(বাঁ দিকে) স্বরূপ বিশ্বাস। অপর্ণা সেন (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
টলিপাড়ায় একের পর এক অভিযোগ উঠেছে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাসে দ্বন্দ্বের তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। সম্প্রতি সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে হেয়ার ড্রেসার গিল্ডের সদস্য, এক কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টা। ওই শিল্পীর অভিযোগ, কোনও ভাবে অপরাধী সাব্যস্ত করে তাঁকে তিন মাস কর্মবিরতিতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, তার পরেও গিল্ড এবং ফেডারেশন একজোট হয়ে তাঁকে কাজ করতে দিচ্ছে না। ফলে তাঁকে ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছিল। তাঁর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। একই অভিযোগ করেছেন অন্য অনেক কেশসজ্জা শিল্পী। কিন্তু তার পর ফেডারেশনের তরফ থেকে জানানো হয়, কাউকে কোনও কর্মবিরতিতে পাঠানো হয়নি।
এই প্রসঙ্গে শনিবার গিল্ড থেকে পাঠানো কর্মবিরতির চিঠি প্রকাশ্যে আনেন অভিযোগকারিণীরা। পাশাপাশি তাঁরা দাবি তোলেন, এ বছর গিল্ডের নতুন কমিটি যেন গঠিত হয় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে। হেয়ার ড্রেসার গিল্ডের সেই বক্তব্য ডিরেক্টর্স গিল্ড প্রকাশ্যে আনে। সমাজমাধ্যমে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়-সহ একাধিক পরিচালক সেই বিবৃতি ভাগ করে নেন। সেখানেই কৌশিকের পোস্টে এই প্রথম একাধিক প্রশ্ন রেখেছেন অপর্ণা সেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, “স্বরূপ বিশ্বাস কি সিনেমা তথা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির কোনও টেকনিশিয়ান? যদি না হন, তা হলে শুধুমাত্র শাসকদলের সদস্য হওয়ার সুবাদে কেমন করে তিনি এই ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেশনের সভাপতি পদে বহাল থাকতে পারেন?” কারণ তিনি জানেন, ফেডারেশন সভাপতি নাকি সহকারী পরিচালকের কার্ড আছে। কিন্তু অপর্ণা সেন যত দূর জানেন, অন্তত দু’টি ছবিতে অবজ়ার্ভারের কাজ না করলে সহকারী পরিচালকের কার্ড পাওয়া যায় না।
এই প্রেক্ষিতে তাঁর দ্বিতীয় প্রশ্ন, তিনি যে দু’টি ছবিতে অবজ়ার্ভার ছিলেন, সেই দু’টি ছবির নাম কী? সহকারী পরিচালকের কার্ড হাতে পাওয়ার পর থেকে তিনি আজ পর্যন্ত ক’টি ছবিতে কাজ করেছেন, ছবিগুলির নাম কী? কারণ, সহকারী পরিচালকের কার্ড হাতে পাওয়ার ১৩ মাসের মধ্যে কোনও ছবিতে সহকারী পদে কাজ না করলে, সহকারী কার্ডটি খারিজ হয়ে যায়। অপর্ণা সেনের জিজ্ঞাসা, কথাটি সত্যি হলে এবং স্বরূপ ১৩ মাসের মধ্যে কোনও ছবিতে কাজ না করলে থাকেন, ফেডারেশন সভাপতির কার্ড কি খারিজ করা হয়েছে? প্রশ্ন রাখার পর তিনি সরাসরি ফেডারেশন সভাপতির কাছে জানতে চেয়েছেন, “এই ইন্ডাস্ট্রির সর্বাধিক বয়োজ্যেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আমি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর্স গিল্ডের কাছে নিশ্চয়ই এই ক’টি প্রশ্নের উত্তর আশা করতে পারি?” এই প্রশ্ন নিয়ে ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
স্বরূপ কি অপর্ণা সেনের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন? স্বরূপ বলেছেন, “নিশ্চয়ই উত্তর দেব। অপর্ণা সেন সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে জানতে চেয়েছেন। আমিও সমাজমাধ্যমেই ওঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেব।”এই প্রসঙ্গে কথা বলা হয়েছিল পরিচালকদের সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেনের সঙ্গেও। সুব্রতের কথায়, “রিনাদির বক্তব্য কমবেশি আমাদের সকলেরই। তবে ওঁর মতো করে কেউ লিখিত ভাবে এর আগে জানাননি।” আগামী দিনে গিল্ড কি অপর্ণা সেনের করা প্রশ্নগুলি সরাসরি ফেডারেশনের সভাপতির কাছে রাখবে? ডিরেক্টর্স গিল্ডের সভাপতির মতে, “আমি কোনও কিছুই একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেক সদস্য আলোচনায় বসবেন। তার পর পদক্ষেপ করা হবে।”
ফেডারেশন সভাপতির উদ্দেশে সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন রাখার পরেই বিনোদন দুনিয়া থেকেই নানা ব্যঙ্গ উড়ে আসে অপর্ণা সেনের দিকে। দীর্ঘ দিন অপর্ণা নীরব ছিলেন বলেই দাবি তাঁদের। এই তালিকায় রয়েছেন পরিচালক অনীক দত্ত-সহ অনেকেই। অনীক যেমন নাম না করে সমাজমাধ্যমে ইংরেজি প্রবাদ সামান্য পাল্টে লিখেছেন, “বেটার নেভার দ্যান লেট”। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ‘ভূতের ভবিষ্যত’-খ্যাত পরিচালক জানিয়েছেন, এখনই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না। পরে সবিস্তার বলবেন। তবে দেরিতে তোলা হলেও অপর্ণা সেনের করা যথেষ্ট প্রসঙ্গত এবং যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করছেন অনীক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy