কালীঘাট মন্দিরের সঙ্গে আত্মিক টান পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
গত ভূত চতুর্দশী থেকে তিনি শহরবাসীকে গা ছমছমে ভূতের গল্প দেখাচ্ছেন। তাঁর প্রথম ভৌতিক সিরিজ় ‘পর্ণশবরীর শাপ’ হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে সাড়া ফেলেছে। এ বছর দ্বিতীয় কিস্তি ‘নিকষ ছায়া’। সিরিজ়ের পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বাস্তবে এ সবে বিশ্বাস করেন? দেব-দেবী, পূজা-অর্চনা, মন্দিরে মানত কিংবা ভৌতিক অভিজ্ঞতা- এ সবেই বা তাঁর কতটা বিশ্বাস? কালীপুজোর আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে কথায় কথায় জানালেন, প্রাতিষ্ঠানিক পুজোয় বিশ্বাসী না হলেও তিনি প্রচণ্ড ঈশ্বর বিশ্বাসী।
পরমব্রত তা হলে উপোস করেন? মন্দিরে মানত রাখেন? সেই প্রার্থনা পূরণ হয়?
“পুজো দেব বলে কখনও আলাদা করে নিজে থেকে কোথাও যাইনি। তবে হ্যাঁ, কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানে যদি ঐতিহাসিক মন্দির বা মসজিদ থাকে তা হলে সেটা অবশ্যই দেখতে যাই। বলতে পারেন, বিশ্বাস নিয়েই সেই ধর্মীয় স্থানে পা রাখি”, বলেছেন তিনি। এই জায়গা থেকেই কালীপুজো তাঁর কাছে বিশেষ দিন। সেটা ছেলেবেলায় বাজি পোড়ানোর জন্য। বড় হয়ে দেবী কালিকার মাহাত্ম্য তাঁকে বেশি আকর্ষণ করেছে। পরমব্রতের কথায়, “মা কালীর মতো দেবী বিরল। বাঙালিরা দশমহাবিদ্যার আরাধনার মাধ্যমে নারীশক্তির আরাধনা করে। কখনও সেই আরাধনায় দেবীর কোমল রূপ। কখনও কঠিন। আমার চোখে দেবী কালিকা রুদ্র রূপের প্রতীক। তিনি যেন শক্তির আধার।” যদিও তিনি উপোস করে কোনও দিন দেবীর পুজো দেননি।
পরমব্রত কোন মন্দিরে পুজো দিতে যান? যেখানে গেলেই মনে হয়, জোড়হাতে মাকে ডাকলে তিনি সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন? জবাব দিতে গিয়ে পরমব্রত ফিরে গিয়েছেন অতীতে। তখনও তাঁর মা সুনেত্রা ঘটক জীবিত। চট্টোপাধ্যায় পরিবারে খুব যে পুজোর চল ছিল, তেমনটা নয়। পরিচালক-অভিনেতার কথায়, “তবু শেষের দিকে মা বাড়ির নানা কাজে বা অনুষ্ঠানে পুজো দিতে যেত। মায়ের পছন্দ কালীঘাট। সেই সময় মায়ের সঙ্গে আমিও কয়েক বার সেই মন্দিরে গিয়েছি। বার কয়েক যাওয়ার কারণেই সম্ভবত ওই মন্দিরের সঙ্গে আত্মিক টান গড়ে উঠেছে।”
সুনেত্রা ঘটক নেই। পরমব্রতের মনে মায়ের পরিচিত মন্দির ঘিরে আজও সেই অনুভূতি । যদিও তাঁর দাবি, ঈশ্বরের সঙ্গে কোনও কালেই তাঁর দেনাপাওনার সম্পর্ক ছিল না। এক বিরাট শক্তি রূপে ঈশ্বরের বাস, এই বিশ্বাসেই তিনি খুশি।
অনেকেই বলেন, কালীপুজোর সঙ্গে ভূতের যেন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। ভূতচতুর্দশীর আগে কত জন তাঁদের অলৌকিক অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করেন... কথা শেষের আগেই পরমব্রত জানালেন, তিনিও এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী। “মুম্বইয়ে কাজের সুবাদে আমার একটি ফ্ল্যাট আছে। ভাড়ায় থাকি সেখানে। প্রথমে যে ফ্ল্যাটটিতে থাকতাম সেখানে কিছু দিন থাকার পরে দেখি, নানা রকম শব্দ শোনা যাচ্ছে! ফিসফাস আওয়াজে রাতের ঘুম ভেঙে যেত।” এ রকম বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর তাঁর অস্বস্তি শুরু হল। তিনি একা নন, এই আওয়াজ তাঁর বন্ধুরাও শুনেছেন। শেষে বাধ্য হয়ে সেই ফ্ল্যাট ছেড়ে দেন পরমব্রত। এখন যে ভাড়ার ফ্ল্যাটে থাকেন সেখানে কিন্তু কোনও সমস্যা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy