Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Death

চলে গেলেন অমলাশঙ্কর

গত বছর অমলাশঙ্করের একশোতম জন্মদিনে তাঁর বাড়ি সেজে উঠছিল উৎসবের আলোয়। 

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০২:৫৯
Share: Save:

গত মাসের ২৭ তারিখে তাঁর ১০১তম জন্মদিন ছিল। তার একমাসের মধ্যেই চলে গেলেন নৃত্যশিল্পী অমলাশঙ্কর। শুক্রবার ভোরে মারা যান শিল্পী। মেয়ে মমতাশঙ্করের কথায়, ‘‘রোজের মতোই বৃহস্পতিবার রাতেও আমার হাত ধরে ঘুমোতে গেলেন। পর দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মাকে ডাকার সময়ে টের পাই, উনি ঘুমের মধ্যেই চলে গিয়েছেন। এটুকুই সান্ত্বনা যে, মা খুব শান্তিতে গিয়েছেন।’’ শুক্রবারই শিল্পীর দাহকাজ সম্পন্ন হয়।

১৯১৯ সালের ২৭ জুন অবিভক্ত বাংলাদেশের যশোরে নন্দী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অমলা। মেয়ের শিল্পীসত্তার পরিচয় পেয়ে উদয়শঙ্করের কাছে নৃত্য প্রশিক্ষণ নিতে পাঠান অমলার বাবা। তাঁর কয়েক বছর পরে মাত্র ১৯ বছর বয়সে উদয়শঙ্করের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অমলা। দু’জনে মিলে জুটি বেঁধে দেশে-বিদেশে অজস্র শো করেছেন। পেয়েছেন অগণিত মানুষের ভালবাসা আর সম্মান। উদয়শঙ্কর পরিচালিত ছবি ‘কল্পনা’তে অমলা ছিলেন উমার চরিত্রে। সে ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল। অমলার বয়ানেই আছে, ‘‘সে বার আমিই ছিলাম কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেওয়া সর্বকনিষ্ঠ তারকা।’’ তখন শিল্পীর বয়স মাত্র ২৯ বছর।

উদয় আর অমলার দুই সন্তান, আনন্দশঙ্কর এবং মমতাশঙ্কর। কাছের লোক বলতে পুত্রবধূ তনুশ্রীশঙ্কর, নাতনি শ্রীনন্দা এবং নাতি রাতুল ও রাজিত। ১৯৯৯ সালে ছেলে আনন্দর মৃত্যুতে বড় আঘাত পেয়েছিলেন। অবশ্য তার আগে উদয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যে চিড় ধরাও বড় আঘাত ছিল অমলার কাছে। নাতি-নাতনিরা তাঁর ভারী আদরের ছিল। দিদার স্মৃতিতে রাতুল বলছিলেন, ‘‘দিদা আম খেতে খুব ভালবাসতেন। সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতেন। আমাদের পরিবারে এটা একটা নিয়মের মতো হয়ে গিয়েছিল যে, বছরের প্রথম আম দিদার কাছ থেকে খাব। দাদুর ছবির সামনে প্রথম আমটি রাখতেন দিদা। তার পরে বাড়ির বাকিদের দিতেন। এই বছরও তার অন্যথা হয়নি।’’ ঠাকুমার কাছ থেকেই টক খাওয়ার অভ্যেস পেয়েছেন শ্রীনন্দা। মুম্বই থাকার কারণে ঠাকুমার সঙ্গে শেষ দেখা হল না বলে মন খারাপ তাঁর। বলছিলেন, ‘‘আমচুর, আচার এই সব খেতে খুব ভালবাসতেন। টলি ক্লাবে নিয়ে গিয়ে আমাদের কন্টিনেন্টাল খাওয়াতেন। নিজেও বাড়িতে কন্টিনেন্টাল ফুড তৈরি করতেন। ঠাকুমার সঙ্গে বসে আমরা তাস, ক্যারম খেলতাম। সেই দিনগুলো মনে পড়ছে।’’ রাতুলের ছোটবেলার অনেকটাই অমলাশঙ্করের কাছে কেটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘মা-বাবাকে ট্রাভেল করতে হত। তখন দিদার সঙ্গেই থেকে যেতাম। অনেক বিষয়ে ওঁর জ্ঞান ছিল। খুব সহজ করে শেখাতে পারতেন। দিদার কাছ থেকেই মূল্যবোধের শিক্ষা পেয়েছি।’’ একই কথা মেয়ে মমতারও, ‘‘সততা আর আদর্শের উপরে মা গুরুত্ব দিতেন। বলতেন, নাচ তো হবে। কিন্তু আদর্শচ্যুত হয়ো না। সেই কথা মেনেই চলছি।’’

গত বছর অমলাশঙ্করের একশোতম জন্মদিনে তাঁর বাড়ি সেজে উঠছিল উৎসবের আলোয়।

এক বছরের মধ্যে সেই আলো ম্রিয়মাণ হয়ে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dancer Amala Shankar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy