Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Bengali actor

স্বজনপোষণ এই শব্দ নিয়েই ঝগড়া খিস্তিখেউড়, নরক গুলজার ইন্ডাস্ট্রি: ঐন্দ্রিলা

‘‘খুব ছোট থেকে টলিপাড়ায়। অভিনয় সূত্রে বহু তারকার সঙ্গে ওঠাবসা। নেপোটিজম শব্দটা কস্মিকালেও শুনিনি। আমি ভাগ্যবান, তাই দেখিওনি কোনও দিন।

ঐন্দ্রিলা-অঙ্কুশ। ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া ছবি।

ঐন্দ্রিলা-অঙ্কুশ। ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ১৭:২৭
Share: Save:

বলিউডের সৌজন্যে ‘নেপোটিজম’ এখন মুখে মুখে ফিরছে। শব্দটা বলিপাড়ার মতোই টলিপাড়াতেও দুটো শিবিরের জন্ম দিয়েছে। কেউ ‘আমি ভুক্তভোগী’ কথাটুকু বললেই বাক্যবাণে প্রায় ধুইয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁকে।

টেলিপাড়াতেও কি এক গপ্পো? কী বলছেন ‘ফাগুন বউ’ ঐন্দ্রিলা সেন?

‘‘খুব ছোট থেকে টলিপাড়ায়। অভিনয় সূত্রে বহু তারকার সঙ্গে ওঠাবসা। নেপোটিজম শব্দটা কস্মিকালেও শুনিনি। আমি ভাগ্যবান, তাই দেখিওনি কোনও দিন।

কিন্তু এই সূত্রে আমার অনেক দিন আগের একটা ঘটনা মনে পড়ছে। মেগার এক নায়িকা বদলের প্রয়োজনে আমাকে ডাকা হয়েছিল। সে দিন আমি মুখের ওপর ‘না’ বলেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, যিনি কষ্ট করে নিজের ক্যারিশমায় জনপ্রিয় করেছেন ধারাবাহিকটিকে, এটি তাঁর মুখের গ্রাস। আমার নয়। তাই ছিনিয়ে নেওয়ার অধিকারও আমার নেই। ঠিক যেমন, আমার পরিশ্রমে দাঁড় করানো সিরিয়ালের কৃতিত্ব শুধুই আমার।

আরও পড়ুন: ঐশ্বর্যা, প্রিয়ঙ্কা তাঁর থেকে এগিয়ে, শুনেই কী উত্তর দিলেন সুস্মিতা?

ঐন্দ্রিলা সেন। ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া ছবি।

এটাই আমার জীবন দর্শন। তাই সে দিন সপাটে প্রযোজক, চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে বলতে পেরেছিলাম, তোমাদের ঝগড়া তোমরা মেটাও। আমি ওই নায়িকার বদলি হতে পারব না। শুধু ওই একটি দিন নয়, এখনও যদি দেখি চোখের সামনে এমন অন্যায় হতে চলেছে বা হতে পারে, তখনও মুখ খুলব। টেলিপাড়া জানে, ঐন্দ্রিলা ভীষণ দুর্মুখ।

আরও পড়ুন: সলমন, কর্ণ, মহেশ সাবধান হোন, মানুষ ছেড়ে দেবে না!

একই সঙ্গে চার দিকে নেপোটিজম বা স্বজনপোষণ-এর নামে যে ভাবে স্টার কিডদের তুলোধোনা হচ্ছে সেটাও মানতে পারছেন না ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীর ধিক্কার, ‘‘সোশ্যাল জুড়ে এই একটা শব্দ নিয়ে তুলকালাম। ঝগড়া, খিস্তিখেউড়ে পুরো নরক গুলজার ইন্ডাস্ট্রি। অভিনেতারা নাকি ‘সৃষ্টিশীল’, ‘সূক্ষ্ম অনুভূতি’র মানুষ! এই তার নমুনা?’’

ঐন্দ্রিলা কি তা হলে তারকা-সন্তানদের সমর্থনে?

খুব জোরের সঙ্গে সেই প্রসঙ্গ নস্যাৎ করলেন নায়িকা, ‘‘একেবারেই নয়। আমি সমানাধিকারে বিশ্বাসী। স্টার কিডদের নিয়ে আজও আমাদের কৌতূহল। তারকা সন্তানরা বড় হয়ে আর এক তারকা হবেন, এটাও যেন অলিখিত চু্ক্তি। তাই তাঁদের ছবি এলে আমরা হলে দৌড়ই তাঁকে এবং তাঁর অভিনয় দেখার জন্য। এ বার তিনি যদি দেখতে, অভিনয়ে দুর্দান্ত হন তা হলে আমাদের আশা বাড়ে।’’

যেমন? ‘‘যেমন, রণবীর কপূর। অভিনয়, চেহারা, অ্যাটিটিউড— সব মিলিয়ে তিনি এমন এক জন যে তাঁকে অস্বীকার করার কোনও প্রশ্নই নেই। কিন্তু যে তারকা সন্তান কিছুই পারেন না, তাঁকেও দর্শক ঠিক আলাদা করে নেয়। জোর পরে প্রোমোটের চেষ্টা করলেও তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি দিন টেকেন না। আমি চাই, সমান সুযোগ পান স্টার কিড এবং সিনে দুনিয়ার বাইরে থেকে আসা শিল্পী। এতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে।’’

এই প্রসঙ্গেই ঐন্দ্রিলা তুললেন সুশান্ত সিংহ রাজপুতের কথা। যাঁর মৃত্যু নতুন করে প্রচারের আলোয় এনেছে স্বজনপোষণ-কে। ঐন্দ্রিলার আক্ষেপ, ‘‘স্টার কিড রণবীর কপূরের যে প্রতিভা সেই মানের প্রতিভা ছিল সুশান্তেরও। আমি দু’জনেরই প্রায় সব ছবি দেখেছি। রণবীরের যেমন আমি ডাই হার্ড ফ্যান, ঠিক সেই অনুভূতি তৈরি হচ্ছিল সুশান্তকে ঘিরেও। সুশান্ত এটা কী করলেন? আর একটু দেখতেই পারতেন বোধহয়!’’

‘ছিছোরে’ স্টার বলিউডের অন্যায়ের শিকার। সোশ্যাল এবং বলিপাড়ার অভিযোগ, তাই এই পরিণতি।

প্রতিবাদী অভিনেত্রীর যুক্তি, ‘‘সুশান্ত যেমন বি টাউনের ‘আউটসাইডার’, বিক্রম, অঙ্কুশও তাই-ই। ওঁরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে কত কিছু করছেন। সারা ক্ষণ ভেবে চলেছেন, তাঁরা নতুন কী দিতে পারেন। এটাই তো সুশান্তও ভাবতে পারতেন। আমার বিশ্বাস, তা হলে তিনিও জিতে যেতেন।’’

টেলিপাড়ায় এই মুহূর্তে দুই তারকা-সন্তান কাজ করছেন। গৌরব চট্টোপাধ্যায়, শন বন্দ্যোপাধ্যায়। টেলিপাড়ার বাইরের অভিনেতা, যেমন, নীল ভট্টাচার্য, অভিষেক বসু, কিংবা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, অঙ্কুশ হাজরার সঙ্গে যদি তাঁদের তুলনা টানা হয়, কী বলবেন?

সামান্য সংযত ঐন্দ্রিলার সপ্রতিভ উত্তর: ‘‘গৌরব, শন বনাম বিক্রম, অঙ্কুশ অনুপাত আমি করতে পারব না। কারণ, এঁদের পুরো কাজ, ছবি বা ধারাবাহিক দেখিনি। তবে এটুকু বলতে পারি, গৈরবের ঝুলিতে আছে ‘ঘরে ফেরার গান’, ‘বধূবরণ’, ‘দুর্গা’, ‘আদরিণী’, ‘সেই যে হলুদ পাখি’, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’র মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক। ‘ভালোবাসার অনেক নাম’, ‘রং মিলন্তি’, ‘ইতি’, ‘পথের শেষ কোথায়’-এর মতো ছবি। সেখানে শন সবে শুরু করেছেন ‘এখানে আকাশ নীল’ সিক্যুয়েল দিয়ে। যতদূর জানি, সেটি দর্শকেরা দেখেন শনের জন্যই। সুতরাং নেপোটিজম নয়, দু’জনে থাকছেন নিজেদের অভিনয় জোরে। যেমন, বিক্রম আর অঙ্কুশ।’’

ঐন্দ্রিলা সেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া।

টলিপাড়ায় এমনও শোনা গিয়েছে, নায়ক-নায়িকার প্যাকেজ বা প্রেম থাকলে ‘স্বজনপোষণ’ ঘেঁষতে পারে না। আপনি অঙ্কুশের দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা। এই জন্যই কি নেপোটিজম থেকে বেঁচে গেলেন?

প্রচণ্ড হাসছেন ঐন্দ্রিলা। জবাব আরও তীক্ষ্ণ, ‘‘আমি অঙ্কুশের অনেক আগে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। ওর থেকে টেলিপাড়ায় আমার অনেক বেশি চেনাজানা। আমি যদি অঙ্কুশের দীর্ঘ দিনের গার্লফ্রেন্ড তা হলে ঐন্দ্রিলার বয়ফ্রেন্ড অঙ্কুশ, এই ট্যাগটাও তো ওর গায়ে লাগা উচিত! আজও পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে হাতে গোনা যেটুকু কাজ করেছি টেলিপাড়ায়, নিজের অংশের গুরুত্ব আগে ভাল করে বুঝে নিয়েছি। তার পরে সেই কাজে হ্যাঁ বলেছি। আর জুটি বা প্রেম যদি ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার আসল কারণ হয়, তা হলে আট বছরের কেরিয়ারে অঙ্কুশের দৌলতে আমার তো কম করে চারটে ছবির নায়িকা হওয়ার কথা!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Oindrila Sen Nepotism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy