ইদানীং একটি প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। একটা ছবি বানিয়ে নির্মাতারা যদি বোঝেন কোথাও গোলমাল হল, আগেভাগেই প্রচারে বলে দেন— ‘ছবিটা লার্জার দ্যান লাইফ’ বা ‘বাস্তবধর্মী নয়’। তাতে সমস্যা নেই। ছবি তাঁদের। কোন ব্র্যাকেটে ফেলবেন, সেটাও তাঁদের ব্যাপার। কিন্তু সামান্য যুক্তিবুদ্ধির ধার ঘেঁষে যদি চিত্রনাট্য লেখা যায়, কমেডি কি কম পড়ে?
‘বিবাহ অভিযান’ সম্পর্কে পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত বলেছিলেন, ছবিটি হাইপার রিয়্যালিটি জ়োন থেকে দেখা। সেই অনুযায়ীই, চরিত্রদের গঠন বা কার্যকলাপ। রজত (রুদ্রনীল ঘোষ) শপিং মলের ম্যানেজার। তার চরিত্রে যুক্তিবাদী কমিক ছাপ রাখা হয়েছে। শখ ছিল লম্বা বৌয়ের। কিন্তু দু’ইঞ্চি লম্বা বৌ মায়ার (সোহিনী সরকার) মানত-মাদুলি-বাংলা সিরিয়ালের ত্রিফলায় ‘লজিক্যাল’ রজত মোটামুটি কাত!
রজতের বন্ধু অনুপম (অঙ্কুশ) একটি অফিসে কর্মরত। তার বৌ রাই (নুসরত ফারিয়া) আবার র্যাডিক্যাল ফেমিনিস্ট। কথায় কথায় ঝান্ডা তোলে। তার বর ঘর মোছে, রান্না করে। সে ট্রেন্ডি জামাকাপড় পরে আর শপিং করে। কমেডি তো, তাই এই চড়া স্টিরিয়োটাইপগুলো রাখতেই হতো। না হলে লোকে হাসবে কেন!
বিবাহ অভিযান
পরিচালনা: বিরসা দাশগুপ্ত
অভিনয়: অঙ্কুশ, রুদ্রনীল, সোহিনী, নুসরত, অনির্বাণ, প্রিয়ঙ্কা
৪/১০
এই বৌদের থেকে পালাতেই রজত আর অনুপম একটা প্ল্যান আঁটে। কিন্তু সেই প্ল্যানিংয়ের চক্করেই মস্ত ফাঁদে পড়ে যায় তারা। পুরোটাই সিচুয়েশনাল কমেডির মোড়কে। কিন্তু মোড়কটা একটু স্মার্ট হলে, তার ভিতরকার সংলাপগুলো একটু কম ক্লিশে হলে বা হিউমারটা স্বতঃস্ফূর্ত হলে ছবিটা ভাল ‘অভিযান’ হতেই পারত। ছবি জুড়ে হাসানোর চেষ্টাগুলো বড়ই আরোপিত। একটি সিকোয়েন্সে হাসির খোরাক জোগাতে গিয়ে ‘জব উই মেট’কেও নকল করতে হয়েছে দেখে কষ্ট হয়! তবে রুদ্র-অঙ্কুশের কমিক ‘টুইনিং’ দর্শককে হাসাবে। নুসরত ফারিয়াকে মন্দ লাগেনি। সোহিনী তো ভাল অভিনেত্রীই। অনির্বাণ (ভট্টাচার্য) ও প্রিয়ঙ্কাও (সরকার) ছোট পরিসরে যতটা সম্ভব করেছেন। রুদ্রনীলের একটি সংলাপ ছবির নিরিখে বেশ আয়রনিক লাগল। রজত বলে, ‘বিদ্যার দেবী বিদ্যা বালন বলেছেন, ছবি করতে তিনটে জিনিস লাগে...’ তার একটির কথাও যদি নির্মাতারা মাথায় রাখতেন!
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy