‘খেলনা বাড়ি’ সিরিয়ালের খলনায়ক রণ ওরফে সায়ন্তন বাস্তব জীবনে কেমন? —ফাইল চিত্র।
বাংলা সিরিয়ালে বেশ কিছু খলনায়কের মধ্যে বর্তমানে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে সায়ন্তন সরকার। ইন্ডাস্ট্রিতে এখন তাঁর পরিচয় অবশ্য রণ নামে। ‘খেলনা বাড়ি’ সিরিয়ালে রণজিৎ লাহিড়ির চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। সিরিয়ালে মিতুল এবং ইন্দ্রর জীবন ওষ্ঠাগত করে তুলেছেন তিনি। তবে ক্যামেরার সামনে যাঁকে শুধুই দুষ্টুমি করতে দেখা যায়, বাস্তবে তিনি কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রশ্ন: ‘রণ’-কে দেখলেই তো সকলের মনে হয় এই কিছু চক্রান্ত করছে। বাস্তবে সায়ন্তন কেমন? বাস্তবেও কি দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় ঘোরে?
সায়ন্তন: আমায় এই সিরিয়ালে যেমনটা দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে পুরো অন্য মানুষ আমি। কখনও উচ্চস্বরে কথাই বলি না। শান্ত মানুষ। সুতরাং দুষ্টুবুদ্ধির তো কোনও প্রশ্নই আসে না। অবশ্য এটাই তো অভিনেতাদের কাছে চ্যালেঞ্জ যে, নিজে যেমনটা নই, তেমনটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা। আমায় সামনে থেকে দেখে অনেক দর্শক বলেন, ও মা তুমি আসলে এমন মানুষ! আমি শুনে হাসি।
প্রশ্ন: খল চরিত্রের প্রতি কি আপনি আলাদা কোনও টান অনুভব করেন?
সায়ন্তন: না। আমি আগে যে সিরিয়ালটি (মোম পালক) করেছিলাম সেখানে আদ্যোপান্ত একটি রোম্যান্টিক হিরোর চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। সেখানে সারা ক্ষণ আমি রোম্যান্সই করেছি। তাই আলাদা টান বলাটা ভুল হবে। তবে ছোটবেলা থেকে এত ইংরেজি ছবি দেখেছি, সেখানে অভিনেতারা নিজেদের নানা ভাবে ভাঙে। আমি শুধু সেটাই চেয়েছিলাম। তাই এই চরিত্রে রাজি হওয়া।
প্রশ্ন: অভিনয়কে পেশা হিসাবে নেওয়ার ইচ্ছে কবে হল?
সায়ন্তন: নিজের চেহারার গড়ন, উচ্চতা দেখে মডেলিং করার শখ হয়। অভিনয়ে আসা অবশ্য মায়ের প্রচেষ্টায়। ‘নান্দীকারে’ আমায় ভর্তি করানো হয়। ওরা অভিনয়ের ওয়ার্কশপ করায়। সেখান থেকেই প্রাথমিক ভাবে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিই আমি। সেখান থেকেই অভিনেতা হওয়ার যাত্রা শুরু।
প্রশ্ন: আপনার পড়াশোনা কি অভিনয় নিয়েই তা হলে?
সায়ন্তন: আমি ‘বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল’ স্কুলে পড়েছি। তার পর ইংরেজি অনার্স নিয়ে স্নাতক হই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পড়াশোনা করতে করতেই মডেলিং শুরু করি। তবে ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ, পরিবারের থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। কারণ অনেক সময়ই শুনি এ ক্ষেত্রে অনেকেই পরিবারের সমর্থন পান না।
প্রশ্ন: অভিনয় পেশা খানিকটা হলেও অনিশ্চিত, এই ভাল কাজ আছে তো এই নেই। সে ক্ষেত্রে সুরক্ষিত চাকরি করার কথা কখনও ভাবেননি?
সায়ন্তন: আমি চাকরিও করেছি। সে একটা লম্বা গল্প। ‘ঠিক যেন লভ স্টোরি’ নামের একটি সিরিয়ালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পাই। হিরোর বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। ট্র্যাকটা প্রায় এক মাস চলেছিল। তার পরেই হঠাৎ একটা চাকরির সুযোগ পাই। একটি প্রথম সারির বিমান সংস্থায় কেবিন ক্রু হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম। ট্রেনিং নেওয়ার জন্য কোম্পানি থেকে আমায় মুম্বই পাঠায়। আড়াই বছর চাকরিও করি। মোটা মাইনের কাজ ছিল। কিন্তু তার পরেও ঠিক তৃপ্তি পাচ্ছিলাম না। তখন চাকরিটা ছেড়ে দিই। আবার নতুন করে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ খোঁজা শুরু করি। ‘টোটাল দাদাগিরি’ সিনেমায় যশদার (দাশগুপ্ত—সিনেমার নায়ক) বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। তার পরেই ‘যমুনা ঢাকি’-তে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাই। তার পর থেকে একের পর এক সুযোগ আসছে ভগবানের কৃপায়।
প্রশ্ন: ‘যমুনা ঢাকি’র পরে আপনি ‘মোম পালক’ সিরিয়ালে রোম্যান্টিক নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু তেমন হিট হয়নি, তাই কি খলনায়কের চরিত্রের দিকে আবার ঝুঁকলেন?
সায়ন্তন: আমি এই হিট-ফ্লপে বিশ্বাস করি না। তবে এটা ঠিক, ‘মোম পালক’ খুব বেশি দিন চলেনি। কিন্তু আমাদের জুটি নিয়ে চর্চা হয়েছিল। সিরিয়াল হিট না হলেও আমার বেশ কিছু অনুরাগী তৈরি হয়েছিল, সেটাই পাওয়া। তবে সে জন্য যে খলনায়কের চরিত্রে কাজ করছি তেমনটা না। আসলে আমি কোন চ্যানেলের জন্য কাজটা করছি, সেটাও কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রশ্ন: আপনি কি কোনও সম্পর্কে রয়েছেন এই মুহূর্তে?
সায়ন্তন: হ্যাঁ, আমি কমিটেড। বেশ অনেক দিন ধরে সম্পর্কে রয়েছি। তবে এর থেকে বেশি কোনও কিছু বলতে পারব না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy