অনীক
প্র: আইনি জটিলতার কারণেই কি ‘ভবিষ্যতের ভূত’ সিকুয়েল নয় বলছেন?
উ: তার আগে বলুন, আমি ভূতেদের নিয়ে ছবি করলেই সেটা সিকুয়েল হতে হবে? ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর সঙ্গে এই ছবির কোনও মিল নেই। চরিত্রগুলো আলাদা। আর ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর স্বত্ব কিন্তু আমাকে না জানিয়েই বিক্রি করা হয়েছিল।
প্র: এসভিএফ কবে ওই স্বত্ব কেনে?
উ: জানি না। এই বিষয়টা নিয়ে বিশদে বলতে চাইছি না। লোকে ভাববে, পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য বলছি। আসল জবাবটা আমার ছবির মধ্য দিয়েই দিয়েছি।
প্র: শোনা যাচ্ছে, চেষ্টা করা হচ্ছে আপনি যাতে হল না পান। আর পেলেও ছবি যাতে না চলে তার বন্দোবস্ত করা হবে। এটা সত্যি?
উ: আমি এ সব কিছু শুনিনি। যদি আটকানোর চেষ্টা করে, তখন দেখা যাবে। আমার দিক থেকেও অনেক কিছু বলার আছে। সে রকম কিছু ঘটলে তখন মুখ খুলব।
প্র: আপনার সব ছবিতেই পলিটিক্যাল ছোঁয়া। এর বিশেষ কোনও কারণ?
উ: কোন ছবি রাজনৈতিক নয়? পারিবারিক ছবিতেও জেন্ডার পলিটিক্স থাকে। নারী-পুরুষের সম্পর্কেও রাজনীতি থাকে। ছোটবেলায় ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ দেখে তো যুদ্ধবিরতির ছবি বলে মনে হয়নি। ‘হীরক রাজার দেশে’ তো এখনও রাজনৈতিক ভাবে প্রাসঙ্গিক। আমার ছবিতে রাজনীতি হয়তো প্রেক্ষাপট হিসেবে রয়েছে। সামনে অন্য একটা গল্প চলছে। জোর করে রাজনীতি নিয়ে আসি না। কোন সময়ের গল্প বলছি, সেটা দেখাতে গেলে তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি হালকা ভাবে চলে আসে...
প্র: নকশাল আন্দোলনের উল্লেখও তো ঘুরে ফিরে আসে। সেটা কি ওই সময়ে বড় হয়েছেন বলে?
উ: নকশাল আন্দোলন একটা ব্যাকড্রপ হিসেবে ব্যবহার করেছি। ওই সময়ে আমি একেবারেই ছোট। বড় হওয়ার সময়ে মুভমেন্টটা ঘিরে অনেক কিছু শুনতাম। কেউ ভীষণ গ্লোরিফাই করত, কেউ নিন্দে, কেউ ব্যালান্স করে বলত, উদ্দেশ্যটা ভাল ছিল, পদ্ধতি নয়। তবে একটা রোম্যান্টিসিজ়ম তৈরি হয়েছিল। তখন কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছিল মানুষ। আশির দশকে আমার কলেজ জীবনের সময়টা খুবই নিস্তরঙ্গ।
প্র: বর্তমান সময়কে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
উ: এখন আরও মারাত্মক। সব কিছুতেই একটা কনফর্মিটি। ক্ষমতাবানদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা। কলকাতা তার প্রতিবাদী স্বভাবটাই হারিয়ে ফেলেছে মনে হয়। তার মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় স্ফুলিঙ্গ দেখতে পাই। যাদবপুরের হোক কলরব, মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের অনশন, প্রেসিডেন্সিতে হস্টেল নিয়ে যেটা হল... অন্য দিকে জেএনইউ। এগুলো আশার আলো। কিছু ক্ষেত্রে হয়তো বাড়াবাড়ি হয়েছে, কিন্তু সেগুলো এমন কিছু নয়।
প্র: নন্দনে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নিয়ে মন্তব্যের পরে আপনার সিনেমা করা কি মুশকিলের হয়ে গেল?
উ: আমার জিনিসটা দৃষ্টিকটু লেগেছিল, তাই বলেছিলাম। নন্দন এমন একটা জায়গা, যেখানে আমি কলেজ জীবন থেকে যাচ্ছি। ওখানে গেলে গর্ব হতো। এই রকম সংস্কৃতির কেন্দ্র তো অন্য কোনও শহরে নেই। যেখানে সত্যজিৎ রায়ের নিজের ডিজ়াইন করা লোগো রয়েছে। সেখানে চারদিকে ওঁর ছবি ভীষণ বেমানান। যেটা সত্যি সেটাই বলেছি, এর মধ্যে বীরত্বের তো কিছু নেই। এটা যেমন দৃশ্য দূষণ, তেমনই পরিবেশ দূষণ। বর্ধমান যাচ্ছি, দু’পাশে সুন্দর ধানক্ষেত। তার মাঝেই ওই ছবি! বাইরে থেকে কোনও লোক এলে তো ভাববে এখানে স্বৈরতন্ত্র চলছে। অনেকেই বলছে, কাজ করতে সমস্যা হবে। তবে আমার মনে হয় না সে রকম কিছু হবে। আর হলেও পাবলিক সেন্টিমেন্ট কোন দিকে, সেটা এই ক’দিনে সকলে বুঝতে পেরেছেন। নন্দনে পরে একটি অনুষ্ঠানে ওঁর কোনও ছবিটবি ছিল না বলেই শুনেছি।
প্র: সম্প্রতি কোনও বাংলা ছবি দেখে ভাল লাগল?
উ: আদিত্য বিক্রমের (সেনগুপ্ত) ‘জোনাকি’ ভাল লেগেছে। সঞ্জয়ের (নাগ) ‘ইয়োর্স ট্রুলি’ ভাল লেগেছে। যদিও ছবিটা বাংলা নয়। ‘রেনবো জেলিও’ ভাল লেগেছে। এখন আর প্রিমিয়ারেও যাই না। বেরিয়ে এসে মিথ্যে কথা বলতে হয় বা পালিয়ে যেতে হয়। সে বড় বিড়ম্বনার! আমার ছবি দেখে বাকিদেরও হয়তো তাই মনে হয় (হাসি)! আমি ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর প্রিমিয়ার করছি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy