দেব
প্র: করোনার কারণে ‘টনিক’-এর বড়সড় সাকসেস পার্টি কি মিস হল?
উ: আজকেও (সাক্ষাৎকারের দিন) সব শো হাউসফুল! অথচ প্রথমে একটা শো-ও পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্বিতীয় সপ্তাহেও মানুষ হলভর্তি করে ছবি দেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ‘টনিক’ মনে রাখার মতো ছবি হয়ে থাকল। অবশেষে বাংলার মানুষকে সিনেমা হলে ফেরাতে পারলাম (সন্তুষ্টির হাসি)। গোটা টিমের এই কৃতিত্ব প্রাপ্য। সেলিব্রেশনের কথা যদি বলেন, সেটা এই মুহূর্তে আমার হাতে নেই, কারও হাতেই নেই। একটা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি টুইটও করেছি— সব কিছু অপেক্ষা করতে পারে। জীবনের মূল্য সবচেয়ে আগে। মানুষ একটু সাহস করে বেরোচ্ছিল, কাজ করছিল। কিন্তু আবার আমরা এক বছর আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছি!
প্র: আপনার মতে ছবির কোন দিকটা দর্শকের কাছে আলোড়ন তৈরি করতে পারল?
উ: এটা একটা মানবিক গল্প। প্রতিটা মানুষের বাড়ির গল্প বলা যায়। মুখ্য চরিত্র মা-বাবার বদলে দাদু-দিদাও হতে পারে। আমরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকি। অন্যদের কথা সে ভাবে ভাবি না। এই বিষয় নিয়ে খুব সহজ ভাবে ছবিটা তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া পরানদা (বন্দ্যোপাধ্যায়) এবং আমার জুটির রসায়নও দর্শকের মনে জায়গা তৈরি করতে পেরেছে।
প্র: নিউ নর্মালের মতো এটাও কি দেবের ছবির নতুন ধারা? দেব আর ‘পাগলু’র মতো ছবি করবেন না?
উ: কমার্শিয়াল ছবির ভাষা বদলে গিয়েছে। শুধু মারপিট, নাচগান দেখালে দর্শক কতটা দেখবেন, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই সে ঝুঁকি নেব না। মুম্বইয়ের সুপারস্টারদের দেখুন, তাঁরাও এখন কনটেন্টভিত্তিক ছবি করছেন। গত চার বছর ধরে আমার একটাই চেষ্টা ছিল, গ্রাম আর শহরকে এক সুতোয় বেঁধে ফেলা। সিঙ্গল স্ক্রিন এবং মাল্টিপ্লেক্সে ‘টনিক’ রমরমিয়ে চলছে। কারণ এটাই এখন কমার্শিয়াল ছবি।
প্র: কিন্তু সিনেমা হলে ঝড় তোলা ডান্স, অ্যাকশন কি অভিনেতা দেব মিস করেন?
উ: আমি কী মিস করছি, সেটা বড় নয়। সে দিন এক হল মালিককেও বলেছিলাম, দর্শক কী দেখতে চান, তেমন ছবি হলে চালাতে হবে। কারণ তাঁদের হাতের মুঠোয় এখন গোটা দুনিয়ার কনটেন্ট এসে গিয়েছে। দর্শক ভাল ছবি দেখতে চান। ‘গোলন্দাজ’-এর গ্র্যাঞ্জার, লার্জার-দ্যান-লাইফ বিষয়ও দর্শক দেখেছেন।
প্র: বক্স অফিসে ব্যবসা করলেও, ‘গোলন্দাজ’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল দর্শকের মধ্যে...
উ: দর্শকের মধ্যে এক দলের বেশি ভাল লাগে, এক দলের একটু কম। তবে এখন বাংলা ছবির বাজেটের যা অবস্থা, সেখানে একজন প্রযোজক এত বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছেন। তাঁর চেষ্টাকে অস্বীকার করা যাবে না। ‘গোলন্দাজ’ দেখতেই প্রথম হলে মানুষ আসতে শুরু করেছিলেন। এসভিএফের সঙ্গে ‘রঘু ডাকাত’ করছি। আগের ছবির ভাল-খারাপ মাথায় রেখে নতুন ছবির শুট করব।
প্র: এই বছরের শিডিউলও তো তৈরি। পুজোয় ‘কাছের মানুষ’, শীতে ‘প্রজাপতি’...
উ: ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে ‘কিশমিশ’-এর মুক্তি ভেবেছিলাম। কিন্তু কোনও কিছুই তো ঠিক থাকছে না। অন্য ছবিগুলিও এক রকম ভেবে রেখেছি। তবে সবটাই পরিস্থিতির উপরে।
প্র: ‘কাছের মানুষ’-এর চিত্রনাট্য বারবার বদলানোর জন্যই কি দেরি হচ্ছিল?
উ: চিত্রনাট্যে কাজ হয়েছে অনেক দিন ধরে, এটা ঠিক। আমার ‘কিশমিশ’, ‘টনিক’ এমনকি ‘গোলন্দাজ’-এর স্ক্রিপ্ট চূড়ান্ত করতেও সময় লেগেছে। কারণ এখন তড়িঘড়ি ভেবে নিয়ে শুটিং শুরু করে দেওয়া যায় না। এ মাসের ৩ তারিখ থেকে ‘কাছের মানুষ’-এর শুটিংয়ের কথা ছিল। পিছিয়ে এখন হয়েছে ২০ জানুয়ারি।
প্র: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ছবির পিছনে বিশেষ কোনও ভাবনা রয়েছে?
উ: পথিকৃৎ (বসু) যখন আমার কাছে চিত্রনাট্য নিয়ে প্রথম এসেছিল, ওর মাথায় অন্য কেউ ছিল। আমি বলেছিলাম, বুম্বাদাকে একবার বলতে। ও বলেছিল, বুম্বাদা বোধহয় রাজি হবেন না। আমি বলেছিলাম, কথা না বলে ধরে নেওয়ার তো মানে নেই। আমি ফোন করে কথা বলি, স্ক্রিপ্ট শোনাই। এক বারেই বুম্বাদা আমাকে ‘হ্যাঁ’ বলেন। প্রথমে চিত্রনাট্যে করোনার বিষয় ছিল। পরে আমি আর বুম্বাদা সিদ্ধান্ত নিই, করোনার মতো নেগেটিভ বিষয় চিত্রনাট্যে রাখা হবে না। সেই জন্যই সময় লেগেছে।
প্র: পরপর এত ছবির কাজ। রাজনীতি কি এখন ব্যাকফুটে?
উ: ঘাটালের পুরো পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেছি। ক’টা বেড, ক’টা অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান আছে, চাহিদা কেমন, বার্নিং ঘাটগুলির কী অবস্থা... সব আপডেট আছে। রাজনীতির কারণে আমি খবরে নেই কেন, সেটা অন্য প্রশ্ন। তবে বরাবর রাজনীতিতে পিছনে থেকেছি আমি। সামনে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করার মানসিকতা আমার নেই। আমি যতটুকু রাজনীতি বুঝি, ততটাই কাজ করি।
প্র: সম্প্রতি বলেছেন, ২০২৪-এ সুযোগ পেলে ভোটে দাঁড়াতে চান না। রাজনীতির প্রতি বিতৃষ্ণা থেকেই কি এমন ইচ্ছে?
উ: অনেকের কাছে আমার জার্নি সফল। কিন্তু আমার মনে হয়, ঠিকমতো সামলাতে পারছি না। আমার জায়গায় অন্য কেউ এলে আরও বেশি সময় দিতে পারবে। টলিউডের অনেকে এখন রাজনীতিতে আসতে চায়। ক্রিকেটে যেমন ক্যাপ্টেন বুড়ো হলে অন্যদের জায়গা ছেড়ে দেয়, ঠিক তেমন মনে হচ্ছে (হাসি)।
প্র: মেনে নিচ্ছেন বুড়ো হয়েছেন?
উ: বয়স তো হচ্ছে। অন্তত অন্য অভিনেতাদের চেয়ে রাজনীতিতে তো বয়স বেশি (হাসি)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy