সোনু
প্র: গত পাঁচ মাসে আপনার জীবন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। ঠিক কী ভেবে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন?
উ: লকডাউন শুরু হওয়ার পরে একটা জিনিস আমাকে খুব ভাবাচ্ছিল, যাঁরা আমাদের বাড়ি-ঘর বানান, তাঁরা নিজেরাই বাড়ি যেতে পারছেন না। আর বাড়ি পৌঁছনোর জন্য কী অমানুষিক কষ্টই না এঁদের করতে হচ্ছে। সেই সব ভাবনা থেকেই উদ্যোগ নিলাম। আমি ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে অভিনয়ে আসি। এই সব কাজে আমার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে প্রশাসনিক তরফে অনেক সাহায্য পেয়েছি। তাই এটা আমার একার কৃতিত্ব বলব না, সম্মিলিত প্রয়াস।
প্র: পরিবারের তরফে কী প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন? কারণ রাস্তায় নেমে সরাসরি কাজের মধ্যে অনেকটা ঝুঁকি থাকে।
উ: সকলেই চিন্তা করত। প্রথমে যখন এই কাজ শুরু করেছিলাম তখন বাড়ির বাইরে ১৬-১৭ ঘণ্টা থাকতাম। বাড়ির লোকেরা চিন্তা করছে বলে আমারও বাড়তি টেনশন হত। তাই বাড়ির বাকিদের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করলাম। ওদের বলতাম, ‘কাল থেকে আর যাব না।’ কিন্তু যেতে তো হতই। যতক্ষণ পর্যন্ত সব শ্রমিককে তাঁদের বাড়িতে পাঠাতে পারছিলাম, শান্তি পাচ্ছিলাম না।
প্র: আপনাকে ‘ফরিস্তা’, ‘সুপারম্যান’, ‘রিয়্যাল হিরো’— একাধিক উপাধি দেওয়া হয়েছে। আপনার বায়োপিক তৈরির কথা চলছে। এগুলো কতটা উপভোগ করছেন?
উ: গত পাঁচ মাসে করোনার জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, তা কল্পনার অতীত। এর মধ্যে আমি অনেক মানুষের সংস্পর্শে এসেছি, তাঁদের কষ্ট-দুঃখ খুব কাছ থেকে দেখেছি। বলতে পারেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে আমি জড়িয়ে গিয়েছি। সে সব কথা আমি কোথাও বলিনি। আমার সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা ছবি হতেই পারে। অনেকে স্ক্রিপ্টও পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো পড়ার সময় এখন নেই। প্রত্যেক দিন হেল্পলাইনে সাত লক্ষেরও বেশি কল আসে।
প্র: আপনার নামে লোকে ট্যাটু করাচ্ছেন, কেউ সন্তানের নাম রাখছেন, সোনু শাড়ি বেরিয়েছে... এই জনপ্রিয়তা অভিনয় জীবনে আপনি পাননি।
উ: সত্যি বলতে কী লজ্জা পাচ্ছি! এটা মা-বাবা এবং ভগবানের আশীর্বাদ ছাড়া হত না। তবে এ সব দেখে বুঝতে পারছি যে, আমি ঠিক রাস্তায় আছি। আমার অনুরাগীদের কাছে একটাই আবেদন, ঘরে বসে করোনাকে জয় করা যাবে না। বাইরে বেরিয়ে উপযুক্ত সতর্কতার সঙ্গে যদি কাউকে সাহায্য করতে পারেন, তা হলই আমি বেশি খুশি হব।
প্র: এক লক্ষ লোকের চাকরির বন্দোবস্ত করবেন বলেছেন। আপনার পরিকল্পনাটা বলবেন?
উ: আমার কাছে পৃথিবীটা এখন দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। প্রি-করোনা এবং আফটার করোনা। এই সময়টা আমাদের মানসিক ভাবে খুব শক্ত করে তুলছে যা আগামী দিনে কাজে আসবে। আমার কাছে রোজ হাজার হাজার মেসেজ আসে কারও স্কুলের ফি-এর টাকা নেই, কারও চাকরি চলে গিয়েছে। কিছু বড় সংস্থার সঙ্গে আমি টাই-আপ করছি, এই কাজটা আমি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য করতে চাই।
প্র: স্ট্রাগলের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে?
উ: নিশ্চয়ই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটতাম অডিশনের জন্য, ভাবতাম জগিং হয়ে যাচ্ছে (হাসি)! এখনও স্ট্রাগল করতে হচ্ছে, তবে ধরনটা বদলে গিয়েছে। যারা নতুন তাদের একটাই কথা বলব, সুযোগ আসতে সময় লাগবে, কিন্তু সেই সময় অবধি ধৈর্য রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy