Anil and Sunita Kapoor Share A Strong Bond Of Love Even Decades After Their Marriage dgtl
Bollywood
একাই যান মধুচন্দ্রিমায়, মাধুরী-শিল্পাদের সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জনেও অটুট অনিল-সুনীতার দাম্পত্য
অনিল পরে জানিয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ প্রেমপর্বে সুনীতাই ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষক। শুধু ট্যাক্সিভাড়াই নয়। অনিলকে নিয়মিত দামি দামি উপহারও দিতেন প্রেয়সী সুনীতা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ১৩:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
প্রযোজকের ছেলের শখ হিন্দি ছবিতে নায়ক হওয়ার। কিন্তু ভাগ্যে তখনও শিকে ছেঁড়েনি। ব্যস্ততাহীন সময়ে কাজের পাশাপাশি চলছে মনের মতো বান্ধবীর খোঁজও। এ রকম এক সময়ে বন্ধুদের মারফত অনিলের সঙ্গে আলাপ হল সুনীতার।
০২২০
এক দিন নিছক মজা করেই সুনীতাকে ফোন করলেন অনিল। টেলিফোনের ওপারে সুনীতার কণ্ঠস্বরেই অনিল ক্লিন বোল্ড। মুগ্ধতার রেশ ধরেই দু’জনের ঘন ঘন সাক্ষাৎ শুরু হল।
০৩২০
কিন্তু সে সময়ের অনিলের ক্রাশ ছিলেন আর এক বান্ধবী। তাঁকে নিয়ে কথা হত সুনীতার সঙ্গে। এক দিন সেই ক্রাশ অনিলকে ছেড়ে চলে গেলেন। শূন্যতা পূরণের ভার নিলেন সুনীতা।
০৪২০
ক্রমশ অনিল আবিষ্কার করলেন সুনীতাই বিরাজ করছেন তাঁর হৃদয় জুড়ে। সেটা সত্তরের দশকের শুরুর কথা। অনিল তখনও সুপারস্টার অনিল কপূর হননি। অন্য দিকে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মীর মেয়ে সুনীতা ছিলেন জনপ্রিয় মডেল।
০৫২০
দু’জনের দেখা সাক্ষাৎ বিশেষ হত না। কথাবার্তার জন্য ফোনই ছিল ভরসা। দেখা করার জন্য সময় ঠিক হলেই অনিল ট্যাক্সিতে সওয়ার হতেন। গন্তব্যে পৌঁছে দেখতেন সুনীতা আগেই চলে গিয়েছেন সেখানে। কারণ ট্যাক্সিভাড়া মেটাতে হত সুনীতাকেই। অনিলের কাছে ট্যাক্সি সে সময় বিলাসিতা।
০৬২০
মডেলিংয়ের কাজের জন্য সুনীতাকে সে সময় প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত। মাঝে মাঝে অনিলও চলে যেতেন তাঁর ফোটোশুটের জায়গায়। আবার এ রকমও হয়েছে, শুধু অনিলের সঙ্গে সময় কাটাবেন বলে সুনীতা একের পর এক লোভনীয় অফার ছেড়ে দিয়েছেন।
০৭২০
অনিল পরে জানিয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ প্রেমপর্বে সুনীতাই ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষক। শুধু ট্যাক্সিভাড়াই নয়। অনিলকে নিয়মিত দামি দামি উপহারও দিতেন প্রেয়সী সুনীতা।
০৮২০
বলিউডে অনিলের স্ট্রাগলপর্বের শুরু থেকে শেষ অবধি পাশে ছিলেন সুনীতা। বেশ কিছু বছর ছবিতে ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয় করার পরে অবশেষে অনিলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হল। ১৯৮৩ সালে ‘ওহ সাত দিন’ ছবিতে তিনি নজর কাড়লেন দর্শকদের।
০৯২০
এর পর ক্রমে বড় পরিচালক প্রযোজকদের দরজা খুলে যেতে থাকে অনিলের সামনে। ১৯৮৪ সালে ‘মশাল’ ছবির সাফল্যের পরে অনিল রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে যান।
১০২০
তখন তাঁর একটাই লক্ষ্য। কবে সুনীতাকে বিয়ে করতে পারবেন। কারণ পাত্র হিসেবে অনিলকে মোটেও পছন্দ ছিল না সুনীতার বাবা মায়ের। অন্য দিকে সুনীতাকে নিয়ে আপত্তি ছিল কপূর পরিবারেও। শেষে বহু কষ্টে দুই পরিবারের অভিভাবকদের সম্মতি পাওয়া গেল।
১১২০
কিন্তু তার পরেও বিধি বাম। অনিলকে তাঁর শুভার্থীরা পরামর্শ দিলেন, কেরিয়ারে সাফল্যের মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই বিয়ে না করতে। কারণ তা হলে বলিউডের সমীকরণ অনুযায়ী কমে যেতে পারে স্টারডম।
১২২০
তা ছাড়া বিয়ের জন্য সুনীতাকে প্রোপোজ করতেও দ্বিধা করছিলেন অনিল। কারণ সুনীতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন বিয়ের পরে তিনি রান্না করতে পারবেন না। পরে অনিল মজা করে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি যখন বুঝলেন এ বার বাড়িতে রাঁধুনি ও পরিচারক রাখার মতো তাঁর যথেষ্ট সঙ্গতি হয়েছে, তখনই তিনি প্রোপোজ করেন।
১৩২০
প্রোপোজ করার পরে আর এক কাণ্ড। সুনীতা তো শুধু প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’-ই বললেন না, রীতিমতো ফরমান দিলেন পর দিনই বিয়ে করতে হবে। তিনি আর অপেক্ষা করতে রাজি নন। তাঁর জেদের কাছে হার মানলেন অনিল কপূর। এক দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি দুই বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
১৪২০
১১ বছরের প্রেমপর্বের পরে ১৯৮৪ সালের ১৯ মে বিয়ে করেন তাঁরা। শুভার্থীদের সব আশঙ্কা অমূলক প্রমাণ করে এই দাম্পত্য। স্টারডম কমা তো দূর অস্ত্। বরং বিয়ের পরে অনিল আরও সফল হন। কারণ নিজেকে নায়ক হিসেবে তুলে ধরতে গ্রুমিংয়ে সাহায্য করেছিলেন স্ত্রী সুনীতা।
১৫২০
অনিল কী ভাবে সাজবেন, কী ভাবে কথা বলবেন, তাঁর আদবকায়দা কী রকম হবে, সব দিকে নজর থাকত সুনীতার। তিনি অনিলের জন্য পোশাকও ডিজাইন করতেন। অনিল চাইতেন বলে সুনীতা তাঁর সঙ্গে শুটিং লোকেশনেও থাকতেন।
১৬২০
ঘরে বাইরে অনিলের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সে দিকে নজর দিতে সুনীতা নিজের কেরিয়ার বিসর্জন দেন। এই নিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপও ছিল না। জীবনের প্রতি পর্বের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে চেয়েছেন সুনীতা। অবশ্য সুনীতার দিদি প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া কবিতা ভমবানী সিংহ বিয়ের পরেও ইন্টিরিয়র ডিজাইনার হিসেবে নিজের কেরিয়ার বজায় রেখেছেন।
১৭২০
এমনকি, ‘মেরি জঙ্গ’ ছবির শুটিংয়ে অনিল শেষ মুহূর্তে আটকে পড়ায় সুনীতা একাই চলে গিয়েছিলেন মধুচন্দ্রিমার গন্তব্যে। তিনি একাই বিদেশ থেকে ‘মধুচন্দ্রিমার’ ছুটি কাটিয়ে দেশে ফেরেন। কারণ অত কম সময়ের নোটিসে বিয়ে মধুচন্দ্রিমার সময় বার করতে পারেননি অনিল।
১৮২০
অনিল কপূরকে দেখলে অনুরাগীরা বলেন, তাঁর বয়স থেমে আছে একই জায়গায়। অভিনয় জীবনে মাধুরী দীক্ষিত এবং শিল্পা শিরোদকরের সঙ্গে অনিলের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জনও শোনা গিয়েছে। কিন্তু পরে তা মিলিয়ে গিয়েছে বুদ্বুদের মতোই।
১৯২০
শ্রীদেবী-ঝড়ে তাঁর দাদা বনি কপূরের প্রথম দাম্পত্য ভেঙে গেলেও অনিল এবং সুনীতার মাঝে তৃতীয় কারও ছায়া সে ভাবে পড়েনি। দুই মেয়ে সোনম ও রিয়া এবং ছেলে হর্ষবর্ধনকে নিয়ে তাঁদের সাংসারিক ঘেরাটোপ অটুট।
২০২০
অনিলের কথায়, কোনও নায়িকার সঙ্গে ক্ষণিকের সম্পর্কের থেকে তাঁর কাছে বেশি প্রয়োজনীয় মনে হয়েছে জীবনসঙ্গিনীর সাহচর্য। এবং তিনি যে সুনীতাকে পেয়ে খুব খুশি, জানাতে ভোলেন না পর্দার মিস্টার ইন্ডিয়া।