ভাবে আমিরের জীবনের কিরণের প্রবেশ হয়েছিল?
০৪২০
প্রযোজক, পরিচালক এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার কিরণ এক সময় আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনার সহকারী হিসাবেও কাজ করেছেন। ধীরে ধীরে আমিরের পছন্দের তালিকায় স্ত্রী রিনাকেও ছাপিয়ে যান কিরণ।
০৫২০
১৯৭৩ সালে বেঙ্গালুরুতে জন্ম কিরণের। হায়দরাবাদের এক রাজ পরিবারের মেয়ে কিরণ। কিরণ আর অদিতি রাও হায়দারি সম্পর্কে তুতো বোন। কিরণের ঠাকুরদা এবং অদিতির দাদু জে রামেশ্বর রাও ছিলেন হায়দরাবাদের ওয়ানাপার্থির রাজা। ওয়ানাপার্থি এখন তেলঙ্গানার একটি জেলা।
০৬২০
বেঙ্গালুরুতে জন্ম হলেও কিরণের ছোটবেলা কেটেছে কলকাতায়। ১৯৯২ সালে মা-বাবার সঙ্গে কলকাতা ছেড়ে মুম্বই চলে যান তিনি। ১৯৯৫ সালে সোফিয়া কলেজ ফর ওম্যান থেকে খাদ্য বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক হন। তার পর দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
০৭২০
কিরণ পরিচালক হতে চেয়েছিলেন। তাই পড়াশোনা শেষ করে ফের মুম্বই চলে আসেন। এক সময় আমিরের স্ত্রী রিনার সহযোগী হিসাবেও কাজ করেছিলেন তিনি।
০৮২০
মু্ম্বই এসে প্রথমেই কিরণ নামজাদা পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কাজ পাওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁকে কেউই পাত্তা দেননি। টুকটাক সহ-পরিচালকের কাজ করে নিজের প্রয়োজন মেটাচ্ছিলেন কিরণ।
০৯২০
এক সিনিয়র মারফত কিরণ খবর পান, আশুতোষ গোয়ারিকর একটি ছবি বানাচ্ছেন এবং তার জন্য সহ-পরিচালকের প্রয়োজন। কিরণ আর দেরি করেননি। পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেন এবং কাজও পেয়ে যান।
১০২০
ওই ছবিটি ছিল ‘লগান’। মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেন কিরণ। এই ছবির সমস্ত চরিত্রের মেকআপ, পোশাক, কার কবে শ্যুটিং রয়েছে, কাকে কোন সময় শ্যুটিং স্পটে আসতে হবে সমস্তটাই দেখার দায়িত্ব ছিল কিরণের উপর।
১১২০
কিরণ তাঁর দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছিলেন। কিরণের কাজ ভাল লেগেছিল পরিচালক আশুতোষের। ভাল লেগেছিল আমির খানেরও। এই ছবির সঙ্গে আমিরের তত্কালীন স্ত্রী রিনাও যুক্ত ছিলেন। কিরণকে পছন্দ করেছিলেন তিনিও।
১২২০
সেই প্রথম আমির-কিরণের আলাপ। খুব বেশি কথা হতো না তখনও। কাজের বাইরে কথা বলার মতো সময়ও ছিল না দু’জনের।
১৩২০
কিরণের কাজ দেখে খুশি হয়ে পরিচালক আশুতোষ তাঁকে কাজে রেখে দেন। আশুতোষের সঙ্গেই কাজ করছিলেন কিরণ। পাশাপাশি আমিরের স্ত্রীর রিনারও কাজ দেখাশোনা করছিলেন তিনি।
১৪২০
আশুতোষের একটি ছবিতে ফের আমির অভিনয় করেন এবং দ্বিতীয় বার কিরণের সঙ্গে কথাবার্তা হয় তাঁর।
১৫২০
সে সময় আমির ব্যক্তিগত জীবনে খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। রিনার সঙ্গে ১৪ বছরের দাম্পত্যের অবসান ঘটেছিল।
১৬২০
স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে ছেড়ে থাকায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন আমির। এই সময়ে কিরণকে পাশে পেয়েছিলেন তিনি।
১৭২০
আমিরের ব্যক্তিগত জীবনের টানাপড়েন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অচেতন কিরণ একটি কাজ সম্পর্কে কথা বলার জন্য তাঁকে ফোন করেছিলেন। শোনা যায় সেই প্রথম কাজের বাইরে কিরণের সঙ্গে অনেক কথা বলেছিলেন আমির।
১৮২০
সেই প্রথম কিরণকে একটু অন্য ভাবে দেখেছিলেন আমির। কিরণের সঙ্গে কথা বলে ভাল লেগেছিল তাঁর। তার পর থেকেই নিয়মিত তাঁর সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন আমির।
১৯২০
আমিরের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসতেন কিরণও। খুব তাড়াতাড়িই তাঁরা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন। লিভ ইন করতে শুরু করেন তাঁরা।
২০২০
৩ বছর এ ভাবে থাকার পর ২০০৫ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। আমির-কিরণের একটি ছেলে রয়েছে। নাম আজাদ। ২০১১ সালে সারোগেসির মাধ্যমে আজাদের জন্ম দেন কিরণ। সম্প্রতি ডিসেম্বরে ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবন উদযাপনও করেছেন তাঁরা।