Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
theatre

এ বার মঞ্চে চারু মজুমদার, নামভূমিকায় কে?

চারু মজুমদার কি এই সময়েও গরিব চাষির পাশে দাঁড়াতেন? উত্তর নিয়ে আসছে নাট্যকার চন্দন সেনের নতুন নাটক ‘চারু-লীলা দ্রোহকাল’।

নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদার।

নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:০৯
Share: Save:

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, রাজনীতির হাল দেখলে কী করতেন নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদার? জ্বলে উঠতেন প্রতিবাদে? বিদ্রোহ ছড়াতেন বাংলার বুকে? সেই সময়ের মতোই এই সময়েও গরিব চাষিদের পাশে দাঁড়াতেন? উত্তর নিয়ে আসছে নাট্যকার চন্দন সেনের নতুন নাটক ‘চারু-লীলা দ্রোহকাল’।

এই মানুষটিই বিপ্লবের বাইরে দামাল প্রেমিক। অতি বাম রাজনীতিতে চারুবাবুর সহকর্মী লীলা সেনগুপ্ত যখন একদিনের নোটিসে তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, আগুপিছু ভাবেননি। আন্দোলনের জেরে বারে বারে জেলে গিয়েছেন। আবার সংসারে ফিরেছেন। যখনই ঘরের চার দেওয়ালে তখনই চারু-লীলার মুখে শোনা গিয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান, কবিতা। এমন কট্টর বাম নেতার বাবা মনেপ্রাণে গাঁধীবাদী।

এই চেনা-অচেনা চারুকেই আগামী নাটকে ধরেছেন নাট্যকার, আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন চন্দন সেন। সম্প্রতি যাঁর লেখনি জন্ম দিয়েছে ‘বালজাকের প্রেমিকারা’র মতো নাটক। হঠাৎ কেন চারু মজুমদার? চন্দনের যুক্তি, ‘‘অনেক দিন ধরেই মনে হচ্ছিল ‘দুই হুজুরের গপ্পো’, ‘জ্ঞানবৃক্ষের ফল’, ‘দায়বদ্ধ’ বা ‘বিপজ্জনক’-এর মতো নাটক অনেক হল। এ বার এমন কিছু সৃষ্টি করি, যা সমাজের চোখ খুলে দেবে। যা তথাকথিত বিখ্যাতদের নতুন করে চেনাবে। চারু মজুমদারের বিপ্লবী সত্ত্বার পাশাপাশি তাঁর প্রেমিক সত্ত্বাকে আজও অনেকেই দেখেননি। সব মিলিয়ে সাধারণকে সজাগ করতে তিনি ছাড়া আর কেউ পারবেন না। নাটকেরও তো দায় আছে সমাজের প্রতি!’’

আরও পড়ুন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বলিউডের রমরমা, এখনও দুয়োরানি টলিউড​

‘‘নাটকের শেষ দৃশ্যটুকুই লেখা বাকি’’, কথা প্রসঙ্গে জানালেন নাট্যকার। চন্দন সেনের ‘চারু-লীলা দ্রোহকাল’-এর সৃষ্টিকাল থেকে সঙ্গী আরও দুই নাট্যব্যক্তিত্ব— পরিচালক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার। অতিমারির আবহ কাটলেই নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ভাববেন ‘প্রাচ্য’ নাট্যদলের প্রাণপুরুষ বিপ্লব।

অতি বাম রাজনীতিতে চারুবাবুর সহকর্মী লীলা সেনগুপ্ত পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী।

যদিও পরিচালক বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই ধরনের নাটক আজ বলে কালই নামানো যায় না। এর জন্য ওয়ার্কশপ, আলোচনা, পড়াশোনার মাধ্যমে চরিত্রের ভিতর ঢুকতে হয়। তবেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে সেই ধাপ পেরিয়ে তবে নাটক মঞ্চস্থের চিন্তাভাবনা। পরিকল্পনা মতো চললে, চলতি বছরের শেষে বা ২০২১-এর গোড়ায় আবার ফিরবেন চারু মজুমদার।

আরও পড়ুন: রোল, মোগলাই, কচুরিতে ডুবে ইমোনা! টেনশন, হজম করতে পারবে তো?

এমন ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ ভূমিকায় কাকে পছন্দ নাট্যকার, পরিচালকের? চন্দন এবং বিপ্লব দু’জনেই চাইছেন দেবশঙ্করকে। যুক্তি, তিনি প্রথম থেকে এই নাটকের সঙ্গে রয়েছেন। এবং নাট্যজগতে অতি পরিচিত মুখ। তিনি পারবেন এই দায়িত্ব সামলাতে। চারুর বিপরীতে লীলা সেনগুপ্ত কে হবেন? পরিচালক খুব চেনা মুখ চাইছেন না। বরং দেবশঙ্করের বিপরীতে তিনি টাটকা মুখের পক্ষপাতী। ফলে, অনেকের সঙ্গে কথা হলেও বিপ্লবের প্রথম পছন্দ তানিয়া মাইতি। নাটক, গানবাজনার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনও দিন যাঁকে মঞ্চে নাটকের মুখ্য চরিত্রে দেখা যায়নি। একই ভাবে গুরুত্বপূর্ণ চারুর বাবাও। তিনিও কম পরিচিত বা নতুন কেউ হলেই ভাল, দাবি বিপ্লবের।

চারু মজুমদারের ভূমিকায় দেবশঙ্কর হালদার। নাট্যকার চন্দন সেন

মূল চরিত্র যখন তাঁর কাঁধে, তখন নিশ্চয়ই হোমওয়ার্ক শুরু করে দিয়েছেন দেবশঙ্কর? স্পষ্টবাদী অভিনেতা, ‘‘এখনও নাটক লেখা শেষ হয়নি। পুরোটাই প্রাথমিক পর্যায়ে। হ্যাঁ, আমি শুরু থেকে ‘চারু-লীলা দ্রোহকাল’-এর সঙ্গে জড়িত। নিতান্তই এক জন নাট্যকর্মী হিসেবে। চারু মজুমদার আমিই করব, এমন ভাবনা নিয়ে নয়। পুরো নাটক শোনার পরেও যদি আমিই ‘চারু মজুমদার’ হই তখন অবশ্যই পরিচালক যেমন বলেছেন, ধাপে ধাপে এগোব। এখন এর বেশি বলার মতো কিছুই নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE