Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Solanki Roy Interview

আমাদের মনটাই একটা ‘ট্র্যাপ’, কোথায় কখন আটকা পড়ে যায় জানি না: শোলাঙ্কি

সদ্য মুম্বইয়ে গিয়েছেন। শোলাঙ্কির কথায়, ‘‘আমি নিজেই জানি করিনার আলমারিতে কী আছে, কিংবা কর্ণ জোহরের শোয়ার ঘর কেমন দেখতে।’’

শোলাঙ্কি রায়।

শোলাঙ্কি রায়। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ১৬:০৩
Share: Save:

পরনে বেনারসি শাড়ি, গলায় ভারী গয়না, লম্বা একঢাল চুল, চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। এমন সাজগোজ করেই বন্দি হয়ে গেলেন শোলাঙ্কি রায়। সম্প্রতি এমন লুকেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। যদিও ব্যক্তি শোলাঙ্কি আলাদা। ছোট করে কাটা চুল। বার বার বলেছেন টেলিভিশনে এত লম্বা সময়ের দায়বদ্ধতা এখন অন্য রকম কিছু করতে চান। সাধারণ বোকাবাক্স মানে টিভি। আর সেখানেই বন্দি হয়ে পড়তেই ছটফট করছেন তিনি।

দেবালয় ভট্টাচার্যের নতুন সিরিজ় ‘বোকাবাক্সতে বন্দি’। একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। সেখানেই নায়িকার চরিত্রে দেখা যাবে শোলাঙ্কি। শুটিং করতে গিয়েই বন্দি হয়ে পড়লেন তিনি। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে শুটিং করতে গিয়ে তেমন কোনও অভিজ্ঞতা হয়নি। শোলাঙ্কির কথায়, ‘‘ আমার সমস্যা একটাই, খুব একটা ভয় পাই না, টেনশন করি বেশি। তবে আমাদের মনটাই একটা ‘ট্র্যাপ’, আমরা কোথায় কখন আটকা পড়ে যাই জানি না। তাই আমি চাইব না কখনও আটকা পড়ে যেতে।’’

শেষ বার টেলিভিশনের পর্দায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল ‘গাঁটছড়া’ ধারাবাহিকে। মাঝে অবশ্য একটি সিনেমা করেছেন। প্রায় ১০ বছরের কেরিয়ার। শোলাঙ্কির একটা বড় দর্শক রয়েছে যাঁরা তাঁকে ছোট পর্দায়ই দেখতে পছন্দ করে। গত দু’বছর ধরে বিরতি নিয়েছেন, আগামী দিনেও খুব শীঘ্রই ছোট পর্দায় ফেরার পরিকল্পনাও নেই শোলাঙ্কির। এই মুহূর্তে তিনি ব্যস্ত মুম্বইয়ে। বাংলা ছেড়ে মুম্বইয়ে নিজের ভাগ্যপরীক্ষা করতে চান শোলাঙ্কি। তবে এখানে কাজ করবেন না তেমনটা নয়। ‘বোকাবাক্সে বন্দি’ হয়ে আসছেন খুব শীঘ্রই। কিন্তু এই ‘বোকাবাক্স’-এ তো নায়িকাকে দেখা যেত এত দিন, এ বার সেখানেই তিনি বন্দি!

‘বোকাবাক্সতে বন্দি’ সিরিজ়ের দৃশ্যে শোলাঙ্কি।

‘বোকাবাক্সতে বন্দি’ সিরিজ়ের দৃশ্যে শোলাঙ্কি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

ছোট পর্দার নায়ক-নায়িকাদের অভিযোগ থাকে তাঁরা নাকি টেলিভিশনে একটানা কাজ করতে করতে অনেক সময় আটকা পড়ে যান! সহমত শোলাঙ্কিও। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে আমি বন্দিদশা বলব না, তবে ছোট পর্দায় কাজের ধরনটা এমন যে অনেকটা সময় দিতে হয়। একটা কাজ মানে এক থেকে দেড় বছর সময় দিতে হয়। অন্য কাজগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া যায় না। একঘেয়েমি চলে আসে। গত ১০ বছর ধরে এই মাধ্যমটাতে কাজ করছি আমি। তাই এখন অনেক বেশি সিনেমা, ওয়েব শো করতে চাইছি। খুব শীঘ্রই টিভির পর্দায় ফেরার পরিকল্পনাও নেই আপাতত।’’

টেলিভিশনে নারী চরিত্র বেশ গতেবাঁধা। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর এমনটাই অনেকে অনুযোগ করে থাকেন। শোলাঙ্কি যদিও তেমনটা মনে করেন না। তাঁর কথায়,‘‘ আমার করা চরিত্রগুলো ‘কাদম্বিনী’ হোক কিংবা ‘খড়ি’, সকলেই প্রতিবাদী। তাই বাস্তবের শোলাঙ্কির তাঁদের সঙ্গে সেই মিলটা রয়েছে।’’

কিন্তু নিজের সাজানো ক্ষেত্র ছেড়ে মুম্বইয়ের নতুন করে চেষ্টা? শোলাঙ্কির কথায়, ‘‘নতুন জায়গা। এই শহরটা ছোটবেলা থেকেই আমার ভাল লাগত। এখানে ছোট থেকেই থাকতে চাইতাম। কলকাতায় আমাকে লোকে চেনে, বহু বছর কাজ করেছি, এখানে তুলনামূলক নতুন। অডিশন দিচ্ছি । কলকাতায় সে ভাবে অডিশন দিতেই হয়নি। এই অডিশন দেওয়াটাও একটা শিল্প, সেটা আমি মুম্বইয়ে শিখছি। আমার তো ভাল লাগে অডিশন শুট করতে। জায়গাটা বড়, প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি। সিরিয়ালের প্রস্তাব এসেছিল, তবে রাজি হইনি।’’

ছোট পর্দার নায়িকা, তাই কি ভাবমূর্তি ভাঙার তাগিদ অনুভব করেন? শোলাঙ্কির কথায়, ‘‘আমার ভাবমূর্তি তখনই ভেঙে গিয়েছিল যখন ‘মন্টু পাইলট’ করেছিলাম। আর আমার দর্শক আমি যেমন, সে ভাবেই গ্রহণ করেছেন। ইমেজ গড়ার জন্যই কিছু করিনি, তাই ভাঙার জন্য নতুন কী করব! আর এখন তারকাএবং দর্শকের মধ্যে দূরত্ব কমে এসেছে। আমি নিজেই জানি করিনার আলমারিতে কী আছে, কিংবা কর্ণ জোহরের শোয়ার ঘর কেমন দেখতে।’’

২০২২ সালে শোলাঙ্কির ‘বাবা বেবি ও’ মুক্তির পর কি ভাগ্য বদল হয়েছিল? শোলাঙ্কির কথায়, এই ছবিটা দর্শক মহলে সাড়া ফেলেছিল। যদিও ‘বাবা বেবি ও’ ছবির পর প্রস্তাব পাইনি, তার পর ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ ছবিটা হল। আসলে টেলিভিশন করছিলাম বলে প্রস্তাব আসেনি। ধারাবাহিক করলে অনেক পরিচালকই ছবিতে নেওয়ার কথা ভাবেন না।”

‘বাবা বেবি ও’ ছবির পোস্টার।

‘বাবা বেবি ও’ ছবির পোস্টার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

মুম্বই শহরটা যেমন স্বপ্নের কারবার করে, তেমনই স্বপ্নভঙ্গ হয় অনেকের।শোলাঙ্কির বন্ধু রয়েছেন সেই শহরে। বেশ কয়েক বছর ধরেই বলিউডে সোহম মজুমদার কাজ করছেন, তিনি কি সাহায্য করছেন কিছু? যদিও এই প্রশ্নে খানিক বিরক্ত অভিনেত্রী। শোলাঙ্কির কথায়, ‘‘বেণীদির কাছে ওয়ার্কশপ করেছিলাম। সেখানে দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ আসেন। আমারও অনেক বন্ধু হয়েছে। কোনও এক জনের নাম নেওয়া যাবে না। তবে শহরটা মানুষকে ধাক্কা দেয়, নড়েচড়ে বসতে সাহায্য করে। আমার জন্য ভাল, আমার সেই ধাক্কাটার প্রয়োজন পড়েছিল।’’ সোহমের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব নিয়ে নানা গুঞ্জন কান অবধি পৌঁছয় কি? শোলাঙ্কি যদিও এ সব নিয়ে ভাবিত নন। তাঁর কথায়, ‘‘সোহম বন্ধু। বাকি ট্রোলিং, নেতিবাচক কথা পাত্তা দিই না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy