স্কুল বন্ধ, সঙ্গে শুটিংও। কার্টুন, ড্রয়িং সঙ্গী করে বাড়িতেই সুন্দর সময় কাটাচ্ছে খুদে তারকারা। অনেকে আবার বাড়ির কাজেই মন দিয়েছে। তবে ছুটির মেজাজই সঙ্গী তাদের।
‘ফিরকি’ ধারাবাহিকের মাহি সিংহ ক্লাস ওয়ানে পড়ে। স্কুল বন্ধ কেন জিজ্ঞেস করতেই স্পষ্ট উত্তর এল, “লকডাউন যে! করোনাভাইরাসের জন্য রাস্তায় বেরোনো যাচ্ছে না তো। তাই তো স্কুল বন্ধ। বাড়িতে এখন মায়ের কাছেই পড়ছি।’’ তবে তার বাড়িতে সময় কাটানোর উপায়ও অভিনব। পড়াশোনা, আঁকাজোকা করেও সময় কাটছে না বলে, বাবাকে বলেছে আরও কাজ দিতে। তাই কখনও ছাদে গিয়ে গাছের পরিচর্যা শুরু করে দেয়, তো কখনও স্যানিটাইজ়ার দিয়ে টিভি, আয়না পরিষ্কার করতে বসে মাহি।
‘জয় বাবা লোকনাথ’-খ্যাত অরণ্য রায়চৌধুরী আবার খেলায় মত্ত। বিকেল হলেই ছাদে ছুট। কাদের সঙ্গে খেলা চলে? ক্লাস ফোরের অরণ্যর কথায়, “বাবার সঙ্গেই খেলি। আশপাশের বাড়ির দাদাদের সঙ্গেও এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে বল ছুড়ে ক্যাচ ক্যাচ খেলি।’’ বল খেলে এসে হাত ধোও তো? ঝটিতি জবাব তার, “হাত ধোব কী? আমি তো সাবান মেখে পুরো স্নান করি। করোনা আছে না! আর দাদুকেও বারবার হাত ধোয়ার কথা মনে করিয়ে দিই।’’ তবে অরণ্যর মনখারাপও করছে। সে ঘুরতে খুব ভালবাসে। এর মধ্যেই মৌসুনী দ্বীপ ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু সেই ট্রিপ ক্যানসেল হয়ে গিয়েছে। সব সময়ের সঙ্গী দিদিমা মারা গিয়েছেন ক’দিন আগে। তাই অরণ্য আগের চেয়ে এখন অনেকটাই চুপচাপ।
‘ভুতু’ নামেই যে সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছিল, সেই আর্শিয়া মুখোপাধ্যায়ও দিদি আর মায়ের সঙ্গেই হেসেখেলে সময় কাটাচ্ছে। তবে বাবার পোস্টিং শহরের বাইরে। তাই মাঝেমাঝে বাবার জন্যও চিন্তা করছে ছোট্ট আর্শিয়া। এই হঠাৎ পাওয়া ছুটি প্রথম প্রথম ভাল না লাগলেও এখন অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। আর্শিয়ার কথায়, ‘‘আগে মনে হচ্ছিল, কবে স্কুল খুলবে, আবার কবে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে! এখন আর সে সব মনে হচ্ছে না। বাড়িতেই দিব্যি সময় কেটে যাচ্ছে। স্কুল থেকে হোমওয়র্ক দিচ্ছে। সেগুলো করছি। নাচ, গান, ব্যায়াম করে, টিভি দেখেই সময় কেটে যাচ্ছে। আর আমি মেকআপ করতে খুব ভালবাসি, তাই মাঝেমাঝেই বাড়িতে বসে নিজের মতো সাজছি। আর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করলে ফোন করে, ভিডিয়ো কলে গল্প করছি।’’
আর্শিয়ার মতো ফোন বা ভিডিয়ো কলে কথা বলে মন ভরছে না ‘সিংহলগ্না’ ধারাবাহিকের ঐশানী দে-র। তার কথায়, ‘‘ফোনে কি আর সে ভাবে গল্প করা যায়? তা ছাড়া ছুটিও সে ভাবে পাচ্ছি না। অনলাইন ক্লাস চলছে। তার জন্য রোজ অনেক সকালে উঠতে হয়। আর যেটুকু সময় পাই, আমার ভাইয়ের সঙ্গে খেলা করি। বাকিটা রেওয়াজ করি।’’ ওই ধারাবাহিকেই অন্য আর একটি চরিত্রে অভিনয় করে স্বর্ণাভ সান্যাল। সে অবশ্য বেশ উপভোগ করছে এই ছুটি। স্বর্ণাভ বলল, “পড়াশোনা চলছে। তবে হাতে অনেকটা সময় থাকায় ক্যারাম, লুডোও খেলছি মা, বাবা আর ঠাকুমার সঙ্গে। আর রয়েছে আমার গল্পের বই। এখন সেগুলো পড়ার সময়ও পাচ্ছি। তবে লকডাউন না হলে বাইরে বেরনো যেত। এখন পারছি না, এটাই যা খারাপ লাগছে।’’
‘নিশির ডাক’ ধারাবাহিকের সুকন্যা চট্টোপাধ্যায় প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। তার কথাতেও এক সুর, “সারা দিন শুধু হাত ধুচ্ছি আর হাত ধুচ্ছি। তবে মাঝেমাঝে পড়ছি আর ছবিও আঁকছি।’’ তার সবচেয়ে মজা এখন অনেকটা সময় কার্টুন দেখার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে।
এই কার্টুন বা টিভি দেখা নিয়ে সব অভিভাবকেরাই বেশ চিন্তিত। এখন সময় কাটাতে টিভি দেখা বাড়ছে। পরে তা ছাড়ানো আবার মুশকিল না হয়ে যায়! তবে এই খুদে তারকারা এই বয়সেই যে এতটা করোনা-সচেতন হয়েছে, লকডাউনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছে, তা-ই বা কম কী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy