Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Raj Chakraborty

Habji Gabji: বুকে কাঁপন ধরাবে রাজের ‘হাবজি গাবজি’, পরম পাওয়া ওশ, স্যমন্তকদ্যুতি

জ্বলন্ত সমস্যাকে থ্রিলারে রূপ দেওয়া সহজ কথা নয়! সেটাই করে দেখিয়েছেন রাজ চক্রবর্তী। পরমব্রত, শুভশ্রী, ওশো, স্যমন্তকদ্যুতি অনবদ্য।

রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘হাবজি গাবজি’।

রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘হাবজি গাবজি’।

সোহিনী সেনগুপ্ত
সোহিনী সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২২ ২০:৫৮
Share: Save:

শুক্রবার‘হাবজি গাবজি’দেখে চমকে গিয়েছি। এমন অনেক ছবি হয় যার পরিচালনা হয়তো খুবই ভাল। যেমন, ‘আরআরআর’। কিন্তু বিষয় ততও জোরালো নয়। অন্তত আমার চোখে। কিছু ছবিতে আবার বিষয় খুবই জোরালো। কিন্তু অভিনেতাদের অভিনয় কমজোরি। একটি ছবিতে যদি বিষয়, পরিচালনা আর অভিনয় এক সুরে বাঁধা থাকে তা হলেই সেটি চমকে দেয়। রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবিতে এই তিন বিষয়ের নিখুঁত ত্রিবেণী সঙ্গম।

প্রথমেই আসি বিষয়ের কথায়। এই মুহূর্তে সাম্প্রতিকতম জ্বলন্ত ইস্যু মোবাইল এবং অনলাইন গেমে আসক্তি। সব বয়সের মানুষ এই জালে বন্দি। সেই বিষয় নিয়ে রাজের ছবি। তাকে রহস্য-রোমাঞ্চে মুড়ে পরিবেশন করেছেন পরিচালক। এবং ছবির শেষ দৃশ্য পর্যন্ত সেই টানটান ভাব পরিচালক ধরে রেখেছেন। আমি তো শুরু থেকে শেষ সজাগ হয়ে থেকেছি। দ্বিতীয় পর্ব অভিনয়। কাকে ছেড়ে কার নাম নেব? শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় আমার খুবই প্রিয়। ‘পরিণীতা’য় এক ভাবে ওঁকে দেখেছেন সবাই। ‘হাবজি গাবজি’-তে সেই শুভশ্রীরই ভিন্ন রূপ। বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা সমান্তরাল ছবিতেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তাল মিলিয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও অনবদ্য। তবে ছবির পরম সম্পদ ওশ মল্লিক আর সম্যন্তদ্যুতি মৈত্র। এরা দু’য়ে মিলে পরম-শুভর পর্দার সন্তান ‘টিপু’।

শুভশ্রীর মতোই রাজও নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে এগোচ্ছেন। আমার বরাবরই ওঁর নিটোল গল্প বলার ধরন ভাল লাগে। সেটা ‘বোঝে না সে বোঝে না’-ই হোক বা ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’।খুব সহজ করে ভারী কথা বলতে পারেন রাজ।এই ছবিও সেই পথেই হেঁটেছে। আজকের প্রজন্ম ভয়াবহ ভাবে মোবাইলে আটকে গিয়েছে। এমন ভয়ঙ্কর কথাও সাংসারিক গল্পের মধ্যে দিয়ে দেখিয়ে দিলেন রাজ। দর্শক ছবি দেখে জলের মতো বুঝতে পারবেন সমস্যার গতিপ্রকৃতি এবং তার সমাধান। এখন একটা ঘরে ঢুকলে দেখা যায় সবার মাথা নীচু। ছোট থেকে বড় মোবাইলে ঝুঁকে। এই দৃশ্যই দেখা যাবে ছবিতে। টিপু যখন ভার্চুয়াল দুনিয়ায় যাবে সেই অংশের ক্যামেরা ট্রিটেমেন্ট আলাদা। সেই দৃশ্যগুলোর রং আলাদা। সব মিলিয়ে আদ্যোপান্ত ঝকঝকে। ভেবেই ছিলাম ভাল হবে।তবে এত ভাল হবে সেটা বুঝিনি।

ফেসবুক এখন ক্ষোভ উগরে দেওয়ার নিরাপদ উপায়। সুন্দর ছবি পোস্ট করে নিজেকে মোহময়ী দেখানোর উপায়। মোবাইল সেই অলীক দুনিয়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এ দিকে সারা ক্ষণ ঘাড় গুঁজে দেখতে দেখতে সবার ঘাড়-মাথা ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সব বয়সের মানুষ ডুবে এই নেশায়। তবু যেন নিস্তার নেই। ছবিটিতে টিপুর পাশাপাশি টিপুর মা-বাবাও একই সমস্যায় আক্রান্ত। এমনকী চিকিৎসকও!এই ছবি যেন আরও বেশি করে বুঝিয়ে দিল মোবাইল এখন সবচেয়ে বড় মৃত্যুফাঁদ।ছবির একটি দৃশ্য খুব মনে পড়ছে, বাবা-মা ছেলেকে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছেন।ছেলে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছে না। ও দিকে তার মন নেই।মনে হল সত্যিই তো! শিশুরা প্রকৃতি দেখে না। মোবাইলের টাওয়ার খোঁজে!

সব শেষে বলব, এক কথায় ‘হাবজি গাবজি’ ভয়াল সুন্দর। ছবির বেশ কিছু দৃশ্য বুকে কাঁপন ধরাবে। কিছু দৃশ্য দেখে হাসিও পাবে দর্শকদের। কিন্তু সমস্যাকে অস্বীকার করা বা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না কোনও মতেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE