Bhumika Chawla could not make it big in Bollywood dgtl
bollywood
যোগ প্রশিক্ষককে বিয়ে এবং দাম্পত্যে ফাটলেই কি অকালে শেষ ‘তেরে নাম’ নায়িকার কেরিয়ার?
২০০৩ সালে মুক্তি পায় ভূমিকার প্রথম হিন্দি ছবি ‘তেরে নাম’। তখন সদ্য সদ্য ভেঙে গিয়েছে সলমন-ঐশ্বর্যা সম্পর্ক। প্রেমে ধাক্কা খেয়ে ভাইজান তখন বিধ্বস্ত। ইন্ডাস্ট্রির অনেকের সঙ্গেই তাঁর দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে অভব্য আচরণের কারণে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ১৩:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৬
সলমনের খারাপ সময়ে তিনি তাঁর নায়িকা হয়েছিলেন। তখন ইন্ডাস্ট্রিতে মল্লিকা শেরাওয়াত, বিপাশা বসুর মতো সাহসী নায়িকাদের রমরমা। তাঁদের মাঝে ‘গার্ল নেক্সট ডোর’ হয়ে এসে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন ভূমিকা চাওলা। কিন্তু তার পরেও ‘তেরে নাম’ ছবির নায়িকা ভূমিকা চাওলার পরিচয় হয়ে গেল ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’।
০২২৬
ভূমিকার জন্ম ১৯৭৮ সালের ২১ অগস্ট, দিল্লিতে। জন্মগত নাম, রচনা। বাবা সেনাবাহিনীর আধিকারিক হওয়ায় তাঁদের তিন ভাইবোনের শৈশব কেটেছে কড়া নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে।
০৩২৬
কলেজে পড়ার সময় থেকে অল্পবিস্তর মডেলিং শুরু ভূমিকার। তবে তাঁর পরিবার মডেলিং বা অভিনয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। পরে ভূমিকার জনপ্রিয়তা দেখে হার মানতে বাধ্য হয়।
০৪২৬
১৯৯৭ সালে কাজের সূত্রে মুম্বই চলে আসেন ভূমিকা। কাজ শুরু করেন মিউজিক ভিডিয়োয়। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের ছবিতেও তাঁকে দেখা যাচ্ছিল। প্রথম ছবিতে অভিনয় ২০০০ সালে। ভূমিকা অভিনয় করেন তেলুগু ছবিতে।
০৫২৬
পরের বছর তাঁর তেলুগু ছবি ‘খুশি’ সুপারহিট হয়। জনপ্রিয়তার সুবাদে দু’বছরের মধ্যে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন ভূমিকা। এ বার তাঁর কাছে সুযোগ আসে বলিউড থেকেও।
০৬২৬
২০০৩ সালে মুক্তি পায় ভূমিকার প্রথম হিন্দি ছবি ‘তেরে নাম’। তখন সদ্য সদ্য ভেঙে গিয়েছে সলমন-ঐশ্বর্যা সম্পর্ক। প্রেমে ধাক্কা খেয়ে ভাইজান তখন বিধ্বস্ত। ইন্ডাস্ট্রির অনেকের সঙ্গেই তাঁর দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে অভব্য আচরণের কারণে।
০৭২৬
বলা হয়, ‘তেরে নাম’ ছবির গল্প আদপে সলমন-ঐশ্বর্যার প্রেম নিয়েই লেখা হয়েছে। সতীশ কৌশিকের পরিচালনায় ‘তেরে নাম’ সুপারহিট হয়। এই ছবি সলমনকে ‘ব্যাড বয়’ পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসতেও সাহায্য করেছিল।
০৮২৬
সে সময় আলোচনা উঠেছিল, সলমনের কেরিয়ার নাকি ভাঙনের মুখে। সেই আলোচনার মুখেও যোগ্য জবাব দেয় ‘তেরে নাম’-এর সাফল্য। অন্য দিকে, এই ছবির সুবাদে ভূমিকা দর্শকদের পাশাপাশি বলিউডের হৃদয়ও জয় করে নেন।
০৯২৬
২০০৪-এ অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে ভূমিকার ছবি ‘রান’ সফল হয়নি। তবে ছবির কমেডি সিকোয়েন্স জনপ্রিয় হয়েছিল। সে সময় সলমন একটি ছবিতে ভূমিকাকে অভিনয়ের জন্য বলেন। ছবির নাম ছিল ‘দিল নে জিসে আপনা কঁহা’।
১০২৬
এই ছবিতে সলমন, ভূমিকা ছাড়াও ছিলেন প্রীতি জিন্টা। কিন্তু ছবিটি ফ্লপ হয়। পর পর তিনটি ছবিতে ভূমিকা অভিনীত চরিত্র ছিল একই রকমের। গ্ল্যামার থেকে দূরে, পাশের বাড়ির মেয়ের মতো। ফলে বলিউডে টাইপকাস্ট হয়ে যেতে থাকেন তিনি।
১১২৬
২০০৫ সালে ‘সিলসিলে’ ছবিতে নিজের ইমেজ ভাঙার চেষ্টা করেন ভূমিকা। কিন্তু সেই ছবিও মুখ থুবড়ে পড়ে। পর পর ছবি ব্যর্থ হলেও ভূমিকার কাছে বড় ছবির অফার আসা বন্ধ হয়নি। ‘দিল যো ভি কহে’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে।
১২২৬
কিন্তু বলিউডের মূল স্রোতে আর ফিরে আসতে পারেননি ভূমিকা। প্রথম দিকের দুরন্ত সাফল্যের সঙ্গে নিজের কেরিয়ারের এই চেহারা তিনি মেলাতে পারছিলেন না। ফলে ক্রমশ অবসাদ ও হতাশার শিকার হয়ে পড়ছিলেন।
১৩২৬
অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে যোগাভ্যাস শুরু করেন ভূমিকা। সলমন, মাধুরীর মতো তারকা যাঁর কাছে যোগচর্চা করতেন, সেই ভরত ঠাকুরের দ্বারস্থ হন ভূমিকা। ভরতের সান্নিধ্য তাঁর জীবনে আমূল পরিবর্তন আনে। কিছু দিনের মধ্যেই ভরতের প্রেমে পড়েন ভূমিকা।
১৪২৬
প্রেমের কথা প্রথম থেকেই স্বীকার করলেও বিয়ে নিয়ে তখনও পরিকল্পনা ছিল না। নিজের কেরিয়ার বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন ভূমিকা। কিন্তু ‘ফ্যামিলি’ বা ‘গাঁধী মাই ফাদার’ ছবিতে অভিনয় করেও তাঁর কেরিয়ারের কোনও পরিবর্তন হয়নি।
১৫২৬
তার পরেও বড় ছবির অফার পান ভূমিকা। ইমতিয়াজ আলি তাঁকে ও ববি দেওলকে নিয়ে ‘জব উই মেট’ ছবি করবেন বলে ঠিক করেন। ভূমিকা ভেবেছিলেন এই ছবি দিয়েই তিনি বলিউডে সেকেন্ড ইনিংস শুরু করবেন।
১৬২৬
কিন্তু পরে প্রযোজকের চাপে ইমতিয়াজ বাধ্য হন নায়ক নায়িকা পাল্টে ফেলতে। ববি দেওল ও ভূমিকা চাওলার বদলে আসেন করিনা ও শাহিদ কপূর। সুপারডুপার হিট ছবিটি হাতছাড়া হয়ে যায় ভূমিকার।
১৭২৬
এর পরই হতাশ ভূমিকা বলিউড ছেড়ে দেন। ভরত কুমারকে বিয়ের পরে তিনি হায়দরাবাদে চলে যান। সেখানে দু’জনে প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেন। ভূমিকা অভিনয় করতে থাকেন শুধুমাত্র দক্ষিণী ছবিতেই। পাশাপাশি ‘মায়ানগর’ নামে একটি পত্রিকাও শুরু করেন।
১৮২৬
প্রযোজনা সংস্থা থেকে একটি ছবিও প্রযোজনা করেন। কিন্তু সেটি সুপারফ্লপ হয়। মুখ থুবড়ে পড়ে পত্রিকাটিও। এই দু’টি ঘটনায় কয়েক কোটি টাকা লোকসান হয়। পরে ভূমিকা জানিয়েছিলেন, স্বামী ও কিছু বন্ধুর কথায় তিনি ছবি প্রযোজনা করেছিলেন। যা তাঁর কেরিয়ারের বড় ভুল ছিল।
১৯২৬
এর পর ভূমিকা ঠিক করেন তিনি শুধু অভিনয়ই করবেন। দক্ষিণী ছবির ইন্ডাস্ট্রিতেই মন দেন তিনি। কয়েক বছর পরে ভূমিকার টাকা আবার ব্যবসায় নিয়োগ করেন ভরত ঠাকুর। তিনি দুবাইয়ে যোগচর্চার কেন্দ্র শুরু করেন।
২০২৬
ভরত ঠাকুরের নতুন ব্যবসা সফল হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা দেখা দেয়। গুঞ্জন ওঠে, তিনি দুবাইয়ে নিজের হাই প্রোফাইল ক্লায়েন্টের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত। গুঞ্জন ক্রমে গাঢ় হওয়ায় ভূমিকাও দুবাইয়ে থাকতে চলে যান।
২১২৬
কিন্তু স্ত্রীর কাছে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন ভরত ঠাকুর। কিন্তু ভূমিকা তাঁর কথা বিশ্বাস করেননি। তাঁদের দাম্পত্য অশান্তি মাঝে মাঝেই চলে আসত ফিল্মি গুঞ্জনে। ২০১১ সালে এমনও শোনা যায় বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ভূমিকা।
২২২৬
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মধ্যে সব সমস্যা দূর করে ফেলেন ভরত ও ভূমিকা। দুবাইয়ে ব্যবসার পাট চুকিয়ে চলে আসেন মুম্বই। পরে দাম্পত্যে ফাটলের কথা অস্বীকার করেন ভূমিকা। ২০১৪ সালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন ভূমিকা।
২৩২৬
এর পর সংসার এবং কেরিয়ারই ভূমিকার কাছে পাখির চোখ হয়ে ওঠে। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে তো তিনি পরিচিতি ছিলেনই। কিন্তু তিনি আবার বলিউডে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ২০০৩ ও ২০১৪-র মধ্যে সবদিক দিয়েই বিস্তর ব্যবধান ছিল।
২৪২৬
ভূমিকা জানতেন তিনি আর নায়িকা হতে পারবেন না। তিনি এ বার অভিনয় করেন ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’-তে। সেখানে তিনি সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বোন হয়েছিলেন। কিন্তু দর্শকদের কাছে তাঁর এই কামব্যাক বিশেষ গুরুত্ব পায়নি।
২৫২৬
বরং বলিউডের তুলনায় ভূমিকা অনেক বেশি জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি পেয়েছেন দক্ষিণে। হিন্দি ছবিতে তাঁকে বিশেষ দেখা না গেলেও তামিল ও তেলুগু ছবিতে এখনও নিয়মিত মুখ ‘তেরে নাম’-এর নায়িকা।
২৬২৬
ভরত ও ভূমিকার দাম্পত্যও সব ঝড় কাটিয়ে উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে। নতুন করে বিদেশে যোগচর্চার কেন্দ্র শুরু করেছেন ভরত ঠাকুর। ভূমিকাও উপভোগ করছেন জীবনের নতুন পর্ব।