বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে চান না মানব। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার শহর প্রত্যক্ষ করবে এক মা-কে। যে মা নাস্তিক, অথবা নিরীশ্বরবাদী। হয়তো শুধু নিজের উপর বিশ্বাস রেখেই এগিয়ে যেতে চান জীবনের পথে। আর যে হেতু তিনি মা, তাই তার চারপাশে অনিবার্য ভাবেই থাকে তাঁর সন্তান। গল্পের টানাপড়েন তৈরি করবে নাট্যমুহূর্ত আর সাক্ষী থাকবেন কলকাতার নাট্যামোদী দর্শক।
নিজের লেখা ছোটগল্প ‘মা’ থেকে মানব কল তৈরি করেছেন নাটক ‘ত্রাসদি’। পরিচালনাও তাঁর। সে নাটকেরই প্রদর্শন থিয়েটারপ্রেমী কলকাতায়, এক নাট্যোৎসবে। আগের দিন মানব মুখোমুখি হলেন সাংবাদিকদের। আর সেখানেই স্পষ্ট জানালেন, কলকাতায় নিজের নাটক নিয়ে এলেও বাংলা ছবিতে কাজ করতে চান না মোটে! কিন্তু কেন?
‘যযন্তরম মমন্তরম’ (২০০৩) ছবি থেকে তাঁর বলিউড সফর শুরু। ঘন ঘন তাঁকে পর্দায় দেখা যায় না, বরং খানিক বিরতি নিয়ে অন্য ধারার ছবি করতেই পছন্দ করেন মানব। ‘তুমহারি সুল্লু’, ‘বদলা’, ‘অজিব দাস্তা’র মতো ছবির অভিনেতাকে ২০২২-এ শেষ বার দেখা গিয়েছিল ‘জলসা’ ছবিতে। তার পর যেন বলিউড থেকে উধাও তিনি।
তবে এ সব নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না অভিনেতা। আপাতত মঞ্চে নাটক পরিচালনা নিয়েই ব্যস্ত তিনি। ভাবছেন না ছবির কথা। অভিনেতার কথায়, “আমি কোনও কিছুকেই খুব বেশি গুরুত্ব দিই না। আমি শুধু অভিনয় করতে চাই আর নিজের মতো বাঁচতে চাই।”
রবিবার ‘ত্রাসদি’ মঞ্চস্থ হবে কলকাতার এক উৎসবে। সেই জন্যই এই শহরে অভিনেতা। পরনে জলপাই রঙের টি-শার্ট, কালো প্যান্ট, পায়ে স্পোর্টস শু। হাতে ধোঁয়া ওঠা কফির কাপ নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বললেন, “আমি এর আগেও এই শহরে এসেছি। কলকাতার খাবার ও মানুষজনকে ভাল লাগে আমার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে নিয়ে একটি কাজের জন্য শান্তিনিকেতনেও গিয়েছিলাম।” এই শহরকে ভালবাসলেও বাংলা ছবিতে কাজ করার কোনও ইচ্ছে বা পরিকল্পনা নেই মানবের।
বাংলা ছবিতে অভিনয়ের প্রসঙ্গে মানবের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “আমি বাংলা ভাষাই তো জানি না। একমাত্র কোনও বাংলা ছবিতে অবাঙালির চরিত্র হলে তা-ও কাজ করতে পারি। কিন্তু বাংলা ভাষা না জেনে বাঙালি সেজে অভিনয় করা মানে এই ভাষাটাকে অসম্মান করা। আমার সামনে কেউ হিন্দিভাষী বা উত্তর ভারতীয় হওয়ার চেষ্টা করে অভিনয় করলে আমার তো মোটেই ভাল লাগবে না।”
অভিনয়ের সঙ্গে একাধারে ছবির পরিচালনা, লেখালিখি, নাটকের পরিচালনা করছেন মানব। অভিনেতার কথায়, “আমি একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে ভালবাসি। দারুণ কিছু মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। আর আমার কাছে অনেক সময়। নিজেই বুঝতে পারি না, এত সময় নিয়ে আমি কী করব।”
মানবের এই নাটক তাঁর লেখা প্রথম বইয়ের এক ছোটগল্পের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। সেই ছোটগল্পের নাম ‘মা’। সেই মা নাস্তিক। স্বাভাবিক ভাবেই সেই মায়ের বিপ্রতীপে উঠে এসেছে পুরুষের অবস্থান। সেই দ্বন্দ্বেই তৈরি হবে নাট্যমুহূর্ত।
কিন্তু বক্স অফিসে আজকাল শুধুই পৌরুষের জয়জয়কার। উগ্র, উন্মত্ত পুরুষের আধিপত্যই সেই সব ছবিতে। নারী সেখানে যেন ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করার জন্য পার্শ্বচরিত্রের মতোই। সমাজে এই ধরনের ছবির জন্য কী প্রভাব পড়তে চলেছে? মানব বলেন, “দর্শককেই এখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাঁরা কী দেখতে চান। আমিও পাল্টা প্রশ্ন করতে পারি, কেন এই ছবিই মানুষ পছন্দ করছে।”
অভিনয় থেকে লেখালিখি, এত কিছু কাজ করেও সমাজমাধ্যম ও জীবনযাপনে ছাপোষা ছাপ মানবের। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা হাসতে হাসতে বলেন, “আমি এমনই একঘেয়ে ধরনের মানুষ। পার্টিতে যাই না। সাধারণ জীবনযাপন। তাই সমাজমাধ্যমেও সেটাই তুলে ধরা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy