Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape-Murder Case

বিচার এখনই হবে না, সমানাধিকারও মিলবে না, লড়াইটা যেন চলতে থাকে

“মানুষের মধ্যে বিচারের দাবি নিয়ে যে সচেতনতা বেড়েছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েদের সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকটা এ বার হয়তো আশানুরূপ হবে,” জানালেন অপর্ণা সেন।

Image of Aparna Sen

সুবিচারের বিষয়ে আশাবাদী অপর্ণা সেন। ছবি: সংগৃহীত।

অপর্ণা সেন
অপর্ণা সেন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০৭
Share: Save:

‘আমরা তিলোত্তমা’র মিছিল চলছে ধর্মতলার দিকে! কলেজ স্ট্রিট থেকে আমি এই মহামিছিলে যোগ দিলাম। চারদিকে সাধারণ মানুষের স্বর। আশা জাগছে মনে।

এই মিছিল খুব যে সুনিপুণ ভাবে সুসংগঠিত, এমনটা বলতে পারছি না। কিন্তু মানুষের মধ্যে বিচারের দাবি নিয়ে যে সচেতনতা বেড়েছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েদের সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকটা এ বার হয়তো আশানুরূপ হবে। বৃহৎ একটা দৃশ্য দেখছি চোখের সামনে। সাধারণ মানুষ বিচার নিয়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতার কাছে সরাসরি পথে নেমে জবাবদিহি চাইছে, এটা খুব আশাব্যঞ্জক।

তবে এখানে এটাও বলা দরকার, এই ধরনের ঘটনার বিচার কিন্তু চটজলদি পাওয়া যায় না। বিদেশেও এমন হয় না। তিন সপ্তাহ হয়েছে খুব সম্ভবত। এটা যদি পিছিয়ে গিয়ে কিছু না হয়, তখন আমরা আবার নিশ্চয় বলব। কিন্তু তাই বলে এখনই কিছু হচ্ছে না, এমন ভেবে অস্থির হলে চলবে না। এখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। সর্বোচ্চ আদালত নিজে এই বিচারের দায়িত্ব নিয়েছে। কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন বিচারপতিরা এই বিষয়টিকে, সেটা তো বুঝতে হবে। এটা বড় আশার কথা।

এই যে পথে নেমে নানা মানুষের ভেতর শুনতে পাচ্ছি, দাবি আসছে, এটা আলোর দিক। আজ আন্দোলনের জন্য সমস্ত জায়গা থেকে নানা শ্রেণির নাগরিকের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। আমরা নাগরিক হিসেবে কর দিই। আমাদেরও যে কথা বলার জায়গা রয়েছে, এই আন্দোলন সেই জায়গাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।

অনেকে জানতে চাইছেন, এই বিষয় নিয়ে আমি ছবি করছি কি না। সব কিছুই তো ছবি দিয়ে নির্ধারিত হয় না। তবে, গৌরী লঙ্কেশকে যখন বাড়ির দোরগোড়ায় খুন করা হয়, আমি সারারাত ঘুমোতে পারিনি। তখন মাথায় এসেছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ঘরে বাইরে’-কে আজকের সময়ে ফেলে কাজ করার কথা। আমার ছবিতে সমসাময়িক ঘটনা এসে পড়ে। তবে, ছবিকে কোনও প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে ভেবে কিছু করিনি। শিল্প আসলে অবচেতনে থাকে। সব কিছু আগে থেকে ঠিক করে হয় না।

হাঁটতে হাঁটতে কতগুলো বাক্য কানে বাজছে। সমানাধিকারের দাবি, সুরক্ষার দাবি, পিতৃতন্ত্র থেকে মুক্তির দাবি— এই আন্দোলনের স্বর সে দিকেই চড়ছে। আরও বাড়ুক। আমার জীবদ্দশায় পিতৃতন্ত্র থেকে মুক্তি বা নারী-পুরুষের সমানাধিকার দেখে যেতে পারব না, হয়তো আমার পরবর্তী প্রজন্মও দেখবে না। কিন্তু লড়াইটা যেন চলতে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE