Coronavirus Affected Bollywood Singer Kanika Kapoor Criticized over Her Recent Activities dgtl
coronavirus
ডিভোর্সের পরে সন্তানদের নিয়ে লড়াই, এর আগেও জীবনে কঠিন সময় কাটিয়েছেন কণিকা কপূর
বিয়ের দেড় দশক পরে ভেঙে যায় কণিকার সংসার। তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি ফিরে আসেন লখনউ। কয়েক বছর সেপারেশনে থাকার পরে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ১১:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতেন গায়িকা হওয়ার। অল্প বয়সে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ের পরে কিছুটা লক্ষ্যচ্যুত হয়েছিলেন। কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদের পরে আবার ফিরে আসেন অভীষ্ট কক্ষপথে। বহু পরিশ্রমে যে ফ্যান ফলোয়িং তৈরি করেছিলেন, নিজের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে এখন তা হারানোর মুখে কণিকা কপূর।
০২২০
কণিকার জন্ম ১৯৭৮ সালের ২১ অগস্ট। তাঁর বাবা শিল্পপতি। মায়ের একটি বুটিক আছে। বারো বছর বয়সে তাঁর ধ্রপদী সঙ্গীতপাঠের হাতেখড়ি। তাঁর গুরু ছিলেন বারাণসী ঘরানার পণ্ডিত গণেশপ্রসাদ মিশ্র।
০৩২০
গান শেখার পাশাপাশি আকাশবাণীতে অনুষ্ঠান করতে লাগলেন পঞ্চদশী কণিকা। স্কুলে পড়ার সময় অংশ নিতেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। একসঙ্গে সমান তালে চলছিল গান আর পড়াশোনা।
০৪২০
বিএ পাশ করার পরে সঙ্গীতে স্নাতকোত্তর করেন কণিকা। এর পর তাঁর পথচলা শুধুই গানের পথে। কেরিয়ারের জন্য পাড়ি দেন মুম্বই।
০৫২০
কিন্তু সে সময় কেরিয়ার আর শুরু করা হল না। মাত্র উনিশ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালে বিয়ে হয়ে গেল কণিকার। প্রবাসী ব্যবসায়ী রাজ চন্দোকের সঙ্গে। বিয়ের পর কণিকা চলে যান লন্ডন।
০৬২০
গায়িকা হওয়ার স্বপ্নকে একপাশে সরিয়ে রেখে চলছিল দাম্পত্য। কিন্তু বিয়ের দেড় দশক পরে ভেঙে যায় কণিকার সংসার। তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি ফিরে আসেন লখনউ। কয়েক বছর সেপারেশনে থাকার পরে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
০৭২০
কেন বিবাহবিচ্ছেদের পথে গেলেন তিনি? সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সাধারণ গৃহবধূ হয়ে থাকতে দমবন্ধ লাগছিল তাঁর। কিন্তু কোনও বিবাদের পথে না গিয়ে তিনি সরে আসেন সম্পর্ক থেকে। চাননি, এই নিয়ে প্রকাশ্যে জলঘোলা হোক।
০৮২০
লখনউ ফিরে এসে নতুন করে গায়িকার কেরিয়ার শুরু করেন কণিকা। প্রকাশিত হয় তাঁর গান ‘জুগনী জি’। ‘আলিফ আল্লাহ’ মিউজিক অ্যালবামের এই গানটি তুমুল সফল হয়। সাফল্যের রেশ ধরে কণিকার কাছে আসতে থাকে সুযোগ।
০৯২০
২০১৪ সালে প্রথম প্লেব্যাক বলিউডে। ‘রাগিণী এমএমএস টু’ ছবিতে কণিকার গলায় ‘বেবি ডল’ জনপ্রিয় হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে এই গানটি কণিকার নামের সঙ্গে আইকনিক হয়ে গিয়েছে।
১০২০
এর পর ক্রমশই দীর্ঘ হতে থাকে কণিকার সাফল্যের তালিকা। ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির ‘লাভলি’, ‘কমলি’, ‘রয়’-এর ‘চিট্টিয়া কলাইয়াঁ’, ‘দিলওয়ালে’-এর ‘প্রেমিকা’, ‘টুকুর টুকুর’ কণিকার জনপ্রিয়তার অন্যতম উদাহরণ।
১১২০
কণিকার প্লেব্যাক করা ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘এক পহেলি লীলা’, ‘দ্য বিগ ইন্ডিয়ান ওয়েডিং’, ‘হেট স্টোরি থ্রি’, ‘তেরা সুরুর’, ‘উড়তা পঞ্জাব’, ‘গ্রেট গ্র্যান্ড মস্তি’ এবং ‘হামে তুমসে প্যায়ার কিতনা’। প্লে ব্যাক করেছেন বাংলা ছবি ‘রক্ত’-তেও।
১২২০
বলিউডে খ্যাতির পাশাপাশি কণিকার নামের পাশে জুড়তে থাকে পেজ থ্রি-গুঞ্জনও। শোভা দে-এর ছেলে আদিত্যর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা শোনা যেতে থাকে। শেষ অবধি কণিকা নিজেই আদিত্যর ছবি শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
১৩২০
দু’জনে একসঙ্গে ছুটি কাটাতে বিদেশেও গিয়েছেন। শোনা যায়, শোভা দে-এর সঙ্গেও কণিকার সম্পর্ক সহজ। কিন্তু আদিত্য-কণিকা এখনই বিয়ে নিয়ে ভাবছেন না। উপভোগ করছেন একে অপরের সান্নিধ্য।
১৪২০
বিচ্ছেদের পরে অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়েও যেতে হয়েছে কণিকাকে। সাক্ষাৎকারে জানিয়েওছেন সে কথা। বলেছেন, জীবনের সেই কঠিন সময়ে পাশে ছিলেন তাঁর মা এবং দাদা।
১৫২০
আরও এক বার জীবনের কঠিন সময়ের সামনে কণিকা কপূর। গত ১৫ মার্চ লন্ডন থেকে দেশ ফেরেন কণিকা। কিন্তু নিজেকে ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিন করে রাখার পরিবর্তে বেশ কয়েকটি পার্টিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া এবং তাঁর পুত্র সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহ-ও। বসুন্ধরা-দুষ্মন্ত ছাড়াও ওই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের আরও ৯৬ জন সাংসদ। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, প্রাক্তন সেনা প্রধান ভি কে সিংহ, গজেন্দ্র শেখাওয়াত, অর্জুন রাম মেঘাওয়াল, কৈলাস চৌধুরি, সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি, রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর, হেমা মালিনী, রীতা বহুগুণা, সাক্ষী মহারাজ প্রমুখ।
১৬২০
লখনউয়ের তাজমহল হোটেলে ১৩-১৫ মার্চের মধ্যে একাধিক পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন কণিকা। ওই হোটেল সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। লন্ডন ভ্রমণের কথা লুকিয়ে যে ভাবে কণিকা পার্টিতে যোগ দিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাতে তাঁর সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকেই। যদিও ইতিমধ্যে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করে কণিকা জানিয়েছেন, তিনি ভাল আছেন। অল্প জ্বর রয়েছে। তবে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।
১৭২০
তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে লখনউ পুলিশ। লখনউ পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ পাণ্ডে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯, ২৭০ এবং ১৮৮ ধারা অনুযায়ী, সংক্রামক ব্যধি ছড়ানো এবং আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করার জন্য ওই গায়িকার বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিল করা হয়েছে। আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
১৮২০
অন্য দিকে লখনউয়ে সঞ্জয় গাঁধী পিজিআইএমএস চিকিৎসাধীন কণিকার বিরুদ্ধে তারকাসুলভ আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে অন্য রোগীদের মতোই চিকিৎসকদের সঙ্গে সহযোগিতা করার আর্জি জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, গায়িকাকে নিজস্ব শৌচালয়-সহ বাতানুকূল ঘরে রাখা হয়েছে। বাতানুকূল যন্ত্র থেকে সংক্রমণ ছড়ানো এড়াতে বিশেষ ‘এয়ার হ্যান্ডলিং ইউনিট’-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
১৯২০
যদিও শনিবার কণিকা এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, তাঁকে একটি অপরিচ্ছন্ন ঘরে রাখা হয়েছে যেখানে মশার উপদ্রবে নাজেহাল তিনি। তাঁর সঙ্গে ‘অপরাধী’র মতো আচরণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ গায়িকার।
২০২০
অন্য দিকে, হাসপাতালের তরফে টুইট করে জানানো হয়, গায়িকাকে এখন তারকা নয়, অন্য রোগীর মতোই হাসপাতালের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। বাতানুকূল ঘর, গ্লুটেনমুক্ত খাদ্য-সহ হাসপাতালে যে যে সুবিধে দেওয়া যেতে পারে তার সবই তাঁকে দেওয়া হয়েছে। (ছবি: আর্কাইভ ও ফেসবুক)