অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: ‘মায়া’, ‘রেডিয়ো’, ‘খেলা যখন’... পরপর তিনটি ছবি। অনিন্দ্যর সময় ভাল যাচ্ছে?
অনিন্দ্য: দেড় বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রি শীত ঘুমে ছিল। লকডাউন উঠতেই টলিউডের সেই ঘুম ভাঙছে। তাল মিলিয়ে অনিন্দ্যও ছন্দে ফিরছে।
প্রশ্ন: দেড় বছরে আপনি কী করলেন?
অনিন্দ্য: রাজর্ষি দে-র ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবিতে অভিনয় করেছি। আরও কিছু ছবিতে কাজ করেছি। বরাবরই একটু বেছে কাজ করি। আমার গত ১০ বছরের ছবির তালিকা, পরিচালকের নাম অন্তত তেমনটাই বলে।
প্রশ্ন: গত ১০ বছরে অনিন্দ্যর জীবনের সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িয়ে গিয়েছে....
অনিন্দ্য: (প্রসঙ্গ বদলে) আপাতত মুখিয়ে আছি, কবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অতনু ঘোষের থেকে একটা ফোন আসবে। ওঁদের ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
প্রশ্ন: আপনি ডাকের অপেক্ষায় থাকেন? ডাক পাঠান না?
অনিন্দ্য: পাঠাই তো। ওটাই করি। বড়দের কাছে আবদার করি, ‘আমায় কাজ দাও’। ছোট বা সমবয়সী হলে জোরজুলুম চালাই, ‘কাজ দিতেই হবে’ বলে। কাজ চাইতে লজ্জা কোথায়? এই নিয়ে আমার কোনও ইগো বা ছুঁৎমার্গ নেই।
প্রশ্ন: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নামটা কিন্তু এড়িয়ে গেলেন...
অনিন্দ্য: সৃজিতের সঙ্গে দুটো কাজ করেছি। ওঁর ‘চতুষ্কোণ’ ছাড়াও একটি মিউজিক ভিডিয়োয় ছিলাম আমি আর মিথিলা। আর সৃজিত এমন এক পরিচালক, যিনি তাঁর ছবির উপযুক্ত মনে হলে নিজে থেকে অভিনেতাকে ডাকেন। আমি জানি, এই ডাক ভবিষ্যতে আবার আমার কাছে আসবে।
প্রশ্ন: খবর, মিথিলার ‘মায়া’-য় নাকি আপনি আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছিলেন?
অনিন্দ্য: (হেসে ফেলে) আসলে রাজর্ষি দে-র ‘মায়া’-য় আমরা সবাই জড়িয়ে পড়েছিলাম। ওই ছবিতেই পরিচালক বেঁধে দিয়েছিলেন দুই চরিত্র ‘মায়া’ আর ‘আলি’-কে। অর্থাৎ, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা আর আমি। রাজর্ষিদাকে ধন্যবাদ এমন একটি চরিত্রে আমায় ভাবার জন্য।
প্রশ্ন: অরিন্দম শীলের ‘খেলা যখন’ ছবিতে আবার আপনি, মিমি চক্রবর্তী, অর্জুন চক্রবর্তী এক সঙ্গে...
অনিন্দ্য: তার জন্য আবেগে ভাসছি! ২০১১-য় আমি, মিমি, অর্জুন প্রথম অভিনয় করেছিলাম সুদেষ্ণা রায়-অভিজিৎ গুহ-র ‘বাপি বাড়ি যা’ ছবিতে। অরিন্দমদার ‘খেলা যখন’-র সেটে সেই বন্ধুত্ব আমরা আবার ঝালিয়ে নেব। এই ছবিতে আমি পুলিশ অফিসারের ভূমিকায়। শ্যুট শুরু হবে ১৬ অগস্ট থেকে। আমার শ্যুট ২৬ অগস্ট থেকে, ওড়িশার বারিপদার রাজবাড়িতে। নতুন প্রযোজনা সংস্থা রাজপ্রতীম ভেঞ্চার্স পরিচালকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
প্রশ্ন: রাজনৈতিক ছবি?
অনিন্দ্য: ছবির নাম শুনে এই এক কথা বহু জন বলেছেন। ২০১৯-এ অরিন্দমদা এই ছবির কথা ভেবেছিলেন। জানিয়েওছিলেন আমাকে। তখনও রাজনীতির মঞ্চে ‘খেলা হবে’ কথাটা জনপ্রিয় হয়নি। ফলে, কোনও দিক থেকে এতে রাজনীতির ‘র’ নেই। অতিমারির কারণে ছবির শ্যুট পিছিয়ে ২০২১-এ হচ্ছে। বিশুদ্ধ রহস্য-রোমাঞ্চের ছবি দর্শকদের উপহার দেব আমরা।
প্রশ্ন: অভিনয়ের বাইরে অনিন্দ্য কেমন?
অনিন্দ্য: খোলা পাতার মত। কোথাও, কোনও লুকোচুরি নেই। শ্যুট না থাকলে আমায় কফি শপে আড্ডা মারতে দেখা যায়। ভোরে সাইকেল নিয়ে রাস্তায় দেখা যায়। একঘেয়েমিতে ভোগা অনিন্দ্যকে জিমেও দেখা যায়।
প্রশ্ন: টলিউড বলছে, প্রেমিকা রোমি দত্তের সঙ্গে খুব বেশি প্রকাশ্যে দেখা যায় না...
অনিন্দ্য: কে বলেছে এ কথা? রোমি ইন্ডাস্ট্রির কেউ না। ওর একটি ডিজিটাল মিডিয়া এজেন্সি রয়েছে। তার পরেও দিব্যি আমাদের সবার সঙ্গে জমিয়ে পার্টি করে। সেই ছবিও সামাজিক পাতায় দিই। আমার প্রেম, প্রেমিকাকে নিয়ে সব কিছুই জানে ইন্ডাস্ট্রি। ইদানীং ছবি দেওয়ার পরিমাণ হয়তো কমিয়েছি।
প্রশ্ন: সারাক্ষণ নায়িকাদের সঙ্গে ওঠা বসা। অথচ সঙ্গিনী ইন্ডাস্ট্রির বাইরের! সম্পর্কের ভাঙন এড়াতে এই পন্থা?
অনিন্দ্য: এক এক করে উত্তর দিই? প্রথমত, নায়িকারা আমার বন্ধু। ওঁরা আমায় সম্মান করেন। আমিও তাই করি। প্রেম নেই সেখানে। রোমি সেই ফাঁক ভরে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, ইন্ডাস্ট্রির বাইরেও অনবরত ভাঙাগড়া চলছে। সে গুলো খবর হয় না। লোকে তাই জানতে পারে না। শুধু টলিউড নয়, সারা পৃথিবীতে এই ঘটনা ঘটছে। ইদানীং সেটা বেড়েও গিয়েছে নানা কারণে। আসলে, সংবাদমাধ্যমও তারকা ছাড়া বাকিদের নিয়ে মাথা ঘামায় না। কারণ, লোকে সে গুলো পড়তে চায় না।
প্রশ্ন: তারকা-রাজনীতিবিদদের সঙ্গে গাঢ় বন্ধুত্ব। অথচ গত ১২ বছরে রাজনীতিতে নেই! লোকের জন্য কাজ করতে চান না?
অনিন্দ্য: খুব সচেতন ভাবেই রাজনীতিতে নেই। আগামী দিনেও না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক মঞ্চের বহু মানুষ আমার খুব কাছের। দেব, পার্নো, তনুশ্রী, সায়নী, রাজ, মিমি, নুসরতকে এক বার ডাকলেই সাড়া দেবেন। সাহায্য করবেন সব বিষয়ে। লকডাউনের সময় ওঁরা সেটা করেওছেন। এর পরেও আমার আলাদা করে রাজনীতি করার খুব দরকার? এ বার আসি কাজের কথায়। আমি রাজনীতিতে না থেকেও লোকের পাশে। নিজে রক্তদান করেছি। রক্ত জোগাড় করে দিয়েছি। পশুপাখিদের জন্য কাজ করে চলেছি। আমায় যাঁরা চেনেন, আমার সামাজিক পাতা যাঁরা দেখেন তাঁরা জানেন।
প্রশ্ন: কখনও নুসরত জাহান সাহায্য চাইলে পাশে দাঁড়াবেন?
অনিন্দ্য: কেন দাঁড়াব না? কিন্তু ওঁদের সম্বন্ধে একটি কথাও বলব না। আমি যশ দাশগুপ্তের বহু দিনের খুব ভাল বন্ধু, নুসরতেরও। ওঁদের সঙ্গে নিয়মিত পার্টি করি। ছবি দিই না বলে ওঁদের পাশে আমি নেই যেন ভাববেন না।
প্রশ্ন: আপনি মুখ বন্ধ রাখলেও ‘যশরত’-কে নিয়ে চর্চা হবেই...
অনিন্দ্য: এটাই তারকাদের জীবন। চর্চা আমাদের জীবনের অঙ্গ। অভিনেতাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিচ্ছু থাকতে নেই। সারাক্ষণ সবাই আমাদের জানতে মাথা ঘামাবে। এই কৌতূহল না থাকলেই বরং আমাদের দমচাপা অবস্থা। তখন মনে হতে থাকে যাহ বাবা, আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লোকের মাথাব্যথা নেই! তা হলে আমি কিসের তারকা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy