Bollywood actress laila khan murdered with iron rods by her step father dgtl
Laila Khan
Laila Khan: খুন হন সৎবাবার হাতে, রাজেশ খন্নার এই নায়িকার কঙ্কাল উদ্ধার হয় মৃত্যুর দেড় বছর পর
বলিউড থেকে আচমকাই বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। তার দেড় বছর পর মুম্বই থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে একটি হলিডে হোম-এর বাগান থেকে উদ্ধার হয় তাঁর কঙ্কাল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২১ ১১:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
বলিউডে খুব কম সময়ের জন্য ছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই সুপারস্টার রাজেশ খন্নার সঙ্গে ছবি করে ফেলেছিলেন। ওই একটি ছবি থেকেই যথেষ্ট পরিচিতিও পেয়ে গিয়েছিলেন। নামের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী তকমাও জুড়ে গিয়েছিল। সেই বলি নায়িকার মৃত্যু ছিল মর্মান্তিক। যেন কোনও হিন্দি থ্রিলার ছবি।
০২১৭
বলিউড থেকে আচমকাই বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। তার দেড় বছর পর মুম্বই থেকে ১২৬ কিলোমিটার দূরে একটি হলিডে হোম-এর বাগান থেকে উদ্ধার হয় তাঁর কঙ্কাল। তিনি বলি নায়িকা লায়লা খান।
০৩১৭
লায়লার জন্ম ১৯৭৮ সালে মুম্বইয়ে। তাঁর পরিবার খুব বড়। তাঁর মা সেলিনার ৩টি বিয়ে। প্রথম স্বামীর সন্তান লায়লা এবং তাঁর ভাইবোনেরা। পরিবার যথেষ্ট অবস্থাপন্ন ছিল তাঁদের। মা এবং বাবা দু’জনেরই কাপড়ের ব্যবসা ছিল।
০৪১৭
মায়ের ব্যবসায় হাল না ধরে লায়লা অভিনয়ের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। ২০০৮ সালে তিনি সুপারস্টার রাজেশ খন্নার সঙ্গে ‘বফা: এ ডেডলি লভ স্টোরি’-তে অভিনয় করে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়ে যান।
০৫১৭
এর পর ২০১১ সালে ‘ফারার’ ছবিতে অভিনয় করেন। লায়লা চেয়েছিলেন বড় প্রযোজক হতে। নিজোর প্রযোজিত ছবিতে শাহিদ কপূর কিংবা সইফ আলি খানের সঙ্গে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন তিনি। তা আর হয়ে ওঠেনি।
০৬১৭
এর মধ্যে মুনির খানের সঙ্গে বিয়ের পর নানা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠতে শুরু করে তাঁর বিরুদ্ধে।
০৭১৭
মুনির ছিল বাংলাদেশের এক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। এ ছাড়া লায়লার নাম জড়িয়ে পড়ে লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গেও। এর পর থেকেই পুলিশের নজরে ছিলেন লায়লা।
০৮১৭
সেটা ছিল ২০১১ সাল। লায়লার মা সেলিনা তখন তৃতীয় বার বিয়ে সেরে ফেলেছেন। তাঁর তৃতীয় স্বামী পারভেজ ইকবাল আসলে ছিল লস্কর-ই তৈবার সদস্য। সেই থেকেই লায়লা এবং তাঁর পুরো পরিবারের উপর জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশ রাখার অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
০৯১৭
মা সেলিনা ঠিক করেছিলেন সমস্ত সম্পত্তি বেচে পাকাপাকি ভাবে দুবাইয়ে চলে যাবেন। ২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারি রাতে সৎ বাবা পারভেজ, মা সেলিনা এবং ৩ ভাইবোনকে নিয়ে লায়লা মুম্বইয়ের কাছে ইগতপুরীতে এক হলিডে হোম-এ ছুটি কাটাতে যান। তার পর থেকেই আর কোনও খোঁজ ছিল না পুরো পরিবারের।
১০১৭
রাখি সবন্তের ভাই রাকেশের একটি ছবির শ্যুটিং চলছিল তখন। তাতে অভিনয় করছিলেন লায়লাও। সে কারণে বারবারই লায়লার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন রাকেশ। লায়লার ফোন বেজে যাচ্ছিল।
১১১৭
অন্য দিকে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারছিলেন না লায়লার আসল বাবা নাদির শাহ পটেলও।
১২১৭
রাকেশ এবং নাদির শাহ দু’জনেই নিখোঁজ ডায়েরি করেন পুলিশের কাছে। খোঁজ শুরু করে পুলিশও। দীর্ঘ দিন তদন্ত চালানোর পর কোনও খোঁজ না পেয়ে পুলিশ অনুমান করেছিল, তাঁরা বোধ হয় সকলেই দুবাই চলে গিয়েছেন।
১৩১৭
এই ঘটনার দেড় বছর পর তদন্তের কিনারা হয় যখন পারভেজ জম্মু-কাশ্মীরে একটি অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছে মুম্বই পুলিশ আগেই লায়লার পরিবারের প্রতিটি নিখোঁজ সদস্যের তালিকা পাঠিয়ে রেখেছিল।
১৪১৭
তালিকায় পারভেজের নামও ছিল। মুম্বই নিয়ে আসা হয় পারভেজকে। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেন পারভেজ। জানায়, ওই রাতেই পারিবারিক পার্টি সেরে স্ত্রীর সেলিনার সঙ্গে ঘরে ফিরে যায় সে।
১৫১৭
ঘরে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী সেলিনা তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বিক্রির ভার দিয়েছেন দ্বিতীয় স্বামীকে। পারভেজকে বিশ্বাস করতে পারতেন না তিনি। এর পরই বাগবিতণ্ডা থেকে খুন করে ফেলে সেলিনাকে।
১৬১৭
মায়ের চিৎকার শুনে লায়লারা সবাই ছুটে যান। পারভেজ এক এক করে তাঁদের সবাইকে খুন করে। তার পর ওই হলিডে হোমের নিরাপত্তারক্ষীর সাহায্য নিয়ে পাশেই মাটি খুঁড়ে সবক’টি দেহ পুঁতে দেয়। সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ করে গর্তের মধ্যেই ফেলে দেয়। কিন্তু লায়লার মোবাইল বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিল সে।
১৭১৭
সে কারণেই রাকেশ বা তাঁর বাবা নাদির শাহ যখন ফোন করছিলেন লায়লার ফোন বেজে যাচ্ছিল। পারভেজ জানিয়েছিল, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে সকলকে নৃশংস ভাবে খুন করেছিল। পারভেজের দেখানো জায়গা খুঁড়ে লায়লা, তাঁর মা এবং ভাইবোনেদের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।