মধুমিতা সরকার।
আপনার ছবির কথা পরে শুনব। আগে বলুন তো, ইনস্টাগ্রামে প্রায় চার লাখ ছোঁবে আপনার ফলোয়ারের সংখ্যা। আপনি এত জনপ্রিয় শুধুই ধারাবাহিক করে?
ধারাবাহিক ছাড়া তো আমি আর কিছু করিনি। আজও লোকে আমায় ‘বোঝে না সে বোঝে না’-র ‘পাখি’ বলে জানে। সেই ‘কেয়ার করি না’ থেকেই লোকে আমায় ভালবাসে। ‘কুসুমদোলা’-র ইমনকে নিয়ে লোকে আজও পাগল।
ধারাবাহিক থেকে এত জনপ্রিয়তা পেয়েও সিনেমায় চলে গেলেন?
এক জন অভিনেত্রী সারা জীবনই কি ‘পাখি’ বা ‘ইমন’ শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, সাধারণ মেয়ে, এ ভাবেই থেকে যাবে তা কি হয়? সে তো নিজেকে ভাঙবে!
ভাঙতে গিয়ে সে একেবারে প্রেম আর যৌনদৃশ্যে পৌঁছে গেল...
প্রসঙ্গটা তুলে ভালই করেছেন। এখানে আমি কিছু বলতে চাই। ২০২০-তে দাঁড়িয়ে প্রেমের ছবিতে কোনও যৌনতা থাকবে না এটা আশা করাটাই তো ভুল। আপনি ভাবুন, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে যদি বন্ধু হয়, তারা একান্তে কোনও জায়গায় তিন-চার ঘণ্টা সময় কাটাতে পারে, তা হলে তারা কিস করবে না? আমরা বাঙালিরা সব করব। ইংরেজি ছবিতে অবাধ যৌন দৃশ্য দেখব। বিদেশিদের অজস্র বার চুমু খেতে দেখব। এখন এখানেও পার্কে আমরা তরুণ-তরুণীকে চুমু খেতে দেখি। তার জন্য নেটফ্লিক্সেও যেতে হবে না। কিন্তু সেটা বাংলা ছবিতে দেখতে পেলেই একেবারে রে রে করে উঠব! এ রকম আর কত দিন চলবে বলুন তো? আসলে প্রপার সেক্স এডুকেশনের অভাব। আমি অস্ট্রেলিয়াতে তো যা খুশি পরে ঘুরে বেড়াতে পারি। কিন্তু যেই এখানে আসি আমাকে দেখতে ভাল লাগলেও চট করে সব রকমের পোশাক পরতে পারি না।
আরও পড়ুন: সমকামী চরিত্রে নজর কাড়বেন কে?
প্রথম সিনেমায় কিসিং সিনে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেন আপনি?
আমার কাছে কোনও দিন ছেলেমেয়ে বলে আলাদা ইনহিবিশন ছিল না।আমি দামিনী বসুর ওয়ার্কশপ করেছি। আজ যেখানে বসে আপনার সঙ্গে কথা বলছি সেখানেই প্রতীমদা আমায় এই ‘লাভ আজ কাল পরশু’-র চিত্রনাট্য পড়তে বলে। আমিও পড়তে পড়তেই চিত্রনাট্যের লোভে পড়ে যাই। যাই হোক, প্রথমেই এত বড় সুযোগ। প্রতীমদার ছবি। সঙ্গে অর্জুন আর পাওলিদি। সত্যি কথা বলতে কি, ভেবেছিলাম কিসিং সিনটা কেমন হবে? প্রতীমদাকে বলেছিলাম, এই বাড়ির বউ দেখা আমাকে অন্তরঙ্গ দৃশ্যে দেখলে দর্শক কী ভাববে? তখন কি ইউনিটের সবাই থাকবে? নাকি অন্য কিছু হবে? তার পর দেখলাম, শুট করতে করতে জাস্ট হয়ে গেল। অন্য আর একটা সিনের মতোই।
আরও পড়ুন: ‘মেয়েছেলে’ করবে পুরুতগিরি! সমাজের কটাক্ষে নতুন বার্তা ঋতাভরীর
অর্জুনকে কেমন লাগল?
দুর্ধর্ষ!
ছবির অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অর্জুন-মধুমিতা।
কী রকম?
দেখুন, আপনি আবার বিষয়টাকে অন্য রকম করে দেখবেন না।
মানে?
‘লাভ আজ কাল পরশু’-র টিজার বেরনোর পর আমার আর অর্জুনের অন্তরঙ্গ দৃশ্য দেখে মিডিয়ায় যে ভাবে সেটাকে তুলে ধরেছিল! কিছু বলার নেই। অর্জুন এত ট্যালেন্টেড এক জন মানুষ। ওর একটা হ্যাপি ফ্যামিলি আছে। বাচ্চা আছে। ওর বউকে শুদ্ধু টেনে এনে...
ছবির একটি দৃশ্যে অর্জুন-মধুমিতা।
সব মিডিয়ার দোষ? আপনি কী বলেন?
দেখুন আমি সেই গত চার বছর ধরে মরছি।
মানে!
মানে, খবরে প্রত্যেক বছরে আমাকে মারা হয়। ইউটিউবে যাবেন, দেখবেন ডেথ লিস্টে আছি আমি। আমার মা কত বার ফোন করে বলেছে, তুই হসপিটালে? আমি নাকি প্রত্যেক বছর সুইসাইড করি। এমনকি আমি যে ধারাবাহিকে কাজ করেছি সেখানকার এক অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছিল। আমার ছবি দিয়ে সেই খবর বেরিয়েছিল। আমার ডিভোর্স হল। মিডিয়া বলতে শুরু করল, আমার অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। তাই ডিভোর্স। মানে অন্য কোনও কারণ থাকতেই পারে না। আমি মানছি সব দোষ মিডিয়ার নয়। মানুষ যা পড়তে চাইছে। যে ছবি যে গসিপের লাইক ভিউ বেশি মিডিয়া সেই স্টোরি করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এক জন আফিম খেতে ভালবাসলেই রোজ আমি তাকে আফিমই খাওয়াব? মিডিয়াই তো পারে মানুষকে তৈরি করা স্টোরি না দিয়ে বিকল্প স্টোরির অভ্যেস করাতে? মিডিয়ায় শিক্ষিত মানুষ আছেন তাঁরাই পারবেন মোড় ঘোরাতে।
ধারাবাহিকের নায়িকা হয়ে সিনেমা করতে এসে আপনি কোন বিকল্প পথ ধরলেন?
আমি অর্জুনের সঙ্গে এ ছবিতে অভিনয় করব। তাই অর্জুনের সব ছবি দেখেছি। ও কোথায় কেমন রিঅ্যাকশন দেয় সেটা বোঝার চেষ্টা করেছি। প্রতীমদা কিছু বিদেশি ফিল্ম দেখতে বলেছিল। সেগুলো মন দিয়ে দেখেছি। খুব বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই ছবিটা আমার জন্য। এখানে তিনটে লাভ ফর্ম আছে। সেটা এক সুতোয় বাঁধা। আমার অভিনয়ে একটু লাউড চলে এলে তা হলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। অর্জুন পাওলিদি প্রতীমদা মনেই হতে দেয়নি, এটা আমার প্রথম ছবি! কিন্তু আমার এখনও একটা ভয় থেকে যাচ্ছে।
ভয়?
আমার ফ্যান যারা তারা ধারাবাহিকে আমায় দেখে অভ্যস্থ। তারা এই আরবান ছবিকে কেমন করে নেবে? আমায় কেমন করে নেবে? আমি জানি তারা এখন হইচই দেখছে। তাদেরও স্বাদ বদলেছে। কিন্তু তারা এই ছবিতে পাখিকে দেখতে চাইলে খুব মুশকিল হবে।
আপনি সেটে নাকি মনিটর দেখতেন?
হ্যাঁ। আমি বসে থাকতে পারি না। পাওলিদিকে দেখতাম। প্রত্যেক ফ্রেমে পাওলিদি আলাদা। এত শক্তিশালী অভিনেত্রী। আমিও চেষ্টা করেছি অভিজ্ঞতা দিয়ে চরিত্র তৈরি করার।
জীবনের ভাঙনের জায়গা নিশ্চয়ই অভিনয়ে এসেছে?
হ্যাঁ, ভাঙতে গিয়ে দেখেছি সব কিছু ম্যাজিকাল নয়। স্বপ্নের মতো সফল নয়। জীবনে যে কোনও ধরনের শকের জন্য আমি প্রস্তুত।
শক কোথায়, নতুন বছর তো উল্লেখযোগ্য কাজ দিয়ে শুরু হচ্ছে?
উনিশটায় বেশ স্ট্রেসের মধ্যে কাটিয়েছি। এখন লাইফে কাজ আর ঘোরা।
মৈনাক ভৌমিকের ছবি করছেন না?
হ্যাঁ। ‘চিনি’ ক’দিনের মধ্যেই শুট শুরু হবে।
‘জব উই মেট’-এর করিনা কপূরের ঢঙে বলে উঠলেন মধুমিতা, ‘ম্যায় আপনি ফেবারিট হু।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy