মুক্তি পেতে চলেছে কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘ডাল বাটি চুরমা।’ ফাইল চিত্র।
১৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে তাঁর প্রযোজিত প্রথম ছবি। সিনেমার নাম ‘ডাল বাটি চুরমা।’ বাংলা ছবির জগতে সচরাচর নায়িকাদের প্রযোজক হিসাবে দেখা যায় না। ছবির মুক্তির আগে প্রযোজক কৌশানী মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি।
প্রশ্ন: বনি-কৌশানী জুটির প্রথম প্রযোজিত ছবি। আপনাকে কোন দিকটা সামলাতে হচ্ছে?
কৌশানী: দু’রকমের দায়িত্ব আমার কাঁধে। শুটিং চলাকালীন গুরুদায়িত্ব ছিল যে, সেটে উপস্থিত সকলের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না সেটার খেয়াল রাখা! সবার চাহিদা ঠিক মতো পূরণ হচ্ছে কি না, দেখার দায়িত্ব ছিল আমার। শুধু সেটই নয়, গানগুলো যেন ভাল হয়, সেই দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি আমি। হ্যাঁ, টাকাপয়সার বিষয়ে খুব বেশি গভীরে ঢুকিনি। তবে চেক আমার হাত দিয়েই দেওয়া হয়েছে। কারণ বাড়ির লক্ষ্মী হিসাবে এমনটাই রীতি আমাদের পরিবারে। এখন ছবির প্রচারের অনেকটাই আমি পরিকল্পনা করছি।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিকে বৈষম্যের কথা শোনা যায়। আপনি নায়িকার পাশাপাশি প্রযোজক হয়ে এ বিষয়ে কী ভেবেছেন?
কৌশানী: অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা কী করবে, তা নিয়ে সত্যিই আমি আত্মবিশ্বাসী নই। পারিশ্রমিক নিয়ে বৈষম্যটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি করে চোখে পড়ে। বলিউডে এই বৈষম্য থাকলেও, তাঁদের রোজগার এতটাই বেশি, তাই চোখে পড়ে না। তবে আমার প্রযোজনা সংস্থায় চেষ্টা করব, প্রত্যেকের প্রাপ্য পারিশ্রমিক যথাযথ দেওয়ার।
প্রশ্ন: আপনার নিজের আক্ষেপ হয়েছে কখনও ইন্ডাস্ট্রিতে এমন বৈষম্যের শিকার হওয়ার জন্য?
কৌশানী: হ্যাঁ, অবশ্যই হয়। এমন অনেক সময় হয়েছে, একটা ছবিতে আমার নায়কের তুলনায় অনেক বেশি অংশ আমার। আমায় অনেক বেশি দিন সময় দিতে হয়েছে। কিন্তু শেষে নায়ককেই বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে, আমায় নয়। আমি বনিকে অনেক বার প্রশ্ন করেছি। অনেক সময় বনির সঙ্গেই হয়তো ছবি করছি। ওর থেকে আমায় অনেক বেশি দিন সেই ছবির জন্য শুট করতে হয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে আমাকে ওর থেকে কম টাকাই দেওয়া হয়েছে। তখনই বনিকে আমি বলেছিলাম, কেন এমনটা হয়?
প্রশ্ন: এই কারণে আপনার সঙ্গে বনির ইগোর লড়াই হয়েছে?
কৌশানী: না, ওকে ইগো দেখিয়ে আমি দিনের শেষে কোনও লাভ করতে পারব বলে মনে হয় না। ও নিজে খেটে এই জায়গা তৈরি করেছে। বনি যদি কাউকে গিয়ে বলে, কৌশানীকে এত টাকা দাও, সেটা তো সম্ভব নয়। কৌশানী বললেই শুনছে না, বনি বললে কী ভাবে শুনবে। আসলে অভিনেতাদের হাতে কিছু নেই।
প্রশ্ন: প্রযোজক হওয়ার পর মানুষের মধ্যে কী বদল লক্ষ করলেন?
কৌশানী: সামনে তো অনেকেই বলছেন,খুব ভাল হয়েছে। সবাই লিখে পাঠাচ্ছেন ‘অল দ্য বেস্ট।’ শুনেছি পিছনে অনেকে বলছেন, ‘‘দেখব কত দিন চালাতে পারে। দেখব ছবিটা কী দাঁড়ায়!’’ এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয় ছবিটা দর্শকের ভাল লাগবে।
প্রশ্ন: প্রথম প্রযোজিত ছবি নিশ্চয়ই আপনার মনের কাছের। এখনও পর্যন্ত যে ছবিগুলোতে কাজ করেছেন, সবই কি ভাল লাগা থেকে? না কি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জমি শক্ত করার জন্য রাজি হয়েছিলেন?
কৌশানী: অন্যান্য ছবিগুলো আমায় ‘কৌশানী’ বানিয়েছে। সেগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ‘ডাল বাটি চুরমা’র জন্য অনুভূতিটা একদম অন্য রকম। অন্যান্য কাজের তুলনায় এই ছবি নিয়ে আমি একটু বেশি নার্ভাস।
প্রশ্ন: ছবিটা সকলের ভাল না-ও লাগতে পারে, সে বিষয়ে কি আপনি মানসিক ভাবে প্রস্তুত?
কৌশানী: হ্যাঁ, আমরা আসলে মন্দিরের ঘণ্টা, যে পারে এসে বাজিয়ে চলে যায়। পাবলিক ফিগার হওয়া মানেই অলিখিত ঘোষণা, যে যেমন খুশি কথা বলতে পারে। ট্রোল করতে পারে। আমরা এগুলো নিয়েই সংসার করি। নেতিবাচক মন্তব্য এখন আমি উপভোগ করি।
প্রশ্ন: নায়িকারা সাধারণত প্রধান চরিত্র ছাড়া অভিনয় করতে চান না। সেখানে ‘প্রজাপতি’ ছবিতে নতুন নায়িকাকে নিয়ে এত মাতামাতি হল। আপনি রাজি হলেন কেন?
কৌশানী: আমার গল্পটা পড়ে মনে হয়েছিল, এই ছবিটা দর্শকের মনে একটা অন্য জায়গা করে নেবে। তবে হ্যাঁ, আমি জানতাম না যে, পোস্টারে থাকব না। তাতেও আমার আক্ষেপ নেই। পোস্টারে মুখ না থাকলেও সবাই জানেন যে, এই ছবিতে কৌশানী আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy