পরীমণিকে নিয়ে নতুন ছবির কাজ সারলেন গিয়াসউদ্দিন।
ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও ‘প্রিয়জন’ নেই। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে নিজের পছন্দই শেষ কথা। তাঁকে নিয়ে চর্চা অনেক। কিন্তু প্রচারের আলো থেকে খানিক দূরে থাকেন তিনি। প্রশ্ন করলে বলেন, “আমি তো রাজনীতিবিদ নই যে সব সময় নিজের কথা বলে যাব।”
তিনি গিয়াস উদ্দিন সেলিম। নতুন ছবি, বিতর্ক, পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অকপট বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক।
প্রশ্ন: ইতিমধ্যেই দু’টি জাতীয় পুরস্কার। পরিচালক হিসেবে কি চাপ অনুভব করেন?
উত্তর:(মৃদু হেসে) চাপ নিলেই চাপ। চাপে চাপ বাড়ে। আমি মানুষের জন্যই ছবি তৈরি করি। কিন্তু মানুষের মতো করে করি না।
প্রশ্ন: মানে?
উত্তর: আমি নিজের ভাবনা থেকে ছবি তৈরি করি। মানুষ কী চায়, আমি তা ভেবে ছবি বানাই না। আমি দর্শককে কী দেখাতে চাই, ছবি তৈরির সময় সেই ভাবনাই প্রাধান্য পায়। আমার স্বাধীনতা আছে। তাই কোনও চাপ অনুভূত হয় না। আমি শুধু মাত্র বিনোদন দিতে চাই।
প্রশ্ন: বিনোদন দিতে চান অথচ মাত্র দু’টি ছবি করেছেন। তা-ও অনেক সময়ের ব্যবধানে…
উত্তর: নানা কারণে ছবি করা হয়নি। ২০১৮ সালে 'স্বপ্নজাল' মুক্তি পেয়েছিল। এর পর ‘পাপ পুণ্য’ নামে একটি ছবি তৈরি করি। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়িই সেটা মুক্তি পাবে। আসলে আমি যে ধরনের ছবি তৈরি করতে চাই, অনেক সময় তার জন্য প্রযোজক পাওয়া যায় না। তবে এ বার টানা ছবি করে যাব।
প্রশ্ন: আপনি তো পরীমণিকেও নিয়ে কাজ করেছেন…
উত্তর: হ্যাঁ। ছবির নাম ‘গুণিন’। বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের একটি ছোটগল্পের উপর ভিত্তি করে কাহিনি বোনা হয়েছে। এ দেশের প্রান্তিক মানুষদের কথা বলবে এই ছবি। চার-পাঁচ দিন আগেই ছবির কাজ শেষ করলাম।
প্রশ্ন: পরীমণিকে নিয়ে এখন অনেক বিতর্ক। কাজ করার সময় মনে হয়নি, লোকে কী বলবে?
উত্তর: না, একেবারেই হয়নি। প্রথমে নুসরত ফারিয়াকে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু ওর সময় হচ্ছিল না। এর পরেই আমি নতুন মুখ খুঁজতে শুরু করি। ঘটনাচক্রে তখনই পরীমণি জামিন পায়। আমার মনে হল, ও চরিত্রটি ভাল করতে পারবে। আর কিছু না ভেবেই ওকে ছবিতে নিই। দেখুন, মানুষের জীবনে বিতর্ক তো থাকবেই। সেগুলিকে পাত্তা দিতে নেই।
প্রশ্ন: কিন্তু নিন্দকেরা বলছেন, বক্স অফিসে সাফল্য পেতেই বিতর্কিত নায়িকাকে নিয়ে কাজ…
উত্তর: আমি কিন্তু এমন কোনও কথা এখনও পর্যন্ত শুনিনি। আর এই পন্থা নিয়েই যদি ছবি হিট করাতে হয়, তা হলে তো অনেক আগেই আমার শাকিব খানকে নিয়ে কাজ করে ফেলা উচিত ছিল। তাই না! (মৃদু হাসি)
প্রশ্ন: আপনার ছবিতে শাকিব খানের মতো তারকাকে দেখা যায় না কেন?
উত্তর: তারকাকে দিয়ে ছবি চালানোর ইচ্ছে আমার কখনও ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। আমার গল্পের চরিত্রে যাঁকে মানাবে, আমি তাঁর সঙ্গেই ছবি করব। যেমন এই চরিত্রের জন্য পরীমণিকে আমার মানানসই মনে হয়েছে, তাই অন্য কোনও বিষয় মাথায় আনিনি।
প্রশ্ন: গ্রেফতারের পর পরীমণির মধ্যে কোনও পরিবর্তন লক্ষ করেছেন?
উত্তর: ব্যক্তি পরীমণিকে নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে শিল্পী হিসেবে পরীমণির মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখেছি। ২০১৮ সালে ও আমার সঙ্গে ‘স্বপ্নজাল’ ছবিতেও কাজ করেছিল। আমার মনে হয়, ওর জীবনের এই নেতিবাচক অভিজ্ঞতা ওকে অভিনেত্রী হিসেবে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে। আজ থেকে ১০ বছর পর পরীমণি যে মানের অভিনয় করতে পারত, ও এখনই তা করতে পারছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ছবির থেকে টেলিভিশন নাটক নিয়ে চর্চা অনেক বেশি…
উত্তর: হ্যাঁ। সেটা কিছু ক্ষেত্রে হয় ঠিকই। তবে তা নিয়ে আমার কোনও খারাপ লাগা নেই। টেলিভিশন নাটক দিয়েই আমি আমার কেরিয়ার শুরু করি। শিল্প নিয়ে আলোচনা হলেই ভাল। কোনটা নিয়ে বেশি, কোনটা কম — তা ভেবে লাভ নেই।
প্রশ্ন: আপনি পশ্চিমবঙ্গের ছবি দেখেন?
উত্তর: হ্যাঁ। মাঝেমধ্যেই দেখি। সাম্প্রতিককালে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’ খুব ভাল লেগেছে।
প্রশ্ন: এখানে এসে কাজ করার ইচ্ছে আছে?
উত্তর: কেন থাকবে না! আমি মনে করি, দুই বাংলা একসঙ্গে কাজ করলে আমরা শিল্পের ক্ষেত্রে অনেক বেশি এগিয়ে যাব। অনেক নতুন নতুন বিষয় তুলে ধরতে পারব।
প্রশ্ন: আর ওটিটি? সেখানেও তো এখন অনেক গবেষণা চলছে…
উত্তর: ওটিটি-তে এখন অনেক বিষয় নিয়ে কাজ হয়। এটা ঠিক। তবে আমি মনে করি, আমাদের দর্শক যা দেখতে চান, আমাদের সে রকম ছবি বা সিরিজই তাঁদের জন্য তৈরি করতে হবে। শুধু মাত্র ছকের বাইরে থাকার জন্য কিছু করার দরকার পড়ে না।
প্রশ্ন: কলকাতায় এসেছেন কখনও?
উত্তর: বহু বার। ওখানে আমার প্রচুর বন্ধু আছে। কলকাতার মানুষজন, খাওয়াদাওয়া — আমার সবই খুব ভাল লাগে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy