কাল থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত টলি পাড়ায় দেখা যাবে না রোজকারের এই চেনা চিত্র। (প্রতীকী ছবি)
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় বন্ধ হয়ে গেল টালিগঞ্জের সমস্ত শুটিং। মঙ্গলবার নন্দনে পূর্তমন্ত্রী এবং ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি অরূপ বিশ্বাস সমগ্র টলি পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
মুম্বইয়ে ধারাবাহিক, সিনেমা, ওয়েবসিরিজের শুটিং বন্ধ হওয়ার পর থেকেই টলিপাড়ার শুটিং বন্ধ নিয়ে ‘নানা মুনির নানা মত’ ঘুরে বেড়াচ্ছিল ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণায় বন্ধ হয়েছে প্রেক্ষাগৃহ। এরই মধ্যে আজ মঙ্গলবার নন্দনে অরূপ বিশ্বাস বলেন, “আগামীকাল থেকে ৩০ মার্চ অবধি সমস্ত সিনেমা এবং ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ৩০ তারিখের পর সিনেমা জগতের সবাইকে নিয়ে ‘রিভিউ মিটিং’-এ বসবেন। সেখানেই স্থির হবে কবে থেকে আবার কাজ শুরু হবে । ”
অরূপ বিশ্বাস ছাড়াও ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বতভাবে চেষ্টা করছেন সব ধরনের সতর্কতা নেওয়ার। সেই কথা মাথায় রেখেই আমাদের এই সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।” নন্দনের কনফারেন্স রুমের এই বিশেষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক নিসপাল সিংহ রানে। তিনিও যদিও সাংবাদিক সম্মেলনে সরাসরি কোনও বক্তব্য রাখেননি। অন্যদিকে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান, পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের জীবনের দাম সবচেয়ে বড়। তাই আর্থিক ক্ষতি হলেও সবার স্বার্থে সমবেত ভাবে এই সিদ্ধান্তে এসেছি আমরা।”
ইম্পার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্তের গলাতেও ছিল একই সুর। তিনি বলেন, “সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামি কাল থেকে ৩0 মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শুটিং বন্ধ থাকবে। সমস্ত ক্ষয়ক্ষতির চিন্তাভাবনা বাদ দিয়েই মানুষের স্বাস্থ্যের খাতিরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিজেরাই যদি না বাঁচি তাহলে কাজকর্ম করার মানেই হয় না।” এ ছাড়াও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা জুন মাল্য, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অনেকে।
এগারো দিন শুটিং বন্ধ থাকা মানে বিরাট অঙ্কের লোকসান। মেকআপ আর্টিস্ট থেকে জুনিয়র টেকনিশিয়ান, যাঁরা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন, তাঁরা কী করবেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে আর্টিস্ট ফোরামের তরফ থেকে অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “শুধু যে টেকনিশিয়ানদের ক্ষতি হবে এমনটাও নয়। বিশ্বের অর্থনীতিই বিপর্যস্ত। এই ক্ষতি সবার।” অভিনেতা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় যোগ করেন, “আমরা সবাই দৈনিক পারিশ্রমিক পাই। শুটিং বন্ধ থাকলে কেউ-ই পাব না সেটা। আগে তো বাঁচার কথা ভাবব। তার পর টাকা।”
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, সোমবার বিকেলে টালিগঞ্জের প্রযোজকেরা বৈঠকে বসে করোনা-আতঙ্কে শুটিং বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। ঠিক কোন তারিখ থেকে এই রাজ্যে সিনেমা ও ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ রাখা হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ারও কথা ছিল এখানে। কিন্তু তা স্থগিত হয়ে যায়।
প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যেহেতু শুধুমাত্র প্রযোজক, পরিচালক বা অভিনেতা নিয়ে টলি দুনিয়া নয়, তাই টেকনিশিয়ান, ফ্লোর ম্যানেজার সবার মতামতও ফেডারেশনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শুটিং বন্ধের বিষয়ে ফেডারেশনের সমস্ত সংগঠনকেই তাদের মতামত জানতে চেয়ে গতকালই মেল পাঠানো হয়েছিল। সেই ভিত্তিতেই আজকে সিদ্ধান্তে উপনীত হয় ফেডারেশনের সব সংগঠন। আগামী কয়েক দিন টলিপাড়ায় শোনা যাবে না ‘লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy