Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Saswata-Kalki

বাংলায় কেউ কারও উন্নতিতে নেই, দক্ষিণে ছবি সম্মানিত হলে শুটিং থামিয়ে উদ্‌যাপন হয়: শাশ্বত

“বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ উন্নতি করলে বাকিদের মুখ ভার। উল্টে যে উন্নতি করে তাকে টেনে নিচে নামাতে চায়। দক্ষিণে ঠিক তার উল্টো”, বললেন অভিনেতা।

Image Of Saswata Chatterjee

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। সংগৃহীত চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ২০:৪৯
Share: Save:

হাতে আর মাত্র কয়েকটি দিন। তার পরেই মুক্তি পাবে নাগ অশ্বিনের ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’। ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। সদ্য মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘লুক’। ছবিতে তিনি গলা পর্যন্ত ঢাকা বিশেষ পোশাকে সজ্জিত। ইতিমধ্যেই ভাইরাল তাঁর ‘লুক’। একই সঙ্গে চর্চিতও শাশ্বত। কারণ, এই ছবিতে তাঁর সহ-অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, কমল হাসন, প্রভাস, দীপিকা পাড়ুকোন। ছবিতে তিনি কোন ভূমিকায়? অভিনেতা কি ছবির প্রচারে ব্যস্ত?

জানতে অভিনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। শাশ্বত জানালেন, ম্যারাথন প্রচারে অংশ নিতে হয়েছে তাঁকেও। আপাতত তিনি কলকাতায়। বললেন, ‘‘খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। এর বেশি এখন আর বলতে পারব না।’’ শোনা গিয়েছে, তিনি নাকি অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে খলনায়ক? প্রশ্ন রাখতেই জানালেন, তিনি প্রভাসের সঙ্গে যাবতীয় দুষ্টুমি করেছেন। বেদম মার খেয়েছেন? এ বার রসিকতা, ‘‘প্রচুর মার খেয়েছি। মারের চোটে শেষে মরে গিয়েছি।’’ রাজ চক্রবর্তীর ‘আবার প্রলয়’ সিরিজ়ে প্রচুর অ্যাকশন করতে হয়েছে, সে ক্ষেত্রে কিছুটা অভিজ্ঞতা ছিলই? কথা ফুরোতেই জবাব এল, ‘‘দক্ষিণী ছবির অ্যাকশন সম্পর্কে কারও কোনও ধারণাই নেই। যে পোশাকে আমায় দেখছেন সেই পোশাকেরই ওজন পাঁচ কেজি! ওই ভারী পোশাক পরে মারপিট করতে হয়েছে। দিনের শেষে ঘাড় ব্যথা হয়ে যেত।’’ ছবির কারণে ওজনও ঝরাতে হয়েছে শাশ্বতকে।

এ তো গেল অভিনয়ের গল্প। তাঁর সহ-অভিনেতা বলিউড ও দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির তাবড় তারকা। তাঁদের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল? প্রশ্ন শুনে উচ্ছ্বাস লুকোতে পারেননি শাশ্বত। তাঁর মতে, ‘‘প্রত্যেকে অসাধারণ, বলাই বাহুল্য। প্রত্যেকে ভীষণ পেশাদার। কাজের বাইরে কিচ্ছু বোঝেন না। জানেন, শুটিং না থাকলেও কেবল কমল হাসনের কাজ দেখবেন বলে সেটে আসতেন প্রভাস! আমার বেশি দৃশ্য দীপিকার সঙ্গে। দুর্দান্ত অভিনেত্রীর পাশাপাশি দারুণ ভাল মানুষ। বিকেলে শট। সকাল থেকে সেটে বসে। কোনও বিরক্তি নেই! আর কমল হাসনের কথা যত বলব ততই কম।’’ এই প্রসঙ্গে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। অভিনেতার কথায়, ‘‘প্রথম দিন ওঁকে দেখেই আমি আপ্লুত। ওঁর অভিনীত ছবির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে যেতেই হাত চেপে ধরেছিলেন। তার পর ফিসফিসিয়ে জানালেন, আর যেন কখনও তাঁর পা না ছুঁই। উনি এত কিছুর যোগ্যই নন!’’ এত ধীরে কথা বলেন যে মন দিয়ে না শুনলে কথা শোনা দায়। শাশ্বতকে তাই “কী বলছেন” দ্বিতীয় বার জি়জ্ঞেস করতে হয়েছিল।

এই ছবিতে শাশ্বত এক মাত্র বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি। কেমন আদরযত্ন পেলেন? বাঙালির অপবাদ, তারা নাকি কাঁকড়ার জাত, দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি কেমন? অভিনেতার স্পষ্ট জবাব, ‘‘ছোট্ট উদাহরণ দিই। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ উন্নতি করলে বাকিদের মুখ ভার। উল্টে যে উন্নতি করে তাকে টেনে নিচে নামাতে চায়। দক্ষিণে ঠিক তার উল্টো। এক দিন শুটিংয়ে গিয়ে দেখি, সেটে সবাই ‘আরআরআর’-এর গান চালিয়ে নাচছেন! কী ব্যাপার? প্রশ্ন করে জানতে পারলাম, আগের রাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মানিত হয়েছে ছবিটি। ভোরে সেই খবর পেয়েই আনন্দে আত্মহারা হয়ে সকলে ছবির গান চালিয়ে নাচছেন! ওঁদের বক্তব্য, ইন্ডাস্ট্রি সম্মানিত।’’ আদরযত্ন প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, এত বেশি আপ্যায়ন, অভিনেতাদের স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি ইউনিটের এতটাই নজর যে প্রত্যেক অভিনেতা নিজে থেকেই ২০০ শতাংশ উজাড় করে দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE