Few unknown facts about famous villain Danny Denzongpa dgtl
Danny Denzongpa
ছিল না থাকার জায়গা, শিবাজি পার্ক বা জুহু বিচে রাত কাটত ডাক্তারি না পড়া বলিউডের এই ভিলেনের
শুধু সিনেমা দেখা নয়, নিজেকে পর্দার ওপারে দেখার অদম্য ইচ্ছেই তাঁকে নিয়ে যায় বলিউডি দুনিয়ায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ১০:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
আসল নাম থেরিং পিন্টসো ডেনজোংপা। অথচ এই নামে কেউ তাঁকে চেনেন না, যতটা চেনেন তাঁর ডাকনামে। বলিউডের গ্ল্যামারের ঝলকানি শরীরে পড়ার আগের গল্পটা একেবারেই এক জন স্ট্রাগলারের, যাঁর কিনা খাওয়া জোটে না, ঘুমের কোনও স্থায়ী জায়গা নেই। সাতের দশকে সিনে-দুনিয়া কাঁপানো অভিনেতা ‘ড্যানি’-র শুরুর সে সব দিন আজও নাড়া দিয়ে যায় তাঁকে।
০২১৩
১৯৪৮-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্যাংটকে এক বৌদ্ধ পরিবারে জন্ম ড্যানির। পড়াশোনার ভাল ছেলেটি প্রথমে নৈনিতালের বিড়লা বিদ্যামন্দির ও পরে দার্জিলিঙের সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পাস করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মূর্তি তৈরি, ছবি আঁকাতেও বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি।
০৩১৩
ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলা ও এনসিসি-র প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ড্যানি। হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের ভয় ধরানো এই ভিলেনের জীবনের লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া।
০৪১৩
আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগও জুটিয়ে ফেললেন পরীক্ষা দিয়ে। কিন্তু তত দিনে মাথায় চড়ে বসেছে হিন্দি সিনেমার নেশা। শুধু সিনেমা দেখা নয়, নিজেকে পর্দার ওপারে দেখার অদম্য ইচ্ছেও।
০৫১৩
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। শেষ মুহূর্তে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি না হয়ে পরীক্ষা দিলেন পুণে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায়। পড়া শেষে শুরু হল স্ট্রাগলও। হাতে টাকা-পয়সা নেই, এ দিকে মুম্বই শহরে নিজেক প্রমাণ করার লড়াই আর খিদে আছে পুরোদমে।
০৬১৩
থাকা-খাওয়ার জায়গা না মেলায় কখনও জুহু বিচ, কখনও বা শিবাজি পার্কের বেঞ্চে শুয়ে রাত কাটাতেন তিনি। সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা মোটেই ভাল ভাবে নিতেন না এই ‘উটকো ঝামেলা’। প্রায়ই রে রে করে যেতেন। তবু দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই জারি ছিল।
০৭১৩
পরে কাজের জগতে প্রবেশ করে সহঅভিনেত্রী জয়া বচ্চনের পরামর্শে নিজের বড় নাম ছেঁটে ডাকনাম ‘ড্যানি’ হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করলেন তিনি। অভ্যাস করেন কঠিন স্টান্ট ও শরীরচর্চা।
০৮১৩
জীবনের প্রথম ছবি ‘জরুরত’। ১৯৭১-ও শুটিং হলেও মুক্তি পায় ১৯৭২-এ। তবে ড্যানি-কে ফিল্মি দুনিয়ায় তত দিনে পরিচিত করে তুলেছে গুলজারের ‘মেরে আপনে’ (১৯৭১)। তবে এ ছবিতে পজিটিভ চরিত্র করলেও ১৯৭৩-এ বি আর চোপরার ‘ঢুন্ধ’ ড্যানির ভিলেন হয়ে ওঠার ক্ষমতার দৃষ্টান্ত রাখে।
০৯১৩
এর পর আর ড্যানিকে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ভয়াল ভিলেনের চরিত্রের ডাক পেয়েছেন বাস্তবে শান্ত স্বভাবের ড্যানি। ‘ইসকি মওত সোচনি পড়েগি’ বা ‘অগর অ্যায়সা হো তো অপনা খোপড়ি ফির জায়েগা অওর তুমহারা মুন্ডি কাট জায়েগা’-র মতো সংলাপ, সঙ্গে হাড়হিম করা অভিব্যক্তি— ড্যানি বলতেই এমন একটা ভাবনাই মাথায় আসে।
১০১৩
তবে কেবলই ভিলেন নয়। বেশ কিছু ছবিতে পার্শ্বচরিত্রাভিনেতার কাজও সুচারু ভাবে সারেন ড্যানি। ‘বন্দিশ’, ‘ফির ওহি রাত’, ‘ক্রান্তিবীর’, ‘পুকার’, ‘অগ্নিপথ’-এর মতো প্রায় দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সম্প্রতি ‘মনিকর্নিকা, দ্য কুইন অব ঝাঁসী’ বা টিভি শো ‘বায়োস্কোপওয়ালা’-তেও ড্যানির অভিনয় মনে দাগ কাটে।
১১১৩
অভিনয়ের পশাপাশি ক্যামেরার পিছনে গিয়েও দাঁড়ান ড্যানি। ২০০৫-এ পরিচালনা করেন ‘ফির ওহি রাত’ ছবিটি। কেবল দর্শকদের প্রশংসাই নয়, বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মানও কেরিয়ারে অর্জন করেছেন ড্যানি।
১২১৩
সেরা সহঅভিনেতা হিসাবে দু’বার পেয়েছেন সম্মান। বিভিন্ন বিভাগে মনোনীত হয়েছেন অংসখ্য বার। ২০০৩-এ ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানেও ভূষিত করেন।
১৩১৩
ড্যানির দুই সন্তান। ছেলে রিনঝিং ও মেয়ে পেমা। ছেলে রিনঝিংয়েরও চলচ্চিত্র জগতে হাতেখড়ি হয়েছে সদ্য। ‘স্কোয়াড’ নামে একটি ছবির শুটিংও শেষ করেছেন।