আধুনিক বাংলা নাটকের পথপ্রদর্শক বাদল সরকারের নাটক এ বার সিনেমায়। পদ্মশ্রী সম্মানিত নাট্যকারের লেখা ‘বাকি ইতিহাস’ নিয়ে ছবি তৈরি হচ্ছে টলিউডে। ছবির নাম ‘শহরের উপকথা’।
সমাজের অবক্ষয়ে অবসন্ন এক যুবকের বাঁচতে না চাওয়ার ইচ্ছে নিয়ে গল্প। আর এই নিয়েই এক লেখক দম্পতির কথোপকথন ঘিরে এগিয়েছে সিনেমা। যার চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনাট্যকার আসরাফ শিশির। পরিচালনা করেছেন নবাগত পরিচালক বাপ্পা।
এতদিন থিয়েটার জগতেই ছিলেন বা্প্পা, নিজের নাটকের দল আছে। থিয়েটার পরিচালনাও করেছেন। তবে সিনেমা এই প্রথম। আর প্রথম ছবিতেই কোনও সহজ বিকল্প বেছে না নিয়ে নাট্যকার বাদল সরকারের নাটক নিয়ে কাজ করতে নেমেছেন বাপ্পা।

ছবির একটি মুহূর্তে জয় সেনগুপ্ত ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:
‘‘ওর এই সাহস আর পাগলামিটাই ভাল লেগেছে আমার’’ জানালেন শহরের উপকথার প্রধান চরিত্র অভিনেতা জয় সেনগুপ্ত। টলিউড থেকে বলিউড অবাধ বিচরণ তাঁর। থিয়েটারও করেছেন। ওয়েব সিরিজে তাঁর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সেই জয় সেনগুপ্তই শহরের উপকথার বাঁচতে না চাওয়া যুবক।
গল্পের আরেক প্রধান চরিত্রে রয়েছেন বিদীপ্তা চক্রবর্তী। নিজের চরিত্র নিয়ে এখনই কথা বলতে না চাইলেও বিদীপ্তা জানিয়েছেন, ‘‘বাদল সরকারের নাটক নিয়ে সিনেমা হচ্ছে। শুধু এই জন্যাই সিনেমা করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমার কাছে সিনেমার বিষয়বস্তু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজি না হওয়ার ভাবনা মাথাতেই আসনি তাঁর। তবে পরে ফিল্ম এডিটিংয়ের সময় জানতে পেরেছেন অত্যন্ত ভাল কাজ করেছেন বাপ্পা।
বিদীপ্তা বলেছেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে ফাইন্যান্সার জোগাড় করে কাজ করেছেন ওঁরা। এরকম একটা কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেই ভাল লাগছে আমার।’’
গল্পের অনেকটা জুড়ে রয়েছে সামাজিক অবক্ষয়ের কথা। ইদানীং কালে গা-বাঁচানো প্রতিবাদে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি আমরা। যত বিপ্লব সোশ্যাল মিডিয়াতেই। অথচ বাস্তবে চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে যাই আমরা। সমস্যায় পড়তে বা জড়াতে চাই না। এই সামাজিক অবক্ষয়, স্বার্থসিদ্ধির জীবনযাত্রা, শুধু নিজেরটুকু বুঝে নেওয়ার ইচ্ছেটাই সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। আর এখানেই প্রাসঙ্গিক বাদল সরকারের নাটক ‘বাকি ইতিহাস’। বাদল সরকার ১৯৬৫ সালে লিখেছিলেন এই নাটক। কিন্তু, এখনও তা সামান সময়োপযোগী, জানিয়েছেন পরিচালক। আর সেই জায়গা থেকেই বাদল সরকারের এই নাটককে বেছে নেওয়া।
ছবিতে জয় সেনগুপ্ত ও বিদীপ্তা চক্রবর্তী ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, রজত গঙ্গোপাধ্যায়, লামা হালদার-সহ অনেকে।
‘শহরের উপকথা’ ছবির প্রযোজনার ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন কৃষ্ণ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মস। এ ছাড়া সহ প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে রক্ষিতস অ্যান্ড সনস। ফুট পার্টনার ওয়াই ওয়াই। নবাগত পরিচালকের এমন একটা সাহসী প্রচেষ্টায় ভরসা করে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন।