Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
irabotir chupkotha

‘ইন্ডাস্ট্রিতে এসেও প্রচুর বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি... ইন্ডাস্ট্রিরই লোকজন’

তিনি ‘ইরাবতীর চুপকথা’র ইরাবতী। তিনি মনামি ঘোষ।বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের মতো অবস্থা তাঁর। কেন?

ইরাবতীর চরিত্রে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মনামি।  ছবি: নিজস্ব চিত্র।

ইরাবতীর চরিত্রে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মনামি। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

মৌসুমী বিলকিস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ১৮:২৬
Share: Save:

এই মুহূর্তে ইরাবতীর জীবন কেমন চলছে?

বাড়ির সবার সঙ্গে ইরা মুর্শিদাবাদ বেড়াতে এসেছে। জায়গাটা এক্সপ্লোর করছে, সুন্দর সুন্দর সিন হচ্ছে, সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে, সবাই ভিজছে, গান গাইছে... খুশির সিন চলছে। ওইদিকে প্ল্যান চলছে কী ভাবে ইরার ক্ষতি করা যায়... ইরা এবং বাচ্চার। ইরা কী ভাবে মোকাবিলা করে দেখা যাক।

আপনার সঙ্গে ইরাবতীর সাদৃশ্য আছে?

ইরা অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে। এখন বিবাহিত, বাচ্চা হবে... অনেক রেসপন্সিবিলিটি এসেছে। মনে স্বাধীন হলেওএখন কিছু কিছু জায়গায় কম্প্রোমাইজ করছে।কিছু জায়গায় নিজের এথিক্সের বাইরে গিয়েও কাজ করছে। কিন্তু ইনিশিয়ালি আমরা যে ইরাকে দেখেছি তার সঙ্গে আমার মিল আছে।নিজে রোজগার করে, পুরো সংসারের দায়িত্ব নেয়।ইরা ভাবে, মানুষকে ভালবেসে ভাল করা যায়, শাস্তি দিয়ে নয়। তবে ইরা একটা মানুষের থেকে অনেকবার ঠকার পরেও মানুষটাকে বিশ্বাস করে। একটা মানুষ আমাকে চার বার ঠকালে পাঁচ বারের বার আমি তাকে সারা জীবনের জন্য বিশ্বাস করব না।

ইরাবতী এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এমনটাই বলছেন মনামি।

এই সমাজ ব্যবস্থা আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হতে চাওয়া মেয়েদের পক্ষে কতটা চাপের?

যদি নিজেকে দিয়ে বিচার করি... আমি যদি আমার কাজের জায়গাটা ম্যানেজ করে নিতে পারি তাহলে আমার কাছে আর কিছুই চাপের না। আমাকে বাড়িতে কিচ্ছু করতে হয় না, কিচ্ছু সামলাতে হয় না, জলটাও হাতে তুলে খেতে হয় না... টাচউড। তো সেই কারণে আমার পক্ষে সামলানোটা সুবিধে। কিন্তু যাদের বাড়ি ফিরে আবার সবটা সামলাতে হয়, তাদের পক্ষে ডেফিনিটলি অসুবিধে। আমি যে ভলিউমে কাজ করছি সেই ভলিউমে কাজ করার পর যদি আমাকে বাড়িতে গিয়ে ঘর গোছাতে হত বা কাউকে খেতে দিতে হত বা বাচ্চা সামলাতে হত তাহলে ডেফিনিটলি চাপের ছিল... খুব চাপের... অসুস্থ হয়ে পড়তাম।

ডাক্তার রেস্ট নিতে বললেন?

হা হা হা...। হ্যাঁ, ক’দিন আগে ডাক্তার দেখালাম। বললেন, ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ারের সময় সোলজাররা যেমন সারাদিন বন্দুকে চোখ লাগিয়ে বসে থাকতো,তোমার শরীরের ওইরকম অবস্থা। সেই অনুযায়ী রেস্ট দরকার।’ ঠিক এভাবেই বলেছেন। এটা লিখতে পারেন।

রেস্ট নেওয়ার প্ল্যানিং করছেন?

ইরাবতীকে ঘিরেই গল্প তো... রেস্ট নেওয়ার কথা ভাবতে হয়তো পারবো না। তবে রোববার করে ছুটি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেটা হলে ভাল।কাজের ভলিউম এত বেড়ে গেছে, রেস্ট নিতে পারছি না।

শ্যুটিংয়ের চাপে বিশ্রামই পাচ্ছেন না ইরা।

বেড়ানো?

মনে আছে প্রত্যেক বছর অ্যাট লিস্ট দুটো জায়গায় বেড়াতে যেতাম। চার/পাঁচ মাস শুটিং ছিল না। খুব ঘুরেছি... ইয়োরোপ, শিমলা, সিকিম,রাজস্থান। এখন সেই সুযোগ নেই।ঘুম থেকে উঠেই রেডি হতে হয়। বাড়ি ফিরতে ফিরতে দশটা। বারোটার মধ্যে ঘুমিয়ে না পড়লে শরীর দিচ্ছে না। শুটিংয়ে এসেও সব সিন আমার। সব মিলিয়ে ঘুম প্রপার হচ্ছে না।

অভিনয়ে অ্যাফেক্ট করে?

মাঝে মাঝে করে। তিন-চারদিন হয়তো ঘুম হল না।সবটার মধ্যেই তার প্রভাব পড়ে... সবকিছুতেই অনিচ্ছা, অনিচ্ছা, অনিচ্ছা... চলতে ইচ্ছে করছে না, উঠতে ইচ্ছে করছে না।যতটা এনার্জি সিনে দেওয়া দরকার সেটা হয়তো দিতে পারি না।

সিস্টেমটা আরও সহজ করার কথাবার্তা হয় না?

অ্যাকচুয়ালি কথা বলেই প্রায় চব্বিশ ঘণ্টার শুট থেকে চোদ্দো ঘণ্টায় এসেছে। আমি বারো ঘণ্টা কাজ করি। বারো ঘণ্টা কাজ মানে পুরো দিনটাই কাজ করা। অবসর থাকলই না। কিন্তু আমি যদি হিরোইন হই ডেফিনিটলি আমার অনেক সিন থাকবে, রোজ শুটিং থাকবে। সেটা ভেবেই এই প্রোজেক্টটা শুরু করেছিলাম। এটা ছাড়া আর অন্য কাজ না করলে দু’-একদিন রেস্ট নিতে পারি। সেটা কি কখনও পসিবল? ‘বেলাশেষে’ করেছি। ‘বেলাশুরু’টা ‘না’ বলে দেব? সেটা তো সম্ভব না। তাহলে মানসিক ভাবে মরে যাব।

আর কী করছেন?

‘বেলাশুরু’ এখনও শেষ হয়নি।বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে যোগ দিতে বাল্টিমোর যাচ্ছি। ‘মাটি’-র স্ক্রিনিংয়ে থাকছি, ডান্স পারফরম্যান্স আছে। নিজের নাচের শো আছে। এরমধ্যে কিছু ছবি ছেড়েছি। যেগুলোর জন্য অতটা বুকে ব্যথা হবে না। সময় দিতে পারব না।

‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর লছমী বা ‘মাটি’-র জিনিয়ার মতো নাচের সুযোগ আসছে?

হ্যাঁ, এর মধ্যেই একটা প্রস্তাব এসেছিল; ছেড়ে দিয়েছি (বিষণ্ণ স্বর)। কতগুলো আইটেম ডান্সের কথাও হয়েছিল। ঠিকঠাক লাগেনি। শিবুদাদের থেকে ‘গোত্র’র অফার ছিল। পনেরো/ ষোলো দিন ডেট চেয়েছিল। বোধহয় মেন চরিত্রটার জন্য। সময় দেওয়া পসিবল ছিল না। এদিকে ‘রঙ্গবতী’-তে নাচের জন্য নন্দিতাদি খুব বলেছিল। বলেছিল, ‘একদমই তোমাকে ভেবেছি।’এটাও করতে পারলাম না। খুব ব্যথা হয়েছে। আলটিমেটলি কে করেছে ঠিক জানি না।শিবুদা-নন্দিতাদির সঙ্গে আমি সবসময় কাজ করতেই চাই।

‘মাটি’-র জিনিয়া করে অ্যাপ্রিশিয়েশন পেলেন?

খুব অ্যাপ্রিশিয়েশন পেয়েছি। চরিত্রটা একদম অন্যরকম, একটা বিশেষমিষ্টি ভঙ্গিতে কথা বলে।যতটুকু অংশ জুড়ে আমার অ্যাপিয়ারেন্স সেটুকু নাচ, গান, গ্ল্যামার জুড়ে খুব লাইভলি। চরিত্রটাও পপুলার হয়েছে।করেও ভাল লেগেছে।

ভবিষ্যতের কোনও প্ল্যানিং...

একটা তো অবশ্যই আছে, পৃথিবী ট্রাভেল করা। এখন পসিবল নয়। ফাঁকা থাকলেই চেষ্টা করবো। প্লাস ইচ্ছে আছে নাচ নিয়ে কিছু করার। ‘ইরাবতী’-র ঠাম্মি সুছন্দ্রাদি খুব সুন্দর গল্প লেখেন। মাঝে মাঝে মনে হয় সুছন্দ্রাদির গল্প নিয়ে যদি কোনও প্রোডাকশন করা যায়। এখন এত রকম মিডিয়া হয়ে গেছে, অনেক রকম ভাবেই বানানো যায়।অভিনয় হয়তো করব না। কিন্তু প্রথমদিকেডিরেকশন এবং প্রোডাকশন দুটোই করবো।

পৃথিবী ঘোরার স্বপ্ন দেখেন মনামি। ইন্ডাস্ট্রিতেই পেয়ে চলেছেন একের পর এক বিয়ের প্রস্তাব।

অনুরাগীরা কী বলেন?

হা হা হা...। আমার ফ্যানেরা তো সারা জীবন আমার প্রশংসাই করে এসেছে। তাদের প্রশংসা পেয়ে পেয়ে আমি মোটিভেটেড হয়েছি। কদিন আগে ‘ইরাবতী’-তে আমার একটা নো মেকআপ লুক হত। সেটাও আমিই করতাম। সেটা দেখে সবাই খুব প্রশংসা করছে। কেউ মধুবালার সঙ্গে মেলাচ্ছে, কেউ মীনা কুমারীর সঙ্গে মেলাচ্ছে, কেউ মনীষা কৈরালার সঙ্গে মেলাচ্ছে। কোনও কোনও লুক আবার বলে সুচিত্রা সেনের মতো। দুজনের ছবি পাশাপাশি মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। সত্যিই খুব ভাললাগে। মনে হয় এত খাটনির ফল পেলাম।

আরও পড়ুন: টলিউডে চুক্তির বাঁধন আলগা হচ্ছে ভেঙ্কটেশের?

প্রেম প্রস্তাব আসছে?

হা হা...। প্রস্তাব... আসে। ক্লাস সেভেন থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে। প্রেমের প্রস্তাব ছেড়েই দিন।ইন্ডাস্ট্রিতে এসেও প্রচুর বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি... নাম বলা যাবে না... ইন্ডাস্ট্রিরই লোকজন।এসব তো চলতেই থাকে... ওই বোরোলীনের মতো... জীবনের ওঠাপড়া যেন গায়ে না লাগে... হা হা হা...!

ছবি: সংগৃহীত।

অন্য বিষয়গুলি:

Irabotir Chupkotha Monami Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy