রবিবার সিনেমা দেখার দিন। ৯ মার্চ দিনটি ব্যতিক্রম। এ দিন কলকাতা দুবাইয়ের ছোট সংস্করণ। প্রেক্ষাগৃহ যেন স্টেডিয়াম। দুপুর দেড়টা থেকে সেখানে ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’র সরাসরি সম্প্রচার — উত্তর থেকে দক্ষিণ, বাছাই করা মাল্টিপ্লেক্সে দেখানো হচ্ছে। আনন্দবাজার ডট কমকে এ কথা জানিয়েছেন সিনেবোদ্ধা শ্যামল দত্ত। খবর ছড়াতেই বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীদের মুখে চওড়া হাসি। ২৫ বছর পরে ২০২৫-এ ‘মিনি বিশ্বকাপ’-এর ফাইনালে ফের ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড মুখোমুখি। মাসের দ্বিতীয় রবিবার হওয়ায় তাঁরা শুটিং থেকে ছুটি পেয়েছেন।
এ দিন সকলেরই কি গন্তব্য মাল্টিপ্লেক্স? ছোট পর্দা ছেড়ে সরাসরি বড় পর্দায় খেলা দেখবেন? তাঁদের পছন্দের খেলোয়াড় কে? দেশ জিতলে কী ভাবে উদ্যাপন করবেন?
জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল ধারাবাহিক ‘ফুলকি’র নায়িকা দিব্যাণী মণ্ডল, ‘রাঙামতী তীরন্দাজ’-এর নায়িকা মনীষা মণ্ডল, ‘কথা’র নায়ক সাহেব ভট্টাচার্য, ‘গৃহপ্রবেশ’-এর উষসী রায়, স্বস্তিকা দত্ত, ধারাবাহিক ‘অমর সঙ্গী’র নায়ক নীল ভট্টাচার্যের সঙ্গে।
ধারাবাহিকে দিব্যাণী বক্সিং চ্যাম্পিয়ন। বাস্তবে কোন খেলা দেখতে ভালবাসেন? প্রশ্ন করতে জবাব এল, “অবশ্যই খেলাধুলো ভালবাসি। তা বলে সব যে দেখতে পারি, তেমন নয়। কারণ, সারা ক্ষণ শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।” রবিবার শুটিং নেই। ছুটির দিনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফাইনালে নিজের দেশ...। কথা শেষের আগেই দিব্যাণীর দাবি, “আমার পছন্দের খেলোয়া়ড় রোহিত শর্মা। আমার থেকেও আমার বাড়ির সকলেই ক্রিকেট দেখেন বেশি। ওঁরা উত্তেজনায় ফুটছেন।” সঙ্গে সঙ্গে ফোনের ও পার থেকে অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্যের গলা। তিনি জোরে বলে উঠলেন, “আমার পছন্দ হার্দিক পাণ্ড্য।” দেশ জিতলে বাড়িতে উদ্যাপন হবে? ‘ফুলকি’ যেন চনমনিয়ে উঠলেন, “এই সুযোগ কেউ ছাড়ে?”
নীল ভট্টাচার্য আর তৃণা সাহা। সদ্য জার্সি উদ্বোধন করলেন। এ দিন তাঁরা কী করছেন?
উভয়ের গলা একটু বেজার। পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের ফ্যাশন শো রবিবারেই। সে জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন। “তারই ফাঁকে মোবাইলে চোখ রাখব। খেলার বিশেষ মুহূর্ত যাতে মিস না করি”, বলেছেন নীল। টসে ভারত হেরেছে। খেলার শেষে কী ফল আশা করছেন? অভিনেতার মতে, “দেশ জিতবে, মন থেকে চাইছি। প্রত্যেক বার ভারত জেতার পর বন্ধুদের নিয়ে জাতীয় পতাকা হাতে বেরিয়ে পড়ি। হুল্লোড়ে, উল্লাসে উদ্যাপনে মাতি। আজও বন্ধুরা থাকবে। বুঝতেই পারছেন কী হবে...”, বলে হেসে ফেললেন তিনি।
প্রথম ধারাবাহিক। প্রথম নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়। মুর্শিদাবাদের মনীষা মণ্ডল ‘রাঙামতী তীরন্দাজ’ হয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন। বাস্তবে খেলা দেখেন? “অবশ্যই দেখি। দেখতে ভাল লাগে।” রবিবারেও নিশ্চয়ই দেখবেন? প্রেক্ষাগৃহে নয়, বাড়িতে বসে ছোট পর্দাতেই ভারত-নিউ জ়িল্যান্ডের ২২ গজের যুদ্ধ দেখবেন। হাতে থাকবে চিপ্স। দেশ জিতলে? “তা-ই যেন হয়”, বলতে বলতে খুশির হাসি ছড়িয়ে গেল তাঁর কণ্ঠে। জানালেন, দেশ জিতলে তিনি বিরিয়ানি আনিয়ে খাবেন! মনীষার কথায়, “উদ্যাপনের এই সুযোগ ছাড়া যায়?”
আরও পড়ুন:
এক দিকে খেলা নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। অন্য দিকে, ব্যতিক্রমীরাও আছেন। যেমন, সাহেব ভট্টাচার্য, অনুপম রায়, স্বস্তিকা দত্ত। সাহেব প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের ছেলে। ফোন তুলে সাফ জানালেন, ফুটবলেই তাঁর জগৎ সীমাবদ্ধ। এই খেলার বাইরে আর কিচ্ছু তিনি বোঝেন না। বাড়িতে কেউ ফুটবলার নন। তবু ক্রিকেট দেখেন না গায়ক-সুরকার অনুপম। তিনিও তাই কাজ নিয়ে ব্যস্ত। কাজ না থাকলে অবশ্য টিভি বা মুঠোফোনে চোখ রাখেন স্বস্তিকা। এ দিন তিনিও শুটিংয়ে ব্যস্ত। ফলে, খেলা দেখা হবে না তাঁর।
রইলেন বাকি ‘বকুল’ উষসী রায়, যিনি ধারাবাহিক ‘বকুল কথা’য় মহিলা ক্রিকেট খেলোয়াড়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শুটিংয়ের সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় উপস্থিত থেকে তাঁকে ব্যাট ধরতে শিখিয়েছিলেন। এ সব মনে করাতেই হতাশা ঝরেছে অভিনেত্রীর কণ্ঠে। তিনিও যোগ দিচ্ছেন অভিষেক রায়ের ফ্যাশন শোয়ে। ফোনে বললেন, “এত ভাল ভাগ্য করে আমরা আসিনি। ছুটির দিনেও প্রয়োজনে ব্যস্ত থাকতে হয়। তবে যে কাজই করি না কেন, সজাগ থাকব। যাতে একটা মুহূর্তও মিস না করি।” এই ব্যস্ততার কারণেই বাড়ির বাকিদের সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া করা হয় না ছোট পর্দার ‘বকুল’-এর। তিনি বলেন, “মন থেকে চাইছি, ভারত জিতে সেই সুযোগ করে দিক। বাড়ির সকলে মিলে জমিয়ে ভালমন্দ খাবার আনিয়ে খাব।”