Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Deepti Naval

‘আমাদের সময়ের সিনেমার সারল্য হারিয়ে গিয়েছে’, কলকাতায় এসে বললেন দীপ্তি

তিনি মাঝেমধ্যেই কলকাতায় আসেন। এ বারে অবশ্য এসেছিলেন ছবির প্রচারে। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তর দিলেন বলিউড অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল।

Photo of Bollywood Actress Deepti Naval

প্রায় পাঁচ বছর পর আবার বড় পর্দায় ফিরতে চলেছেন দীপ্তি নাভাল। ছবি: সংগৃহীত।

অভিনন্দন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫৭
Share: Save:

তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। অনুরাগীদের কাছে তাঁর প্রাথমিক পরিচয় অভিনেত্রী হিসেবে। কিন্তু অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল একাধারে চিত্রকর, ফটোগ্রাফার এবং কবিও বটে। প্রায় পাঁচ বছর পর আবার তিনি বড় পর্দায় ফিরতে চলেছেন। আসন্ন সেই ছবির প্রচারেই শহরে এসেছিলেন দীপ্তি। ছবির নাম ‘মাদার টেরেসা অ্যান্ড মি’।

বৃহস্পতিবার মধ্য কলকাতার এক হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে একান্তে পাওয়া গেল দীপ্তিকে। মাদার টেরেসা এবং কলকাতা প্রায় সমার্থক। কমল মুসালে পরিচালিত এই ছবিতে মাদার টেরেসার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জ্যাকলিন ফ্রিৎশি করনাজ়। দীপ্তি অভিনীত চরিত্রটি কী রকম? চরিত্রটি মাদারের ঘনিষ্ঠ, খুব বেশি খোলসা না করে জানালেন ‘চশমে বদ্দুর’ ছবির অভিনেত্রী। দীপ্তি কি নিজে কখনও মাদারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন? কিছুটা আক্ষেপের সুরেই বললেন, ‘‘আমার সেই সৌভাগ্য হয়নি। তবে ওঁর কাজ সম্পর্কে আমি অবহিত। এই ছবির প্রস্তুতি নিতে গিয়ে নতুন করে মাদার সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানতে পেরেছি।’’

সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েক বার কলকাতায় এসেছেন দীপ্তি। তবে কাজ নয়, কলকাতায় তাঁর একাধিক বন্ধুও রয়েছেন বলে জানালেন অভিনেত্রী। বললেন, ‘‘স্কুলের এক বন্ধুর সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রয়েছে। গৌতম ঘোষ, মুনমুন সেন আমার খুব ভাল বন্ধু। বুদ্ধদার (পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত) ‘অন্ধি গলি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় উনি তো আর আমাদের মধ্যে নেই।’’ বাংলা না হলেও সঞ্জয় নাগ পরিচালিত ‘মেমরিজ় ইন মার্চ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দীপ্তি। এই ছবিতেই ছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। সে কথা জি়জ্ঞাসা করতেই অভিনেত্রী বললেন, ‘‘ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। ছবিটা মুক্তির কয়েক বছরের মধ্যেই উনি প্রয়াত হন, এটা ভেবে খুবই কষ্ট পাই।’’

Photo of cast and crew of the movie Mother Teresa and Me

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরে ছবির প্রদর্শনের ফাঁকে জ্যাকলিন ফ্রিৎশি করনাজ়, কমল মুসালে এবং দীপ্তি নাভাল। ছবি: সংগৃহীত।

১৯৭৮ সালে শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘জুনুন’ ছবির মাধ্যমে মায়ানগরীতে পা রেখেছিলেন দীপ্তি। চার দশকেরও বেশি সময় ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে কী কী পার্থক্য নজরে এসেছে তাঁর? একটু ভেবে বললেন, ‘‘প্রত্যেক সময়কালের ভালমন্দ থাকে। তাই কারও প্রতি পক্ষপাত করতে চাই না।’’ এরই সঙ্গে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘আমাদের সময়ে সব কিছুর মধ্যে একটা সারল্য ছিল। আশির দশকে বিষয়বস্তু বা সিনেমায় আবেগের দিক থেকে আমরা এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে ছিলাম।’’ বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতাদের প্রশংসা করে দীপ্তি বলেন, ‘‘এখনকার ছেলেমেয়েরা খুব পরিশ্রমী। নিয়মিত জিমে যায়। গাইতে পারে, নাচতে পারে। ওরা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।’’

তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। কী ভাবে সময় বার করেন? দীপ্তি বললেন, ‘‘আমার হাতে প্রচুর সময়। তাই যখন যেটা করার করে ফেলতে পারি।’’ তাই বাড়িতে থাকলে এখনও প্রতিদিন নিয়ম করে একটা সিনেমা দেখা তাঁর দৈনন্দিন রুটিনেরই অংশ। তবে ভাষার সমস্যার জন্য সেই ভাবে বাংলা ছবি দেখা হয়ে ওঠে না দীপ্তির। শেষ দেখা বাংলা ছবির কথা জিজ্ঞাসা করতেই বলে উঠলেন, ‘‘আপনাদের ইন্ডাস্ট্রির গুরুত্বপূর্ণ ছবিগুলো তো আগেই দেখেছি। সম্প্রতি ঋতুপর্ণ ঘোষের শেষ দিকের সব ছবিগুলো আবার দেখলাম।’’

ইদানীং ওয়েব সিরিজ়েই দর্শক দীপ্তিকে বেশি দেখছেন। ছবি থেকে দূরত্বের কারণ কী? গত বছর প্রকাশিত হয়েছে দীপ্তির স্মৃতিকথা ‘আ কান্ট্রি কল্‌ড চাইল্ডহুড: আ মেমোয়ার’। দীপ্তি জানালেন, বিগত পাঁচটি বছর তিনি এই বই লিখতেই সময় নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছবির প্রস্তাব তো আসতেই থাকে। আসলে কেরিয়ারের শুরু থেকেই আমি বেছে বেছে কাজ করেছি। চরিত্র পছন্দ হলে যে কোনও মাধ্যমেই আমি স্বচ্ছন্দ।’’ সেই সঙ্গে দীপ্তি এটাও জানিয়ে গেলেন যে, নতুন বই লেখার কাজ তিনি খুব দ্রুত শুরু করতে চলেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy