ফরওয়ার্ড ব্লক দফতরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
ছবি ঘিরে বিতর্ক সামাল দিতে ফরওয়ার্ড ব্লক দফতরে ‘গুমনামী’ নিয়ে হাজির হলেন পরিচালক ও নির্মাতারা। ইতিহাসবিদ, গবেষকদের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁদের ব্যাখ্যা, ‘গুমনামী বাবা’ আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুই, এমন কোনও রায় ওই ছবিতে দেওয়া হয়নি। ছবির নামও ‘গুমনামী’ (যার অর্থ নিখোঁজ)। ‘বাবা’ নেই নামে। মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্ট ধরে ওই কাহিনি চিত্র তৈরি করা হয়েছে এবং ‘গুমনামী’ সফল হলে নেতাজির সঙ্গে রাশিয়াকে জড়িয়ে যে সব তত্ত্ব প্রচলিত আছে, তার উপরেও তাঁরা পৃথক একটি ছবি করতে চান।
মুক্তি পাওয়ার আগে কোনও দল বা সংগঠনের দফতরে ছবির ট্রেলর দেখিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন পরিচালক, এমন বিরল আসরই রবিবার বসেছিল হেমন্ত বসু ভবনে। প্রয়োজক সংস্থার নিয়ে আসা পর্দা এবং প্রজেক্টরেই দেখানো হয় ‘গুমনামী’র ট্রেলর। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নেতাজির জীবন বা অবদানকে অবমাননা করা কোনও ভাবেই এই ছবির উদ্দেশ্য নয়। কোনও একটা তত্ত্বই ঠিক, অন্যটা নয়— এমন কোনও রায়ও ছবিতে দেওয়া হয়নি। মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশনের সামনে যে তিনটি মূল প্রশ্ন ছিল, তাদের নথি ধরে আমরা সেগুলোই দেখাতে চেয়েছি।’’
ছবি মুক্তি পাবে ২ অক্টোবর। প্রথমে আপত্তি তুলে সেন্সর বোর্ডে চিঠি দিলেও ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, সৃজিতের বক্তব্যে আপত্তির কিছু নেই। ছবিতে কোথাও প্রতিবাদ করার মতো কিছু আছে কি না, তা নিয়ে কিছু বলার থাকলে দল যথাসময়ে বলবে। ফ ব-র দেবব্রত বিশ্বাস, জি দেবরাজনদের মতে, নেতাজির নাম নিয়ে বাণিজ্যিক কারণেই এই ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই আসরে না থাকলেও নেতাজি পরিবারের সুগত বসুরা অবশ্য ‘গুমনামী’র গোটা বিষয়টিই ‘আজগুবি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিহাসবিদ সুগতবাবুর মতে, বই লিখে বা ছবি করে বিতর্ক তৈরি না করে দেশের ইতিহাসে নেতাজির ভূমিকার দিকেই মন দেওয়া উচিত।
নেতাজির দৌহিত্রী জয়ন্তী বসু রক্ষিত। গুমনামির পরিচালকের সঙ্গে আলোচনার আসরে।
সৃজিত বলেছেন, তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনা, রাশিয়ায় নেতাজির মৃত্যু এবং ফৈজাবাদে দেখা যাওয়া ‘গুমনামী বাবা’ বা ‘ভগবানজি’ আসলে নেতাজি কি না—এই তিন বিষয়কেই ছবিতে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। মুখোপাধ্যায় কমিশনের আনুষ্ঠানিক নথিতে যা নেই, তেমন কিছু তাঁরা সেলুলয়েডে রাখেননি বলেই সৃজিতের দাবি। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা কিন্তু কাহিনি চিত্র। সব নথিপত্র, সব মতামত নিয়ে গবেষণাধর্মী ছবি করলে সেটা তথ্যচিত্র হত।’’
ইতিহাসবিদ এবং মুখোপাধ্যায় কমিশনে সাক্ষ্য দেওয়া পূরবী রায় প্রশ্ন করেন, রাশিয়ায় নেতাজির উপরে অত্যাচার হয়েছিল, এমন তথ্য ছবির নির্মাতারা কোথায় পেলেন? বিস্তর অনুসন্ধান করে কোনও আর্কাইভেই এমন কোনও তথ্য তো মেলেনি! সৃজিত জানান, দু’টি চরিত্রের সংলাপে ওই প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে শুধু। তেমন কিছু দেখানো হয়নি। নেতাজির দৌহিত্রী জয়ন্তী বসু রক্ষিত আবার বলেন, এমন কিছু কথা ‘গুমনামী বাবা’র কাছে পাওয়া চিঠিপত্রে ছিল, যা সত্যিই চাঞ্চল্যকর। নেতাজি কিছুতেই ‘গুমনামী বাবা’ হতে পারেন না, এটাই বা ধরে নেওয়া হবে কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy