পার্সি পরিবারে জন্মেছিলেন মানিক। তাঁর পরিবার, ছোটবেলা এমনকি পরবর্তী জীবন সম্পর্কেও বিশেষ কিছু জানা নেই কারও। মায়ানগরীর কেউ কেউ অমিতাভ বচ্চনের স্টান্ট ডাবল হিসেবে চেনেন তাঁকে। দর্শক তাঁকে চেনেন কয়েকটি ছবির দৌলতে। কিন্তু চেহারা এবং স্ক্রিন প্রেজেন্সে নায়কদের টক্কর দেওয়ার রীতি মানিকের হাত ধরেই চালু হয়েছিল বলিউডে।
ছ’ফুটের বেশি লম্বা, স্বাস্থ্যবান মানিক স্টান্টম্যান হিসেবে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তী কালে কখনও খলনায়ক, কখনও বা খলনায়কের ডানহাত হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেন। তবে এর পাশাপাশি একাধিক ছবিতে পরিচালকের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি, যার মধ্যে অন্যতম হল আমির খান অভিনীত ‘দিওয়ানা মুঝসা নেহি,’ মিঠুন চক্রবর্তীর ‘জিন্দগানি’ এবং অনিল কপূরের ‘সাহেব’।
১৯৭৪ সালে ‘পাপ অউর পূণ্য’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে পা রাখেন মানিক ইরানি। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘কালিচরণ’, ‘ফরিস্তে’, ‘খলফ,’ ‘ফেইথ’, ‘মস্ত কলন্দর’, ‘ত্রিনেত্র’, ‘চোর পে মোর’, ‘হম সে না টকরানা’, ‘নাকা বন্দি’, ‘বাপ নম্বরি বেটা দশ নম্বরি,’ ‘তকদির কা তামাশা,’ ‘রোটি কি কীমত,’ ‘পুরানি হাভেলি’, ‘তুফান’, ‘ইনসাফ’, ‘দাদাগিরি’, ‘মর্দ’ এবং ‘মিস্টার নটবরলাল’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।
শুধু তাই নয়, ১৯৭৮ সালে যে ছবির হাত ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষ পৌঁছে যান অমিতাভ বচ্চন, সেই ‘ডন’ ছবিতে অমিতাভের স্টান্ট ডাবল ছিলেন মানিক। ছবিতে যত মারপিটের দৃশ্য ছিল, তাতে অমিতাভের বেশে আসলে মানিকই ছিলেন। ‘ডন’ ছবির মারপিটের দৃশ্যগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তার জন্য সমালোচকরা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন অমিতাভকে। কিন্তু মানিককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি বলে মনে করেন অনেকেই।
এর কয়েক বছর পর মানিকের মৃত্যু হয়। তবে ঠিক কবে তিনি মারা যান, তা আজও জানা যায়নি। তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। শোনা যায়, স্টান্ট করতে গিয়ে একটি ছবির সেটেই তাঁর মৃত্যু হয়। কেউ কেউ আবার বলেন, আত্মঘাতী হয়েছিলেন মানিক। মদ্যপানই তাঁকে শেষ করে দিয়েছে, এমন কথাও শোনা যায়। তবে নিশ্চিত ভাবে কিছুই জানা যায়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকের স্মৃতি থেকে যেমন মুছে গিয়েছেন মানিক, বলিউডও তাঁকে ভুলে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy