Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar protest

‘৩১ বছর বাঙালির জন্য নিজেকে সঁপে দিলাম, আজ সেই বাঙালিই আমাকে ট্রোল করছে!’ আক্ষেপ নচিকেতার

আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মুখ খুলেছিলেন। শুরু হয় ট্রোলিং। মনের কথা জানালেন নচিকেতা।

Bengali singer Nachiketa Chakraborty reacts to ongoing trolling amid RG Kar protest

নচিকেতা চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ১৬:৪৬
Share: Save:

আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যের বিশিষ্টদের একটা বড় অংশ মুখ খুলেছেন। মিছিলে হেঁটেছেন। তবে পাশাপাশি প্রতিবাদে শামিল হয়েও তাঁদের একাংশকে কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী।

১৪ অগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সমাজমাধ্যমে নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করেন নচিকেতা। ‘মা তুমি এসো না’ শীর্ষক সেই কবিতা ছড়িয়ে পড়তেই শিল্পীকে নিয়ে শুরু হয় ট্রোলিং। আনন্দবাজার অনলাইনকে নচিকেতা বললেন, ‘‘প্রথম প্রতিবাদ তো আমিই করেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, কারও পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ না করলে ট্রোলিং শুরু হবে!’’ নচিকেতার মতে, প্রতিবাদ কী ভাবে করা উচিত, সেটা একান্তই ব্যক্তির নিজের উপর নির্ভর করে। তাঁর কথায়, ‘‘সেখানে আমাকে শুনতে হচ্ছে, আমি কেন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছি না! বাঙালির এই চেহারা আমার দেখা ছিল না।’’

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় পথে নেমেছিলেন নচিকেতা। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত বছরে রাস্তায় নেমে আমার সারা শরীরে ধুলো জমে গিয়েছে। এখন বয়স হয়েছে। তা ছাড়া আমি কোনও রাজনীতিও করি না।’’ প্রতিবাদে মিছিলে হেঁটেছেন, এমন ব্যক্তিত্বদের নিয়েও ট্রোল হয়েছে বলে মনে করিয়ে দিলেন নচিকেতা। উদাহরণ হিসেবে তিনি অপর্ণা সেনের নাম উল্লেখ করলেন। নচিকেতার যুক্তি, ‘‘আসলে ওরা সমাজ থেকে শিক্ষিত মানুষকে সরিয়ে দিতে চাইছে!’’

‘বৃদ্ধাশ্রম’ থেকে শুরু করে নচিকেতার একাধিক গানে প্রতিবাদের ঝলক মিলেছে। আর জি কর-কাণ্ডে মানুষ যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ করছেন, তা দেখে আপ্লুত শিল্পী। তবে নচিকেতার আক্ষেপ, ‘‘৩১ বছর যে বাঙালির জন্য নিজেকে সঁপে দিলাম, সেই বাঙালিই আজ আমাকে ট্রোল করছে! আমি সত্যিই দুঃখ পেয়েছি।’’ আরজি করের ঘটনার পর ২০ দিন অতিক্রান্ত। বিপরীতে প্রতিবাদ আন্দোলনে রাজনীতি ক্রমশ অন্য দিকে ডানা মেলছে বলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন নচিকেতা। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘নবান্ন অভিযানে ‘ছাত্র’দের আমরা দেখেছি! বাংলা বন্‌ধ। পুরো বিষয়টার মধ্যেই তো রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। চিরকালই দেখেছি, এই ধরনের সামাজিক প্রতিবাদের ক্ষেত্রে এক সময় নজর সরে যায়। সেটা হতে দেওয়া যাবে না।’’ আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে। সুপ্রিম কোর্ট সেখানে নির্দেশ দিয়েছে। তার পরেও রাজ্য জুড়ে হিংসা এবং ভাঙচুরকে ‘লাশের রাজনীতি’ হিসেবেই আখ্যা দিতে চাইছেন নচিকেতা।

নচিকেতার মতে, এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আরজি কর থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই দিগ্ভ্র‌ষ্ট হলেই মুশকিল। নচিকেতা দ্রুত ন্যায়বিচারের পক্ষে। বললেন, ‘‘কেন দেরি হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পাচ্ছেন না। তাঁদের সর্বস্ব দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে! তাই দ্রুত বিষয়টার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’’ সাধারণ মানুষের উপর সাংস্কৃতিক প্রভাব কাজ করছে না বলেই মত নচিকেতার। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি তো মানুষের বোধের উন্নয়নের জন্য গান করেছি। কিন্তু দেখলাম, মানুষের বোধের কোনও উন্নতি হয়নি। তা না হলে, একটি মেয়ের সঙ্গে এ রকম নারকীয় ঘটনা ঘটতে পারে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy