Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
স্রোতের বিপরীতে
OTT platform

সিনেমার চুক্তিতে অনলাইন রিলিজ় প্রসঙ্গে শর্ত রাখছেন বলিউডের অনেক অভিনেতা, কেন?

স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ওটিটি রিলিজ়ে কতটা আগ্রহ থাকবে অভিনেতা বা ছবির নির্মাতাদের, সেটাও বড় প্রশ্ন।

কার্তিক এবং আয়ুষ্মান।

কার্তিক এবং আয়ুষ্মান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

অতিমারির হানায় লকডাউনে অনেক হিন্দি ছবিই মুক্তি পেয়েছে ওটিটিতে। দীর্ঘ লকডাউনে ছবির অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকি না নিয়ে অনেক প্রযোজকই ডিজিটালে ছবি মুক্তির সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সিনেমা হল খুলে যাওয়ার পরে এবং ১০০ শতাংশ সিট অকুপেন্সির কথা ঘোষণার পরে এখন সেই চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। এক দিকে হলে পরপর ছবিমুক্তির ঘোষণা, অন্য দিকে বলিউডের কিছু তারকা তাঁদের চু্ক্তিপত্রে নতুন শর্ত ‘নো টু ওটিটি রিলিজ়’ সংযোজন করছেন।

শর্তসাপেক্ষ

দিনকয়েক আগেই আয়ুষ্মান খুরানা তাঁর পরবর্তী ছবি ‘চণ্ডীগড় করে আশিকী’-র চুক্তিপত্রে এই শর্ত রেখেছেন। এই শর্ত অনুযায়ী ছবিটি ওটিটিতে মুক্তি করা যাবে না, হল রিলিজ় করতে হবে। যদিও তাঁর ছবি ‘গুলাবো সিতাবো’ই লকডাউনে ওটিটিতে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউডের প্রথম ছবি ছিল, কিন্তু পরবর্তী ছবির জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আয়ুষ্মান। তবে তাঁর আগামী সব ক’টি ছবিতেই এই শর্ত না-ও থাকতে পারে।

শোনা যাচ্ছে, ‘ধমাকা’র চুক্তিপত্রেও এই শর্ত রেখেছিলেন কার্তিক আরিয়ান। কিন্তু পরে ছবিটি ওটিটিতে রিলিজ় করার জন্য কার্তিককে রাজি করানো হয়। কার্তিক নাকি নির্মাতাদের বলেছেন, একমাত্র নেটফ্লিক্সেই ছবিটি রিলিজ় করতে হবে।

ওটিটিতে অনীহা কেন?

অনেকেই মনে করছেন, ওটিটিতে নির্দিষ্ট কোনও মাপকাঠি না থাকায় ছবির সাফল্য মাপা সম্ভব হচ্ছে না। অন্য দিকে ছবিটির ব্যবসা করার সুযোগ এককালীন। ডিজিটাল স্বত্ব বিক্রির সময়ে যে অঙ্ক স্থির হচ্ছে, তার সঙ্গে শুধু স্যাটেলাইট রাইটস যুক্ত হচ্ছে। এই দুইয়ের উপর নির্ভর করছে ছবিটি কত টাকা রোজগার করবে। বাদ চলে যাচ্ছে সিনেমা হলের রোজগার। তা ছাড়া বক্স অফিসের ভিত্তিতে ছবির সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ধারণ করাও সহজ হয়। কোনও অভিনেতার ছবি বক্স অফিসে হিট হলে, তিনি পরের ছবিগুলোয় পারিশ্রমিকও বাড়িয়ে থাকেন। ২০১৯-২০-তে অক্ষয়কুমারও প্রায় তিন বার পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন, যা এখন ১০০ কোটির ঘরে। কিছু ক্ষেত্রে নিজের ছবির প্রযোজনাও করছেন অভিনেতারা। সে ক্ষেত্রেও ছবিমুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে দোটানায় পড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। যেমন ‘লক্ষ্মী’র মুক্তির সময়ে ডিজিটাল মুক্তি নিয়ে দোলাচলে ছিলেন অক্ষয়। পরে ওটিটি রিলিজ়ের সঙ্গেই দুবাই, অস্ট্রেলিয়ায় ছবিটি হলে মুক্তি পায়। কিন্তু অক্ষয়, আমির খান, সলমন খানের মতো অভিনেতাদের পায়ের তলার জমি বলিউডে এতটাই পোক্ত যে, তাঁদের মতের বিরুদ্ধে প্রযোজকরা পদক্ষেপ করেন না। তুলনায় নবীন অভিনেতাদের নিজেদের জায়গা সুরক্ষিত করতে এ ধরনের শর্ত রাখতে হচ্ছে। বক্স অফিস হিটের উপরে নির্ভর করে ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্টও পান অভিনেতারা।

অন্য দিকে অনিশ্চয়তার বাজারে ছবি কতটা চলবে, তাঁর ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নন অনেক প্রযোজকই। তাঁরা চাইছেন, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ছবি বিক্রির সময়ে ছবির খরচ ধরে লাভ হয়, এমন একটা অঙ্কে ছবি বিক্রি করতে। ফলে দ্বন্দ্ব বাঁধছে এখানেই। তবে এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। যেমন ‘এইটিথ্রি’ ছবিটির জন্য অনেক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সম্ভাব্য বক্স অফিসের লভ্যাংশ হিসেব করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত দর হেঁকেছিল। কিন্তু ছবিটি ওটিটি মাধ্যমে রিলিজ় করেননি নির্মাতারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় থেকেছেন। আবার ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’ ছবির ডিজিটাল মুক্তি নিয়ে ডেভিড ধওয়ন ও বাসু ভাগনানি একমত হলেও রাজি ছিলেন না বরুণ ধওয়ন। হল রিলিজ়ের পক্ষেই মত ছিল বরুণের। এর আগে ‘জুড়ুয়া টু’ বক্স অফিসে ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করায় পুরনো ছবির রিমেক করায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’-এর ডিজিটাল মুক্তির পরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন।

অনিশ্চিত সময়ে ডিজিটাল ছাড়া দর্শকের কাছে পৌঁছনোর পথও ছিল না। সে সময়ে প্রযোজকদের সমস্যার কথা ভেবে অভিনেতারাও হয়তো সায় দিয়েছেন। কিন্তু স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ওটিটি রিলিজ়ে কতটা আগ্রহ থাকবে অভিনেতা বা ছবির নির্মাতাদের, সেটাও বড় প্রশ্ন।

অন্য বিষয়গুলি:

OTT platform
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy