দেবলীনা কুমার।
স্বজনপোষণ, নেপোটিজম, তারকা সন্তান— বলিউড ছাপিয়ে এই শব্দগুলি টলিউডেও এখন অতি পরিচিত। দেবলীনা কুমারের ইনস্টাগ্রামের মন্তব্যবাক্সে চোখ বোলালে সে কথা বুঝতে বাকি থাকে না। পেশায় তিনি অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী। তবে এখনও অনেকের কাছে দেবলীনা শুধুমাত্র ‘বিধায়কের মেয়ে’ এবং ‘মহানায়কের নাতবৌ’। ইতিমধ্যেই তাই ট্রোল, কটাক্ষ তাঁরও নিত্যদিনের সঙ্গী। আনন্দবাজার ডিজিটালের লাইভে এসে নিজের দিকে ধেয়ে আসা সমস্ত তিক্ততা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি।
২০১৬ সালে ‘প্রাক্তন’ ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বোনের চরিত্রে অভিনয় করে প্রথম নজরে আসেন দেবলীনা। এর পরে আরও অনেক ছবি যোগ হয় সেই তালিকায়। একই সঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিজস্ব নৃত্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা চালাচ্ছেন তিনি। তবে এ সব কিছুই বৃথা! কারণ নেটাগরিকদের একাংশের মতে, রাজনীতিবিদের মেয়ে বলেই কোনও পরিশ্রম না করে সাফল্যের সিঁড়ি চড়ছেন দেবলীনা। এই প্রসঙ্গে দেবলীনা বললেন, “কিছু মানুষ লকড প্রোফাইলের আড়ালে লুকিয়ে ট্রোল করতে ভালবাসেন। দেবাশিস কুমারের মেয়ে বা উত্তম কুমারের নাতবৌ পরিচয়টাকে খুব নেতিবাচক ভাবে তুলে ধরেন তাঁরা।”
শুধুমাত্র কাজের ক্ষেত্রে নয়, গৌরবের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য, খোলামেলা পোশাকে ছবি দেওয়া নিয়েও নেটমাধ্যম জুড়ে নানা জনের নানা কথা । মহানায়কের নাতবৌ শাড়ি ছাড়া অন্য পোশাক কেন পরবে ? গৌরবের দ্বিতীয় বিয়ের মেয়াদ কত? এ রকম অনেক প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেওয়া হয় তাঁর দিকে। এ সবেরও উত্তর দিয়েছেন দেবলীনা। খানিক হেসে বললেন, “উত্তম কুমারের নাতবৌ বলে শুধু শাড়ি পরতে হবে? তিনি তাঁর সময় দাঁড়িয়ে যতটা আধুনিক ছিলেন, আমরা আজকের দিনে দাঁড়িয়েও ততটা আধুনিক নই। সুতরাং যাঁরা বলছেন আমার পোশাক দেখে তিনি অসন্তুষ্ট হতেন, আমার মনে হয় তাঁরা ভুল বলছেন। তাঁরা কেউই তাঁকে কোনও দিনও সামনে থেকে দেখেছেন বা চিনেছেন বলে মনে করি না।”
‘মহানায়কের নাতবৌ’ বিষয়টি তালিকায় নতুন যোগ হলেও, গৌরবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বহুদিন ধরেই ট্রোলের খোরাক জুগিয়েছে নেটাগরিকদের। সাত পাক ঘোরার আগে থেকেই নানা ধরনের কদর্য মন্তব্য ধেয়ে এসেছে তাঁদের দিকে। গৌরব এ বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও দেবলীনার স্পষ্ট কথা, “আমাদের আশেপাশে অনেকেই আছেন যাঁরা একবারের বেশি বিয়ে করেছেন। একজন মানুষ যদি আরেকজন মানুষের সঙ্গে না থাকতে পারেন, সেই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসা তো অন্যায় নয়। বরং জোর করে সেই সম্পর্কে থাকাটা অন্যায়।” তিনি মনে করেন, তারকাদের খুব সহজে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়।
পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি উঠে এল তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রসঙ্গ। বাম সমর্থক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে নেটমাধ্যমে তাঁর তরজা বিনোদনের উৎস হয়েছে অনেকের। কিন্তু দেবলীনা মনে করেন, দুটি মানুষের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও শালীনতা বজায় রাখাটা জরুরি। সেই নিয়ম মেনে ইন্ডাস্ট্রির ‘সিনিয়র’ শ্রীলেখার সুস্থতা কামনা করেই থেমে গেলেন অভিনেত্রী। খানিক সুর নরম করেই বললেন, “আমি একটাই কথা বলতে পারি। উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। অভিনেত্রী হিসেবে আমি ওঁকে এখনও খুবই সম্মান করি। জোর করে আমার প্রোফাইলে এসে উনি কেন এত কিছু করছেন জানি না। উনি যদি আমার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন, আমি নিশ্চয়ই কথা বলব ওঁর সঙ্গে।”
ওয়াকিবহালরা মনে করছেন, রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে অনেক বেশি সরব বলেই এত বিতর্ক ঘিরে ধরছে তাঁকে। দেবলীনা জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়গুলোকে আরও ভাল ভাবে বুঝেছেন তিনি।
তবে কি বাবার মতো তিনিও পা রাখবেন রাজনীতির ময়দানে? কিছুটা হেসে দেবলীনার উত্তর, “বাবাকে দেখে যা বুঝেছি রাজনীতি একটা ফুল টাইম চাকরির মতো। আপাতত আমি অভিনয় করছি, নাচের স্কুল সামলাচ্ছি আর শিক্ষকতা নিয়ে ব্যস্ত। তবে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা রয়েছে।” আপাতত সক্রিয় রাজনীতিতে না থেকেও অতিমারিকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে নানা ভাবে কাজ করে চলেছেন অভিনেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy